ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল ॥ বিজেএমসি ২-২ মোহামেডান

মোহামেডানের বিপক্ষে বিজেএমসির স্বস্তির ড্র

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২০ নভেম্বর ২০১৬

মোহামেডানের বিপক্ষে বিজেএমসির স্বস্তির ড্র

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুই গোল হজম করেও সেই দুই গোল শোধ দিয়ে চমকপ্রদ ড্র করেছে টিম বিজেএমসি। ‘জেবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলে শনিবারের খেলায় তারা ২-২ গোলে ড্র করে রুখে দেয় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডকে। চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম ম্যাচে প্রথমার্ধে কোন দলই গোল করতে পারেনি। লীগের প্রথমপর্বের মোকাবেলাতেও দুই দলের খেলাটি ড্র হয়েছিল ১-১ গোলে। নিজেদের পঞ্চদশ ম্যাচে এটা রেকর্ড ১২ বারের লীগ শিরোপাধারী মোহামেডানের অষ্টম ড্র। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তাদের অবস্থান আগের মতোই দশম। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে এটা দুইবারের লীগ চ্যাম্পিয়ন বিজেএমসির ষষ্ঠ ড্র। ১৫ পয়েন্ট তাদের। তাদের অবস্থান অষ্টম (১২ দলের মধ্যে)। প্রথমার্ধে দু’দলই খেলে অলআউট ফুটবল। ফলে দর্শকরা ফুটবল উপভোগ করেন ভালভাবেই। কিন্তু মাঝ মাঠে ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করলেও দুই দলেরই ছিল ফিনিশিংয়ে অদক্ষতা। তাই কোন দলই কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পায়নি। মোহামেডানের আক্রমণভাগের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন বাঙ্গুরা। তবে তাকে প্রথমার্ধে ভালমতোই প্রতিরোধ করতে সক্ষম হন বিজেএমসির ডিফেন্ডাররা। খেলার ২ মিনিটে মোহামেডানের গিনি ফরোয়ার্ড-অধিনায়ক ইসমাইল বাঙ্গুরার পাসে বক্সে বল পেয়ে ফরোয়ার্ড তৌহিদুল আলম সবুজ গোল করতে পারেননি। ৫ মিনিটে বাঙ্গুরার থ্রু পাসের বল বিজেএমসির বক্সে একজনকে কাটিয়ে ডান পায়ে শট নেন সবুজ। কিন্তু বল পোস্ট ঘেঁষে চলে যায় বাইরে। ৬ মিনিটে বিজেএমসির খান মোঃ তারার ফ্রি কিক বক্সে লাফিয়ে উঠে হেড নেন জিকু। তবে বল আয়ত্তে নিয়ে দলকে বাঁচান মোহামেডানের গোলরক্ষক। এর দু’মিনিট পর বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ে শট নেন মোহামেডানের সবুজ। কিন্তু অল্পের জন্য গোল পাননি তিনি। ২৪ মিনিটে মিডফিল্ডার মোহামেডানের প্যাট্ট্রিচের দূরপাল্লার শট বিজেএমসির পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। দ্বিতীয়ার্ধেও দুদল সমানতালে আক্রমণ করে খেলতে থাকে। এই অর্ধে চমৎকার খেলে নজর কাড়েন মোহামেডানের তরুণ মিডফিল্ডার মাসুক মিয়া জনি। একাধিক আক্রমণের রূপকার ছিলেন তিনি। ৫২ মিনিটে বিজেএমসির স্যামসন ইলিয়াসুর বাঁ পায়ের শট অল্পের জন্য চলে যায় বাইরে। ৫৩ মিনিটে মোহামেডানের জনির বাড়িয়ে দেয়া বল বক্সে পেয়ে পোস্ট লক্ষ্য করে শট নিতে যাচ্ছিলেন বাঙ্গুরা। কিন্তু তাকে দারুণভাবে আটকে দিয়ে দলকে এ যাত্রা রক্ষা করেন খান মোঃ তারা। ৫৪ মিনিটে বক্সে বল পেয়ে হেড নেন বাঙ্গুরা। কিন্তু বল ফিস্ট করেন বিজেএমসির গোলরক্ষক। পরের মিনিটে বাঙ্গুরার শট আবারও ধরে ফেলেন গোলরক্ষক। ৭০ মিনিটে বাঙ্গুরার পাসে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন সবুজ। আগুয়ান বিজেএমসি গোলরক্ষককে পেছনে ফেলে বল জালে ঠেলে দিয়ে মোহামেডানকে চমৎকার এক গোল উপহার দেন সবুজ (১-০)। লীগে এটা তার ব্যক্তিগত ষষ্ঠ গোল, যা দেশীয় গোলদাতাদের মধ্যে সর্বোচ্চ। ৭৩ মিনিটে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে শট নেন সবুজ। সাইদ দৌড়ে এসে বল বিপদমুক্ত করতে গেলে ফাউল হয়। পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। ৭৬ মিনিটে দলীয় অধিনায়ক বাঙ্গুরা ঠা-া মাথায় গোল করেন। ব্যবধান দ্বিগুণ করে মোহামেডান (২-০)। ৮৪ মিনিটে বাঁ পায়ের দারুণ শটে পোস্টের খুব কাছ থেকে বল জালে পাঠান এলেটা কিংসলে (১-২)। ব্যবধান কমায় সরকারী দল বিজেএমসি। কিন্তু ম্যাচের রোমাঞ্চ আরও বাকি ছিল। ইনজুরি টাইমে (৯০+২) বক্সের ভেতর থেকে চমৎকার হেডে গোল করে অবিশ^াস্যভাবে দলকে সমতায় ফেরান বিজেএমসির স্যামসন ইলিয়াসুর (২-২)। লীগে এটা স্যামসনের ব্যক্তিগত দশম গোল। শেষ পর্যন্ত ওই স্কোরেই খেলা শেষ হলে হতাশা নিয়ে মোহামেডান আর তৃপ্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে বিজেএমসির ফুটবলাররা।
×