ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শেখ রাসেল জাতীয় শিশুতোষ চলচ্চিত্র উৎসব শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৯ অক্টোবর ২০১৬

শেখ রাসেল জাতীয় শিশুতোষ চলচ্চিত্র উৎসব শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পর্দায় ভেসে আসছে দৃশ্যের পর দৃশ্য। কাহিনীর সূত্র ধরে উচ্চারিত হচ্ছে নানা সংলাপ। কিছুক্ষণ পরপর অভিনয়শিল্পীর সংলাপ প্রক্ষেপণে মিলনায়তনজুড়ে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে শিশুদের কলরব। আপন মননের উপযোগী শিশুতোষ চলচ্চিত্র দেখে খুদে দর্শকরা কখনো বা করতালিতে মুখরিত করছে মিলনায়তন। মঙ্গলবার বিকেলে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে রাজধানীর শিশু একাডেমির মিলনায়তনে। এদিন থেকে শুরু হলো শেখ রাসেল জাতীয় শিশুতোষ চলচ্চিত্র উৎসব। বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫২তম জন্মদিন উপলক্ষে এ উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি। পাঁচ দিনের এ উৎসবের সেøাগান ‘চলচ্চিত্র হোক শিশুর স্বপ্নের মতো রঙিন’। শিশুদের মাঝে মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে ঢাকাসহ ৮টি বিভাগীয় শহরে ছোটদের ছবি দেখার এ আয়োজন করা হয়েছে। বড়দের পাশাপাশি খুদে নির্মাতাদের নির্মিত চলচ্চিত্রও ঠাঁই পেয়েছে উৎসবে। এগুলোর মধ্যে দেশে নির্মিত শিশুতোষ পূর্ণদৈর্ঘ্য, স্বল্পদৈর্ঘ্য, প্রামাণ্য ও এ্যানিমেশন চলচ্চিত্র। সব মিলিয়ে উৎসবে প্রদর্শিত হবে ১৭টি চলচ্চিত্র। এই উৎসব ছাড়াও এদিন শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে শেখ রাসেল গ্যালারিতে শেখ রাসেলের দুর্লভ ৬২টি ছবির স্থায়ী প্রদর্শনীর সূচনা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসব উদ্বোধন করবেন মহিল ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম, শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, শিশু একাডেমির পরিচালক মোশাররফ হোসেন, চলচ্চিত্র নির্মাতা সালাহউদ্দিন জাকি, আশরাফ শিশির ও সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আরাফাত এ রহমান। উদ্বোধনী বক্তব্যে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, শিশুদের জন্য নিরাপদ দেশ গড়তে নিরন্তরভাবে কাজ করছে সরকার। শিশুদের নিয়ে এই চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন সে উদ্যোগেরই একটি অংশ। তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের নিষ্ঠুরতা থেকে ছোট্ট শিশু রাসেলও রেহাই পায়নি। তারপর থেকে বাংলাদেশে শিশু অধিকার ও শিশুর নিরাপত্তা চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। বর্তমান সরকার শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুরু হয় চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। দেখানো হয় ৬টি শিশুতোষ ছবি। প্রথমেই প্রদর্শিত হয় শীতের সকালে রেলস্টেশনকে কেন্দ্রীয় মানুষের কর্মমুখরতাকে উপজীব্য করে শিশু নির্মাতা আরাফাত বিন জাহাঙ্গীরের ছবি ‘ভোরের যাত্রা’। এরপর দেখানো হয় দুই ভাই ও তাদের সংগ্রামী মায়ের গল্পনির্ভর আশরাফ শিশির নির্মিত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবি ‘গাড়িওয়ালা’। প্রদর্শিত হয় কাজী শাহেদুর রহমান নির্মিত ছবি ‘সোলজার’। এছাড়াও দেখানো হয় তানিম শাহরিয়ার নির্মিত ছবি ‘ডিজিটাল কোশচেন’, বিজয় কর্মকারের ‘দো-তলার গল্প’ ও প্রিন্স রোমান পিকিউ নির্মিত ছবি ‘অনুকরণ’। আজ বুধবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনের প্রদর্শনী শুরু হবে বেলা ৩টায়। এদিন প্রদর্শিত হচে পাঁচটি চলচ্চিত্র। এগুলো হলো মোরশেদুল ইসলামের ‘শরৎ ৭১’, সাদিয়া তাবাসসুম প্রীতির ‘ঝরাপাতার গল্প’, যুবরাজ শামীমের ‘পুতুল’, ইফতেখার আহমেদের ‘টাচিং ৭১’ ও সাব্বির মাহমুদ নির্মিত ছবি ‘দ্য পানিশড্্’। শিশুদের জন্য উন্মুক্ত পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসব শেষ হবে ২২ অক্টোবর। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে বিকেলে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত শিশু একাডেমির মিলনায়তনে চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। শুধু ২১ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয়ে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী। শিল্পকলায় পাঁচ গুণীজন স্মরণ ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের ব্যবস্থাপনায় প্রয়াত সাংস্কৃতিক মনীষীদের স্মরণে চলছে ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। ১৩ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ৮ দিনের এ স্মরণানুষ্ঠানের ষষ্ঠ দিন ছিল মঙ্গলবার। এদিন সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে স্মরণ করা হয় পাঁচ গুণীজনকে। তাঁরা হলেন শেখ লুতফর রহমান, ওয়াহিদুল হক, কলিম শরাফি, অজিত রায় ও শহীদুল্লাহ কায়সার। অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্বনর আতিউর রহমান। অধ্যাপক ড. এ কে এম নুরুল আনোয়ারের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন মানবাধিকার নেত্রী সুলতানা কামাল, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী তপন মাহমুদ ও অভিনয়শিল্পী শমী কায়সার। আলোচনা শেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে অভ্যুদয় ও খেলাঘর আসর। একক কণ্ঠে গান শোনান কণ্ঠশিল্পী তপন মাহমুদ, রোকাইয়া হাসিনা, ফকির শাহাবুদ্দিন, নীলোৎপল সাধ্য, রোকসানা আক্তার রূপসা ও সন্ধ্যা মৌলিক। আজ বুধবার একই মিলনায়তনে স্মরণ করা হবে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ আয়াত আলী খাঁ, প-িত রবি শংকর ও ওস্তাদ আলী আকবর খাঁকে। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মোবারক হোসেন খান। আলোচনা শেষে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন শিল্পী-প্রিয়াংকা গোপ। যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশনায় সেতার বাজিয়ে শোনাবেন ড. শাহাদাৎ হোসেন খান ও রীনাত ফৌজিয়া। সরোদে সুর তুলবেন রাজরূপা চৌধুরী।
×