ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ঝিলাম ও চেনাবে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের আহ্বান

সিন্ধু পানি চুক্তি ইস্যুতে বিশ্বব্যাংকের দ্বারস্থ পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সিন্ধু পানি চুক্তি ইস্যুতে  বিশ্বব্যাংকের দ্বারস্থ পাকিস্তান

পাকিস্তান সিন্ধু পানি চুক্তি ইস্যুতে বিশ্বব্যাংকের দ্বারস্থ হয়েছে। দেশটি মঙ্গলবার ঝিলাম ও চেনাব নদীতে ‘অবৈধ’ স্থাপনা নির্মাণে ভারতকে বাধা দিতে সংস্থাটির প্রতি আহ্বান জানায়। একই ইস্যুতে ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কথাও ব্যক্ত করেছে। খবর ডন ও এনডিটিভির। ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পাকিস্তানী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বিশ্বব্যাংক সময়মতো চুক্তির বাধ্যবাধকতা পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’ সিন্ধু পানি চুক্তি (আইডব্লিউটি), ১৯৬০-এর ৯ ধারা মোতাবেক সালিশের জন্য পাকিস্তানের সাম্প্রতিক অনুরোধের বিষয়ে আলোচনা করতে এ্যাটর্নি জেনারেল আশতার আউসাফ আলীর নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী প্রতিনিধিদল ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের সদরদফতরে এর সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। সিন্ধু পানি চুক্তি মোতাবেক ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পানি বণ্টন হয়। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ও প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তি ভারতকে পূর্বাঞ্চলীয় ইরাবতী, শতদ্রু ও বিপাশা নদীর পানিতে পূর্ণ অধিকার দেয়। অন্যদিকে পাকিস্তান পশ্চিমাঞ্চলীয় সিন্ধু, ঝিলম ও চেনাব নদীর পানিতে অধিকার পায়। ভারত কোন জলবিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করতে চাইলে সে ক্ষেত্রে সিন্ধু পানি চুক্তিতে সুনির্দিষ্ট নকশা ও নীতি মানার কথা বলা হয়েছে। পাকিস্তান বলছে, ঝিলাম ও চেনাবে কিষেণগঙ্গা ও রাতলে জলবিদ্যুত কেন্দ্র এই নকশা ও মানদ- ভঙ্গ করছে। দুটি প্রকল্পের নকশার বিষয়ে মতপার্থক্য নিয়ে কয়েক দফা দুই দেশের সিন্ধুর পানি বিষয়ক স্থায়ী কমিশনের মধ্যে আলোচনা হলেও কোন সমাধান আসেনি। পাকিস্তানের কর্মকর্তারা বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে সালিশী আদালত গঠনে বিচারক নিয়োগ দেয়ার ওপর জোর দেন। চুক্তি মোতাবেক সালিশী আদালত প্রতিষ্ঠায় বিশ্বব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ মঙ্গলবার জাতীয় পরিষদকে বলেন, ভারত চুক্তি ভঙ্গ করলে তা হবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। এর আগে উরি হামলার ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সিন্ধু পানি চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, ‘পানি ও রক্ত একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।’ ভারত থেকে প্রবাহিত সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাব নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল পাকিস্তানের কৃষি থেকে শুরু করে বিদ্যুত উৎপাদন পর্যন্ত। এই নদীগুলোর পানিতে টান পড়লে দেশটিতে তীব্র পানি সংকট দেখা দেবে। চাষাবাদ মারাত্মকভাবে মার খাবে। বিদ্যুত উৎপাদন ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ভেঙ্গে পড়া অর্থনীতি আরও তলিয়ে যাবে।
×