ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আরও ১২ সিনিয়র নেতার ঘোষণা ॥ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না রিপাবলিকান প্রার্থী

ট্রাম্পকে ভোট দেব না

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১০ অক্টোবর ২০১৬

ট্রাম্পকে ভোট দেব না

নারীদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য সম্বলিত ভিডিও টেপ ফাঁস হওয়ার পর আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর থেকে সমর্থন সরিয়ে নিয়েছেন দলের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা। শুক্রবার ওই টেপ প্রকাশ্যে আসার পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১২ রিপাবলিকান নেতা বলেছেন, তারা ট্রাম্পকে ভোট দেবেন না। তবে তাৎক্ষণিক ক্ষমা চেয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করলেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড় থেকে কোনভাবেই সরে দাঁড়াবেন না বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। খবর বিবিসি, ওয়াশিংটন পোস্ট ও এএফপির। ২০০৫ ‘এ্যাকসেস হলিউড’ নামের এক অনুষ্ঠানের জন্য এনবিসি টিভির উপস্থাপক বিলি বুশের সঙ্গে এক ভিডিওতে ট্রাম্পকে বলতে শোনা যায়, তুমি যদি তারকা হও, তবে মেয়েদের নিয়ে যা কিছু করতে পার। ভিডিওতে ট্রাম্পকে আরও বলতে দেখা যায়, সুন্দরী মেয়ে দেখলেই তাকে চুমু খেতে তিনি ব্যাকুল হয়ে পড়েন। টেপটি ফাঁস হওয়ার পর থেকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। ভোটের ঠিক এক মাস আগে ওই টেপ ফাঁস হওয়ার পর ট্রাম্পের দলের মধ্যেই তাকে বাদ দিয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মাইক পেন্সকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী করার দাবি জোরালো হয়ে ওঠেছে। নতুন করে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন তুলে নেয়া রিপাবলিকান নেতাদের মধ্যে আছেন সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জন ম্যাককেইন ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইস। ম্যাককেইন বলেন, ট্রাম্পের মন্তব্যের কারণে তার প্রতি শর্তসাপেক্ষেও সমর্থন দেয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাইস বলেন, যথেষ্ট হয়েছে! ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়া উচিত নয়। তার সরে দাঁড়ানো উচিত। নিউ হ্যাম্পশায়ারের সিনেটর কেলি এ্যায়োটে বলেন, নারীদের নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করা কোন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে তিনি সমর্থন করবেন না। মার্কিন নির্বাচনের বাছাই পর্বের ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী ও ওহাইও’র গবর্নর জন ক্যাসিক বলেছেন, ট্রাম্পের মন্তব্য কুরুচিপূর্ণ এবং আমাদের দেশ আরও ভাল কিছু আশা করে। বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান নেতা বলেছেন, তারা ট্রাম্পের পরিবর্তে ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মাইক পেন্সকে ভোট দিতে চান। তবে নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র রুডি জুলিয়ানি জোর দিয়ে বলেছেন, এমন কিছু হয়নি যে ট্রাম্পকে সরে দাঁড়াতে হবে। এ ছাড়া যেসব রিপাবলিকান সমর্থন সরিয়ে নিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন মেইনের সিনেটর সুসান কলিন্স, আলাস্কার সিনেটর ড্যান সুলিভান, লিসা মুরকৌসকি, আরিজোনার সিনেটর জেফ ফ্লেক, নেভাদার ডিন হেলার, ইলিনয়ের সিনেটর মার্ক কার্ক, আইডাহোর মাইক ক্রাপো, কলোরাডোর সিনেটর কোরি গার্ডনার, সাউথ ক্যারোলাইনার সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম, সাউথ ডাকোটার সিনেটর জন থিউন ও নেবরাস্কার সিনেটর ড্যান ফিশার। এর আগে মিট রমনি, জন ক্যাসিক, জেব বুশসহ অনেক সিনিয়র রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পকে ভোট দেবেন না বলে জানিয়েছেন। এদিকে ট্রাম্পের বক্তব্যকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ‘ভয়ঙ্কর’ বলে অভিহিত করেছেন। আর ট্রাম্পের রানিং মেট পেন্স ওই ধরনের বক্তব্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও ট্রাম্প আমেরিকার জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ায় সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা তার পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছি। তবে এত সমালোচনার মুখে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়াবেন না। তার সমর্থকদের তিনি মনোবল হারাতে দেবেন না এবং রবিবার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল সাতটায়) অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কেও অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে শনিবার ট্রাম্প বলেছেন, আমার সরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা শূন্য। এখনও ‘অবিশ্বাস্য’ সমর্থন পাচ্ছেন দাবি করে নিউইয়র্কের এই ব্যবসায়ী বলেছেন, সমর্থকদের তিনি হতাশ করতে পারেন না। নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন পোস্টের সঙ্গে এক টেলিফোন সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেছেন, আমি কখনও সরে দাঁড়াব না। আমি আমার জীবনে কখনও সরে দাঁড়াইনি। তাই এই নির্বাচনী দৌঁড় থেকে আমি ইস্তফা দিচ্ছি না এবং আমার ব্যাপক সমর্থন রয়েছে।
×