ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকল্পের কাজ শেষ

আগামী ডিসেম্বরে ২৯০ উপজেলায় ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড সংযোগ

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৪ নভেম্বর ২০১৬

আগামী ডিসেম্বরে ২৯০ উপজেলায় ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড সংযোগ

ফিরোজ মান্না ॥ বিটিসিএল ২৯০ উপজেলায় ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য ৪শ’ ৯৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করেছে। আগামী ডিসেম্বরে এসব উপজেলায় ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেয়া হবে। একই সঙ্গে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কও বিস্তৃত করা হবে। নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন ও ইন্টারনেট সুবিধা বাড়ানোর জন্য অপটিক্যাল ফাইবার কেবল স্থাপনের কাজ হয়েছে গত জুনে। এখন যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হচ্ছে। বেসরকারী মোবাইল অপারেটররা সারাদেশে ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দিলেও তা অনেক ব্যয়বহুল। এ সেবা সাধারণ মানুষের পক্ষে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে গ্রামপর্যাযে ইন্টারনেট সেবা দেয়ার জন্য এনএসএনভিত্তিক টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য চীন প্রকল্পে সহযোগিতা দিচ্ছে। সরকারী অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। অপটিক্যাল ফাইবার কেবল সংযোগ স্থাপিত হলে গ্রাহকরা নিরবচ্ছিন্নভাবে ইন্টারনেট সুবিধা পাবেন। তখন শহর ও গ্রামের বৈষম্য অনেকাংশে দূর হবে। বিটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, সারাদেশকে ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় আনতে ‘অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট এ্যাট উপজেলা লেভেল প্রজেক্ট’ নামের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। এ প্রকল্পের আওতায় ৭ বিভাগের ৬৪ জেলার ২৯০টি উপজেলায় অপটিক্যাল ফাইবার কেবল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। বিটিসিএলের চেয়ারম্যান ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মোঃ ফয়জুর রহমান চৌধুরী জানান, প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে। প্রকল্পটির কাজ গত বছরের জুলাই মাসে শুরু হয়। এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা ২০১৬ সালের ৩০ জুন ছিল। কেবল স্থাপনের কাজ নির্ধারিত সময়েই শেষ হয়েছে। এখন প্রকল্পের যন্ত্রপাতি বসানোর কাজ চলছে। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ঢাকা বিভাগের ১৬ জেলার ৬৭ উপজেলায়, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার ৫৯ উপজেলা, রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার ৩৮ উপজেলা, খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ৩৭ উপজেলা, রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ৪২ উপজেলায়, সিলেট বিভাগের ৪ জেলার ২৬ উপজেলা এবং বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার ২১ উপজেলায় অপটিক্যাল ফাইবার কেবল সংযোগ স্থাপন করা হবে। জানা গেছে, প্রকল্পে কেবল কেনা হয়েছে খুলনা কেবল কোম্পানি থেকে। তবে যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ করবে বিদেশী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মাটি খননের কাজ করেছেন স্থানীয় ঠিকাদার। ৭ লাখ ৮ হাজার ৩০ মাইল এলাকায় অপটিক্যাল ফাইবার কেবল বসানো হয়েছে। এই অপটিক্যাল ফাইবার উপজেলা এক্সচেঞ্জের সঙ্গে জেলা এক্সচেঞ্জকে সংযুক্ত করেছে। উপজেলা এক্সচেঞ্জ থেকে প্রতিটি ইউনিয়নে যে কোন সময় এ নেটওয়ার্ক বিস্তার করা যাবে। বেসরকারী অপারেটররাও এ অপটিক্যাল ফাইবার কেবলের সংযোগ সুবিধা নিতে পারবে। সারাদেশে ইতোমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার কিলোমিটারের বেশি অপটিক্যাল ফাইবার কেবল স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। ৪২ জেলার দেড় শতাধিক নোডে মোট ৪৬ হাজার ক্ষমতাসম্পন্ন এডিএসএল এক্সেস নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে। ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত বিটিসিএলের ৭৪৭টি এক্সচেঞ্জের (৬৪ জেলার) অপটিক্যাল ফাইবার কেবলের সঙ্গে সংযোগ ঘটেছে। দেশে টেলিফোনের সংযোগ ক্ষমতা ১৪ লাখের বেশি হলেও এ সুবিধার আওতায় আসেনি বেশিরভাগ টেলিফোন। ইন্টারনেট সেবা দেয়ার যথেষ্ট সুযোগ সৃষ্টি হলেও সেই সেবা থেকে গ্রাহক বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে কম দামে গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছেন না। বিটিসিএল জানিয়েছে, টেলিফোন, এডিএসএল, ইন্টারনেট ব্যান্ডইউথের চার্জ কমিয়ে আনা হয়েছে। ব্যয়বহুল কপার কেবলের বদলে অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করে খরচ কমানোর পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে মোট সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার ফাইবার কেবল লাইন স্থাপনের কাজ শেষ করা হয়।
×