ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বদলে যাচ্ছে অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবন

বিয়ে থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে চীনা মেয়েরা

প্রকাশিত: ০৪:২০, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বিয়ে থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে চীনা মেয়েরা

লিউ ঝেনফেং বিয়ে করেছেন ২৫ বছর বয়সে। এরপর তার পারিবারিক জীবন বন্দী হতে থাকে সংসারের নিত্যদিনের ফাঁদে। একটি মেয়ে জন্ম নেয় তার। প্রয়োজন দেখা দেয় একটি বাড়ি, আসবাবপত্র, খেলনা ইত্যাদির। মেয়েটির বয়স এখন ২৮ । নাম সং জং পেই। সং জং পেই মাকে অনুসরণ করেননি। ধরেছেন ভিন্নপথ। তিনি দুই রুমমেটের সঙ্গে বেজিংয়ে একটি ভাড়া করা এ্যাপার্টমেন্টে থাকছেন এবং জীবনকে গড়ে তুলছেন। প্রতিষ্ঠিত হতে চাইছেন আর্থিক দিক থেকে। তিনি শীঘ্রই বিয়ে করবেন না বা ভাবেন না মাতৃত্বের কথা। তিনি বলেন, জীবনের এ পর্যায়ে আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আমার ব্যক্তিগত উন্নয়ন। চীনাদের মধ্যে বিয়ে করছে এমন মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। চীনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনের ওপর তা গভীর প্রভাব ফেলছে এবং এক পরিবর্তন সূচিত হচ্ছে তাতে। বদলে যাচ্ছে চীনের সমাজ। বিয়ের সংখ্যা কমে যাওয়া মানে শিশুর সংখ্যা হ্রাস পাওয়া। এতে বাড়িতে ব্যয় কমে আসে। কমে আসে গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও পরিবার বিষয়ক অন্য দ্রব্যাদির ক্রয়। এ ধরনের ব্যয় চীনের জন্য প্রয়োজন। কারণ, এতে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। এর মধ্যেই কিছু ব্যবসায়ের সূচনা হচ্ছে অবিবাহিত মেয়েদের জন্য। গহনা নির্মাতারা অবিবাহিত প্রণয়ীদের জন্য বাজারে নিয়ে আসছেন উজ্জ্বল ঝকমকে ও সস্তা অলঙ্কার। একজন গৃহস্থালি সামগ্রী নির্মাতা ছোট্ট রাইস কুকার বিক্রি করছেন। যে সকল চীনা নারী পরে সন্তান জন্মাবার জন্য তাদের ডিম্বাণু হিমায়িত করে রাখতে চান তাদের জন্য বিজ্ঞাপন দিচ্ছে বিদেশী বিভিন্ন ফার্টিলিটি সার্ভিস। চীনে ডিম্বাণু হিমায়িত করার প্রক্রিয়া অবশ্য অবিবাহিত নারীদের জন্য নিষিদ্ধ। কিন্তু বিয়ের সংখ্যায় মন্দা দেখা দিলেও এতে এক রূপালি রেখা বা আশার আলোও ফুটে উঠছে। শিক্ষিত নারী জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণ থেকে উদ্ভূত হয়েছে এ মন্দার। অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানবিদ ও সমাজতত্ত্ববিদরা বলেছেন, ঐ নারীদের কেউ কেউ জীবনকে গড়ে তোলার জন্য এবং অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠার জন্য বিয়ে করতে বিলম্ব করছেন। এতে সৃষ্টি হচ্ছে আরও শক্তিশালী নারী জনসংখ্যার যারা বিয়েকে আর নিরাপত্তার একমাত্র ভিত্তি বলে মনোভাব পোষণ করছেন না। এর কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনাল স্কুল অব ডেভেলপমেন্টের অর্থনীতির অধ্যাপক ঝাং জিয়াওবো বলেন, এ নারীরা উচ্চশিক্ষিত, তারা ভাল বেতনে চাকরি করেন। বিয়ে করলে তারা অর্থনৈতিক উৎসাহ থেকে ছিটকে পড়বেন। চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় নারীদের জন্য বিয়ের প্রতি অব্যাহতভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস
×