ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পশ্চিমা মূল্যবোধ রক্ষার ভার এখন মেরকেলের

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১৮ নভেম্বর ২০১৬

পশ্চিমা মূল্যবোধ রক্ষার ভার এখন মেরকেলের

ডোনাল্ড ট্রাম্প অপ্রত্যাশিতভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর পশ্চিমা মূল্যবোধ ও স্বার্থ রক্ষার মূল দায়িত্ব এখন জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেলের কাঁধে পড়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। অনেকে তাকে এখন ‘মুক্ত বিশ্বের নেতা’ বলে অভিহিত করছেন। খবর এএফপির। ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র গত এক দশক ধরে ছিল একটি সম্মিলিত ফ্রন্টের মতো। ন্যাটোর প্রতিরক্ষা কর্মসূচী থেকে স্বাধীনতার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা পর্যন্ত বিভিন্ন ইস্যুতে দেশগুলো একসঙ্গে কাজ করেছে। ধারণা করা হচ্ছে আগামী চার বছর দেশগুলোকে এমন ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে দেখা যাবে না। নির্বাচনী প্রচারাভিযানকালে ট্রাম্পের ভাবমূর্তিটি ছিল সংরক্ষণবাদী ও অভিবাসী বিরোধী। অন্যদিকে চলতি বছর জুনে ব্রিটেনে অনুষ্ঠিত গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ব্রিটিশ জনতা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে রায় দেয়। ফলে ব্রিটেনকে এখন ইইউর বাইরে নিজের ভবিষ্যত খুঁজতে হবে। আগামী বছর মেতে ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের এতে জয়ের সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ তার বর্তমান জনসমর্থনের হার খুব নিম্নমুখী । ধারণা করা হচ্ছে, ওই নির্বাচনে উগ্র ডানপন্থী নেত্রী মেরি লিপেন ভাল ফল করতে পারেন এবং নির্বাচন দ্বিতীয় রাউন্ডে গড়াতে পারে। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র জার্মানিরই এখন পশ্চিমা মূল্যবোধ বলিষ্ঠভাবে সংরক্ষণের সামর্থ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১১ বছর ধরে মেরকেল দেশটির নেতৃত্বে রয়েছেন। হঠাৎ করেই তিনি মুক্ত, স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বিশ্বের নেতা হয়ে উঠেছেন, বলে জার্মানির টিএজেড পত্রিকায় মন্তব্য করা হয়েছে। অন্যদিকে ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক গার্টন এ্যাশ ব্রিটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকায় লিখেছেন, ‘আমি বলতে চাই যে, মুক্ত বিশ্বের নেতা এখন মেরকেল।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বুধবার জার্মানি সফর করেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটি তার শেষ ইউরোপ সফর। ইউরোপ সফরে গেলে যেকোন মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাধারণত ব্রিটেনে একবার যাত্রাবিরতি করেন। কিন্তু ওবামা শেষবারের মতো ব্রিটেনে না গিয়ে গেলেন জার্মানিতে। এ থেকে এমন ধারণাই স্পষ্ট হয় যে তিনি চান বৈশ্বিক পটভূমিতে জার্মানির নেতৃত্ব আরও শক্তিশালী হোক। সফর শুরুর আগে তিনি মেরকেলকে তার আট বছর প্রেসিডেন্সির মেয়াদকালে অন্যতম ঘনিষ্ঠ আন্তর্জাতিক সহযোগী হিসেবে অভিহিত করেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতার পর বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশের নেতার প্রতিক্রিয়া ছিল অনেকটা গতানুগতিক। তারা কেবল দুদেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ রাখার ওপরই জোর দেন। কিন্তু মেরকেলে তার প্রতিক্রিয়া গণতান্ত্রিক মুল্যবোধ সংরক্ষণের ওপর জোর দেন। বিষয়টি পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টি এড়ায়নি। মেরকেল বলেছিলেন, ‘গণতন্ত্রিক মূল্যবোধ এবং আইনের শাসন ও ধর্ম, বর্ণ ও লিঙ্গ নির্বিশেষ মানবিক মর্যাদার প্রতি সম্মান’ই ও হওয়া চাই যে কোন ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্কের ভিত্তি।
×