ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

রেকর্ড সেঞ্চুরি হাঁকিয়েও সাব্বিরের আক্ষেপ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৪ নভেম্বর ২০১৬

রেকর্ড সেঞ্চুরি হাঁকিয়েও সাব্বিরের আক্ষেপ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এমন একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেললেন। সবাইকে মাতালেন। অথচ সেই ইনিংসেও রাজশাহী কিংস জিততে পারল না। তাতে তো সাব্বির রহমান রুম্মনের আক্ষেপ থাকাটাই স্বাভাবিক। একাই ১২২ রান করলেন। কিন্তু বরিশাল বুলসকে হারাতে পারল না তার দল। ৪ রানে হেরে গেল। মুশফিকুর রহীমের অপরাজিত ৮১ ও শাহরিয়ার নাফীসের ৬৩ রানের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে দু’জনের ১১২ রানের জুটিতে ৪ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৯২ রান করল বরিশাল। এ রানটিই এবার বিপিএলে দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর হয়ে থাকল। এ স্কোরকেও টপকে যেতে পারত রাজশাহী। যদি আর ৫টি রান করতে পারত। কিন্তু সাব্বির ১২২ রান করে দেয়ার পরও বাকি ব্যাটসম্যানরা রাজশাহীকে জয় এনে দিতে পারলেন না। সাব্বিরের রানের সঙ্গে সবাই মিলে আর ৬৬ রান যোগ করতে পারলেন। ৬ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৮৮ রানের বেশি করতে পারল না রাজশাহী। ম্যাচও তাই হেরে গেল। দুই দলের এ লড়াইয়ে ২০১২ সালের স্মৃতিই সামনে চলে আসছিল। সেই ম্যাচেও বরিশাল ১৯২ রান করেছিল। কিন্তু ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত জিতেছিল রাজশাহী। কিন্তু এবার ২৪ বলে ৩৪ রান যখন লাগে, তখন সাব্বির আউট হতেই সব ওলট পালট হয়ে যায়। ৭ বলে জিততে ১০ রান বাকি থাকতে যখন ড্যারেন সামি আউট হয়ে যান, তখনই যেন রাজশাহী হারের নিয়তিতে পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত হারেও। এবার আর জয় তুলে নেয়া সম্ভব হয়নি। এত সুন্দর ব্যাটিং করার পরও জেতা গেল না। সাব্বিরতো আক্ষেপ করতেই পারেন। আফসোসেও পুড়তে পারেন। যদিও ম্যাচটি এত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করায়, এত জমজমাট করায়, সাব্বিরের সবচেয়ে বেশি ভূমিকা থাকায় তার হাতেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। সেই পুরস্কার হাতেওতো সাব্বির মন খুলে হাসতে পারেননি। নিজে যত ভালই খেলুন না কেন, দল না জিতলে কি আর মুখে হাসি থাকে। সাব্বির তাই হাসতে পারলেন না। তবে যা করে দেখিয়েছেন, তা বিপিএল ইতিহাসে সেরাই হয়ে থাকল। ব্যাটসম্যানরা চাইলে যে রান করা সম্ভব তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। টি২০তে কিভাবে ব্যাটিং করতে হয় তাও ব্যাটসম্যানদের দেখিয়ে দিয়েছেন। ৯ চার ও ৯ ছক্কায় ৬১ বলে ১২২ রান করে আউট হওয়ার আগেই বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান সংগ্রাহক ব্যাটসম্যান হয়ে গেছেন। ২০১২ সালে যে বরিশালের হয়ে ঢাকার বিপক্ষে ১১৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল, সেটি রবিবারের আগ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর ছিল। সাব্বির এখন সেরা। এবার বিপিএলের প্রথম শতকটিও সাব্বিরের ব্যাট থেকেই আসল। এর আগে ৮টি শতক ছিল। সাব্বির নবম শতকটি করলেন। তবে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে শতক করলেন সাব্বির। তৃতীয় দেশী ব্যাটসম্যান হিসেবে শতক করলেন। এর আগে গেইল একাই তিনটি শতক করেন। একটি করে শতক করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়াইন স্মিথ, পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদ, শাহরিয়ার নাফীস, মোহাম্মদ আশরাফুল ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের এভিন লুইস। সাব্বির ৬টি চার ও ৮টি ছক্কায় ৫৩ বলে শতক করেন। সেটি বিপিএলে দেশী ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্রুততম শতক। আশরাফুল ৫৬ বলে ও শাহরিয়ার ৬৮ বলে শতক করেছিলেন। বিপিএলে শতক করা দেশী ব্যাটসম্যানদেরও ছাপিয়ে গেলেন সাব্বির। ছাপিয়েতো গেলেন সব ব্যাটসম্যানকেই। বিপিএলে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোরটি এখন সাব্বিরের দখলেই। তাতেও খুশি হতে পারছেন না সাব্বির। কারণ? শুনুন সাব্বিরের কণ্ঠেই, ‘১ রান করার পরও যদি দল জিতে, তাহলে আনন্দ হয়। অন্যরকম লাগে। কিন্তু এত রান করেও যদি দলকে জেতাতে না পারি তাহলে আক্ষেপ থাকারই কথা।’
×