ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

নারী ফুটবলারদের নিয়ে বড় স্বপ্ন বাফুফের

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

নারী ফুটবলারদের নিয়ে বড় স্বপ্ন বাফুফের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঈদের ছুটি কাটিয়ে আবার মাঠে নেমে পড়েছে বাংলাদেশকে গৌরবান্বিত অর্জন এনে দেয়া কিশোরী ফুটবলাররা। এবার এএফসি অনুর্ধ ১৬ চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে তারা। জাতির জন্য সেটা ছিল কিশোরী ফুটবলারদের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার। ছুটি কাটিয়ে অবশ্য শুক্রবারই ঢাকায় ফিরেছে কৃষ্ণা রানীরা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কৃত্রিম ঘাসের মাঠে রবিবার থেকেই অনুশীলনে নেমে পড়েছে তারা। উদ্দেশ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করা। কারণ অতীত নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আরও সাফল্য পেতে হবে এবং সে কারণে নিয়মিত কঠোর অনুশীলনের বিকল্প নেই। আজ বিশেষ সংবর্ধনা দেয়া হবে কৃষ্ণা-সানজিদাদের। আজই রাজধানীর এক পাঁচ তারকা হোটেলে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে তাদের এই সম্মাননা দেয়া হবে। এই কিশোরীদের নিয়ে ২০২৩ মহিলা ফুটবল বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখছে বাফুফে। এমনটাই জানিয়েছেন বাফুফে মহিলা ফুটবল উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজা আক্তার কিরণ। এর আগে কখনও এএফফি অনুর্ধ ১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশের মেয়েরা। কিন্তু সব ইতিহাস পাল্টে দিয়েই চলেছে কৃষ্ণা রানীরা। একের পর এক অবিস্মরণীয় সাফল্যে দেশকে ভাসাচ্ছে গৌরবে। এই কিশোরীরাই গত বছর এএফসি অনুর্ধ ১৪ চ্যাম্পিয়নশিপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে চমক সৃষ্টি করে। তারাই এখন অনুর্ধ ১৬ দলের হয়ে আরেকটি গৌরবমাখা অধ্যায়ের সূচনা করল। এগিয়ে আসছে আরেকটি চ্যালেঞ্জ। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপসে মাঠে নামতে হবে। কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনেরও বড় ভূমিকা আছে এই মেয়েদের সাফল্য পাওয়ার পেছনে। নিজ হাতে প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলছেন তিনি কৃষ্ণাদের। বাফুফেও বসে নেই। সার্বিকভাবে এই কিশোরীদের যোগ্যতাসম্পন্ন খাঁটি মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার সার্বিক পদক্ষেপই নিয়েছে। বাফুফে ভবনে থাকার সুযোগ পাওয়ার পাশাপাশি পড়াশোনারও সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। সেজন্য আবাসিক ক্যাম্পে থাকছেন শিক্ষক। এছাড়া ফিজিক্যাল ট্রেনার, ফিজিওথেরাপিস্ট ও গোলরক্ষক কোচ যোগ দেবেন অচিরেই। এক বছরে একাধিক আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচও খেলবে কৃষ্ণারা। এ বিষয়ে কিরণ বলেন, ‘টানা এক বছর এই মেয়েদের আমরা অনুশীলনে রাখব। আমরা যদি ঠিকভাবে তাদের পরিচালনা করে অনুপ্রাণিত করতে পারি এবং যতœ নিতে পারি সেক্ষেত্রে এই মেয়েদের নিয়ে আমরা বেশ আশাবাদী। এটা শুধু এই মেয়েদেরই কাজ নয়, আমাদেরও অনেক দায়িত্ব আছে পালন করার। সেটা যথাযথভাবে পালনের জন্য সবাই সচেষ্ট আছি। আমাদের পরিকল্পনা তাদের ভালভাবে গড়ে তুলে ২০২৩ বিশ্বকাপ খেলার। সেই আশা নিয়েই আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করছি।’ আপাতত সামনে দুটি বড় চ্যালেঞ্জ মহিলা ফুটবলারদের জন্য। প্রথম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে জাতীয় মহিলা দল খেলবে। সেখানেও এই কিশোরী ফুটবলারদের অনেকেই ঠাঁই পাবেন বলে জানিয়েছেন কিরণ। আর আগামী বছর ‘এএফসি অনুর্ধ ১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ’-এর চূড়ান্ত পর্বের খেলা ৯ সেপ্টেম্বর থেকে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে। এই পর্বে বাংলাদেশ অনুর্ধ ১৬ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলসহ এশিয়ার শীর্ষ ৮ দল অংশ নেবে। বাংলাদেশের কিশোরীরা এখন এশিয়ার সেরা আটে অবস্থান করছে। আবাসিক প্রশিক্ষণ ক্যাম্প শুরুর কারণ এসব আসর এবং ২০২৩ বিশ্বকাপের আগে মেয়েদের সেভাবে যোগ্যতা ও দক্ষতাসম্পন্ন হিসেবে গড়ে তোলার জন্যই। কিরণ বলেন, ‘আমরা সব ধরনের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে চাই, যেন কোন বিষয়ে বিন্দুমাত্র ঘাটতি না থাকে। লেখাপড়ার পাশাপাশি উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য সার্বিক ব্যবস্থা করা এবং মেয়েদের বেতন-ভাতা দেয়া হবে। কোচিং স্টাফে আপাতত যারা আছে তাদের ওপর আমরা আস্থা রাখছি। এ জন্য ২ বছরের চুক্তিও করা হয়েছে। তারা যদি আরও সাফল্য আনতে পারেন সেক্ষেত্রে আমরা আরও দীর্ঘ সময় তাদের রেখে পরিকল্পনা সাজাব।’ শুক্রবার কোচ ছোটনের কাছে রিপোর্ট করার পর মেয়েদের দু’দিন বিশ্রাম দেয়া হয়েছিল। কিন্তু রবিবারই অনুশীলন শুরু করেছে তারা। আর আজ তাদের জন্য অপেক্ষা করছে এতদিনের অর্জনের স্বীকৃতি। সংবর্ধনা পাবে কৃষ্ণারা বাফুফে থেকে। আজ বিকেলেই এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেটা দেয়া হবে তাদের।’
×