ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

জিতেন্দ্র কুমার সিংহ

মিথ্যার সাতকাহন

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মিথ্যার সাতকাহন

মানুষের চরম ও পরম আকাক্সক্ষাই হচ্ছে নিদ্রি সুখ ও শান্তি। সমাজনীতি, অর্থনীতি, রাজনীতি ও ধর্মনীতির প্রবক্তা মহামনীষীগণ নিজ নিজ দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত সুচারুরূপে মানুষের সেই কাম্য বস্তু লাভের একটা সুশৃঙ্খল ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। তারপরও মানুষের আশা কেবল আশাই থেকে যায়। তার মূল কারণ হচ্ছে- প্রতিক্রিয়াশীল অসামাজিক মহল কর্তৃক সহজ-সরল ব্যাপক মানুষের কাছে গুজব ও অপপ্রচারের মাধ্যমে তারা তাদের আস্থা অর্জন করতে সফল হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে এটাও ঠিক যে- অতি প্রগতিশীল ও অতি উগ্রবাদী নামধারী এক উল্লেখযোগ্য অংশের কাছে পরমত সহিষ্ণুতার লক্ষণ বিন্দু বিসর্গও নেই। এ বিষয়টাও শান্তিপ্রিয় সহজ-সরল মানুষকে গুজব ও অপপ্রচারে অন্ধবিশ্বাসী হতে অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি, ধর্ম ও বিজ্ঞানের মধ্যে পারস্পরিক কোন সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা আছে বলে মনে হয় না। তবে কোন কোন ব্যাখাকার স্ব-স্ব ধর্মের সঙ্গে প্রায় ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের মিল থাকার প্রমাণ করতে চেয়েছেন। অর্থাৎ তাঁর ধারণকৃত ব্যবস্থাই একমাত্র বিজ্ঞানভিত্তিক। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি না থাকার কারণে নিজে সচেতনভাবে নিজের বিশ্বাসে অটল থেকে প্রচার করতে থাকে এবং ভক্তরা অবচেতনভাবেই প্রচারের বিষয়ের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়। প্রচারিত বিষয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে শ্রোতার মানসিক সক্ষমতার অভাব থাকাতেই গুজব ও অপপ্রচারকারীরা সুযোগ পেয়ে যায়। মানুষের চেতনা ও বোধশক্তির জায়গাটাকে উর্বর করতে প্রয়োজনীয় কৌশল শেখাতে ব্যর্থ হলে এবং শেখার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সুখ ও শান্তিকামীদেরই সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেয়া আবশ্যক। অন্যথায় গুজব ও অপপ্রচারের বিস্তৃতি লাভের পথ বন্ধ হবে না। সেই গুজব গজব আকারে প্রথমে সহজ-সরল মানুষের সামনে হাজির হবে এবং পরবর্তী সময়ে সমাজের প্রত্যেকের ওপরই প্রযুক্ত হবে। অপপ্রচার করা কিংবা গুজব রটনার মৌলিক যুক্তি কি? এ প্রশ্নের একটা অত্যন্ত সহজ উত্তর হচ্ছে- অসত্য দ্বারা সত্যকে ঢেকে রাখার চেষ্টাকেই গুজব এবং অমূলকভাবে কোন অসত্য ঘটনাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টাকে অপপ্রচার বলে। এগুলো সমাজের কোন কল্যাণ বয়ে আনে না। বরং অপূরণীয় ক্ষতি করে থাকে। যারা পরার্থের মধ্যে নিহিত স্বার্থকে নিজস্ব দৃষ্টিসীমার মধ্যে আনতে অক্ষম; কিন্তু বিচ্ছিন্নভাবে নিজের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে পুরোপুরি স্বার্থান্ধ হয়ে যায়, তারাই গুজবকারী এবং তারাই অপপ্রচারকারী। প্রথমত একজন কিংবা তার অধিক কিছু স্বার্থান্ধ লোক জোটবদ্ধ হয়ে কোন অসত্যকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার অভিপ্রায়ে প্রচার করতে থাকে। সেই অসত্যকে সত্য প্রমাণ করতে গিয়ে আরও শত শত অসত্য দ্বারা সমাজকে ঘিরে ফেলা হয়। তার মধ্যে অবস্থান করে সত্যের অনুসন্ধান করা খুব সহজ কাজ নয়। সত্য-অসত্য নির্ণায়ক গড়পড়তা কোন কৌশল রপ্ত করার ইচ্ছা সমাজের প্রত্যেকের মনে জেগে না উঠলে স্বার্থান্ধদের চলার পথ কোন সময়ই বন্ধ করা সম্ভব হবে না। কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার থেকে
×