ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে তিন তালাকের কোন স্থান নেই

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৯ অক্টোবর ২০১৬

ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে তিন তালাকের কোন স্থান নেই

তিন তালাক কখনই ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অংশ নয় এবং ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে তিন তালাকের স্থান নেই। তিন তালাকের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করে এভাবেই শীর্ষ আদালতে শুক্রবার নিজেদের অবস্থান জানায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। খবর এনডিটিভি ও এই সময়ের। সুপ্রীমকোর্টে হলফনামা দিয়ে নারীদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার পক্ষে প্রশ্ন করে কেন্দ্রীয় সরকার। হলফনামায় তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, ভারতে কোন কারণেই নির্দিষ্ট সাংবিধানিক অধিকার থেকে নারীদের বঞ্চিত করা হবে না। হলফনামায় ভারতীয় সংবিধানের ১৪নং ধারার উল্লেখ করে লিঙ্গের সমতার উপরে জোর দিয়েছে কেন্দ্র। নারীদের প্রতি সম্মান ও স্ত্রী লিঙ্গের সমতার বিষয়ের কথাও কেন্দ্রের হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে সংবিধানের ৫১-এ ধারাকে উদ্ধৃত করে। কয়েক মাস আগে ‘তিন তালাক’ বন্ধের আর্জি জানিয়ে সুপ্রীমকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রের মতামত জানতে চায় আদালত। মুসলিম ল’ বোর্ডের বক্তব্য ছিল, তিন তালাক ‘পার্সোনাল ল’, আর তাই কেন্দ্র সেটাকে বদলাতে পারবে না। তবে সরকার ল’ বোর্ডের দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে বলে, সংবিধান অনুযায়ী ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক দেশ এবং এই দেশের কোন ধর্ম নেই। তাই তিন তালাক, নিকাহ হালালা বা বহুগামিতা কোন একটি ধর্মের আবশ্যক এবং অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ নয়। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বিশ্বের ১০টি মুসলিম অধ্যুষিত দেশের উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে নারী ও পুরুষদের মধ্যে শ্রেণী বিভাজন না করে বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে সমান অধিকারের কথাই বলা হয়েছে। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, মরোক্কো, তিউনিসিয়া, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মিসর, ইরান ও শ্রীলঙ্কা। শরিয়তি নিয়ম অনুযায়ী, কোন মুসলিম পুরুষ যদি তার স্ত্রীকে তিন বার তালাক বলে তাহলে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এই নিয়মের বিরোধিতা করে ‘ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন। পাশাপাশি, সমগ্র ভারতজুড়ে তারা প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি মুসলিম নারীর সই সংগ্রহ করে তারা। এরপরেই আদালতে জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করা হয়। ওই সংগঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জাকিয়া সোমান বলেন, কোরআন কখনই তিন তালাককে বৈধতা দেয়নি। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে স্বামী-স্ত্রী মিটমাট করা জরুরী।
×