ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ নয়- কন্ডিশনকেই চ্যালেঞ্জ মনে করছেন ইংলিশ অধিনায়ক

সিরিজ জয়ই জস বাটলারের লক্ষ্য

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ৭ অক্টোবর ২০১৬

সিরিজ জয়ই জস বাটলারের লক্ষ্য

মোঃ মামুন রশীদ ॥ বাংলাদেশ সফরের আগে নিরাপত্তা নিয়ে যে উদ্বিগ্নতা ছিল সেটা এখন পুরোপুরি উবে গেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের মধ্যে থেকে। যে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আছে সেটাতে পুরোপুরি সন্তুষ্টি থাকলেও এখন তাদের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের কন্ডিশন- গরম আবহাওয়া এবং আর্দ্রতার সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়াতে হিমশিম খাচ্ছে জস বাটলারের দল। সেটাকেই কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে সফরকারীরা। অপরদিকে, বাংলাদেশ দল নিজেদের কন্ডিশনে খেলবে এবং সাম্প্রতিক সময়ে দেশের মাটিতে নিজেদের শক্তিধর হিসেবেও প্রমাণ করেছে। এ কারণে সিরিজটা দলের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে বলেই মনে করছেন অধিনায়ক বাটলার। তবে ২০১১ ও ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে পরাজয়ের বিষয়টি চিন্তা করে প্রতিশোধের কোন ভাবনাই নেই ক্রিকেটারদের মধ্যে, এমন দাবিই করলেন তিনি। এতকিছুর মধ্যে ইংলিশ অধিনায়ক আশা করছেন দলের সবাই নিজস্ব নৈপুণ্যে জ্বলে উঠবে এবং সেরা ক্রিকেট খেলে সর্বোচ্চ সুযোগ তৈরি করবে জয় তুলে নেয়ার ক্ষেত্রে। তবে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম মিশনে সিরিজ জয়ের গর্বিত নেতা হতে চান বাটলার। বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ২০১০ সালে সর্বশেষবার বাংলাদেশ সফরে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছে ইংল্যান্ড। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম মিশনেই এ্যালিস্টার কুক শতভাগ সাফল্য পেয়েছিলেন। এবার বাটলারেরও অধিনায়ক হিসেবে প্রথম মিশন। চ্যালেঞ্জটা নিতে মুখিয়ে আছেন বাটলার। তবে ২০১১ ও ২০১৫ বিশ্বকাপে টানা দুইবার বাংলাদেশের কাছে পরাজিত হওয়ার বিষয়টিকে এ সিরিজে প্রতিশোধের মিশন হিসেবে দেখছেন না তিনি। বাটলার বলেন, ‘এটা খুবই গর্বের মুহূর্ত এবং অতি চমৎকার বিষয় যে দলকে নেতৃত্ব দেব। আমি এই চ্যালেঞ্জটাকে উপভোগ করি এবং আশাকরি ছেলেদের সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দিতে পারব। এই সিরিজের সব স্বত্বাধিকারী হতে চাই এবং সেই অধিনায়ক হতে চাই যে কিনা বাংলাদেশে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছে। যদি স্কোয়াডের দিকে দেখেন খুব বেশি ছেলে কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় ছিল না। যাই হোক প্রতিশোধের কোন বিষয় এখানে অনুপ্রেরণা হিসেবে নেই। আমাদের হাতে যে কাজটা আছে আমরা পুরোপুরি সেটার দিকেই মনোযোগী।’ কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে ওঠার দিক থেকে বেশ বড় ধরনের সমস্যায় আছে ইংলিশরা। এটাকেই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বাটলার। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হা, আমরা প্রস্তুত। আমার মনে হয় প্রস্তুতি ম্যাচে আমাদের যে পরিস্থিতি ছিল সেটাতে দারুণ অনুশীলন হয়েছে। আমরা সেদিনটাতে অনেক গরমের মধ্যে মাঠে থেকে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভালভাবেই উন্নতি করেছি এবং সবাই খুব ভাল ব্যাট করেছে। আরেকটি চ্যালেঞ্জ আসছে। আমরা সেভাবে দীর্ঘদিন এখানে থাকিনি। প্রতিদিনই কিছুটা সহজ হতে থাকবে। দিবারাত্রির ম্যাচগুলো কিছুটা সহজতর হবে, কিন্তু আর্দ্রতা হয়তো অনেক বেশি থাকবে। সেটা আরেকটা চ্যালেঞ্জ।’ বাংলাদেশের ধীরগতির উইকেট এবং বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে সাকিব আল হাসানকে নিয়েও ভাবতে হবে ইংলিশদের। এছাড়া নিজেদের মাটিতে সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত সাফল্য দেখানো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আরও কঠিন করবে সিরিজটাকে। এ বিষয়ে বাটলার বলেন, ‘আমি মনে করি সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকবার আমরা বেশ কিছু সিরিজে যেভাবে ভেবেছি সেভাবে শুরু করতে পারিনি। তিন ম্যাচের এ সিরিজে আমাদের ভালভাবে শুরু করা প্রয়োজন। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এবং পিচ যেমনই হোক সেটাতে খেলার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। এটা কোনভাবেই সহজ হবে না, চমৎকার চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে আমাদের জন্য। অস্ট্রেলিয়ায় আমরা বাংলাদেশের কাছে যখন হেরেছিলাম তারপরে যেমন কেটেছে তা ভিন্ন একটা দলে পরিণত করেছে আমাদের। আমরা যে কোন বোলারের জন্যই প্রস্তুত হব। বাঁহাতি স্পিনারদের এসব বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা চলছে। এটা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কারণ সবারই নির্দিষ্ট কোন সুদক্ষের বিরুদ্ধে নিজস্ব পরিকল্পনা থাকতে হবে।’ তবে সিরিজ জয়ের আশা থাকলেও প্রথম ম্যাচটাকে দারুণ গুরুত্ব দিচ্ছেন বাটলার। তিনি বলেন, ‘হা, এজন্য দুটা ম্যাচ জিততে হবে। কিন্তু প্রথম ম্যাচটা খুবই জরুরী এবং অতীব প্রয়োজন ভালভাবে শুরু করা। কাল (আজ) আমরা যখন নামব প্রত্যাশা থাকবে সবক্ষেত্রে সবাই দারুণভাবে জ্বলে উঠবে এবং দারুণ কিছু নৈপুণ্য করবে। হতে পারে বাংলাদেশ ঘরের মাটিতে নিজেদের কন্ডিশনে এবং ওয়ানডে সিরিজগুলোতে তাদের সাম্প্রতিক সাফল্যে খুবই শক্তিশালী। আমরা আন্ডারডগ হয়ে নামলেও সেটা নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তা নেই, সেটা হয়তো আমাদের সঙ্গে ভালভাবেই খাপ খেয়ে যায়!’
×