ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চীনকে রুখতে ভারতের প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৪:০১, ১৮ আগস্ট ২০১৬

চীনকে রুখতে ভারতের প্রস্তুতি

ভারত স্থলসীমান্ত এবং সামরিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ বরাবর চীনের মোকাবেলায় এর প্রচলিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধীরে ধীরে জোরদার করছে। ভারত উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আরও সুখোই-৩০ এক্সকেআই জঙ্গী বিমান, গোয়েন্দা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র এবং পূর্ব লাদাখে ট্যাঙ্ক রেজিমেন্ট ও সৈন্য মোতায়েন করছে। লাদাখ ও অরুণাচল প্রদেশে চীনের ক্রমবর্ধমান অনুপ্রবেশ রোধ করাই এর উদ্দেশ্য। টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়া টিভি নিউজ ডেস্ক। সামগ্রিক পরিকল্পনার আওতায় চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএনএ) সঙ্গে সামরিক শক্তির সুস্পষ্ট অসমতা কাটিয়ে উঠতে ভারতীয় বিমানবাহিনী শুক্রবার অরুনাচল প্রদেশের ওয়েস্ট সিয়াং জেলায় এর পাসিঘাট এডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ডকে (এএলজি) সক্রিয় করবে। জুনিয়র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেন রিজিজু এবং ইউ ইস্টার্ন এয়ার কমান্ডের প্রধান এয়ার মার্শাল সি হরি কুমার এএলজির উদ্বোধন করবেন। এসএএজিতে বিমান ও হেলিকপ্টার উভয়েই অবতরণ করতে পারে। এক অফিসার বলেন, এএনজি কেবল বিভিন্ন সম্ভাব্য প্রয়োজনে দ্রুত সাড়া দেয়ার সামর্থ্যই বাড়াবে তাই নয়, ইস্টার্ন ফ্রন্টে বিমানবাহিনীর সামগ্রিক কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি করবে। লাদাখের দৌলত বেগ, ওলদি ও নাইওমাস্থ এএলজিগুলোও ইতোপূর্বে সক্রিয় করা হয়েছে। পাসিঘাট হলো অরুনাচলের পঞ্চম এএলজি যা সক্রিয় করা হবে। ঐ অফিসার বলেন, জিরো, এ্যালং মেচুকা ও ওয়ালংয়ের এএলজিগুলো এখন চালু রয়েছে, আর তুতিং ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তুত থাকা এবং তাওয়াং আগামী বছরের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা। উপরন্তু সরকার আন্দামান ও নিকোবর কমান্ডের (এএনসি) ভিতর কয়েকটি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করেছে। ভারতের প্রথম থিয়েটার কমান্ড হিসাবে ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এএনসি রাজনীতিক ও আমলাদের উদাসীনতা এবং সেনাবাহিনীর মধ্যকার মতপার্থক্যের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে একথা বলা হয়। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের সামরিক পদক্ষেপের মোকাবেলা করতে ভারত আন্দামান ও নিকোবর কমান্ডে নিয়মিতভাবে সুখোই ৩০ এমকেআই জঙ্গী বিমান, সি-১৩০ জে সুপার হারকিউলিস বিমান, সাবমেরিন বিধ্বংসী ওয়ারফেয়ার পসেইডন-৮১ বিমান এবং দূরপাল্লার টহল যান মোতায়েন করছে। কিন্তু অমীমাংসিত ৪০৫৭ কিলোমিটারের লাইন অব এ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) বরাবর সড়ক ও রেল যোগাযোগ ভারতের জন্য এক বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে রয়েছে। কারণ চীনা সৈন্যরা প্রায় প্রতিদিনই এ রেখা লঙ্ঘন করে থাকে। এলএসি বরাবর নির্মাণের জন্য চিহ্নিত ৭৩টি সামরিক দিকদিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মাত্র ২৩টির নির্মাণ কাজ এ পর্যন্ত শেষ হয়েছে। অথচ ৭৩টির সবই ২০১২ সালের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। একইভাবে, সামরিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি রেলপথ নির্মাণ স্বপ্নই রয়ে গেছে। কারণ সরকার সেগুলো নির্মাণের ‘নীতিগত’ অনুমোদন দিয়েছে এবং এখন পর্যন্ত চারটি পথের চূড়ান্ত অবস্থিতি জরিপের কাজ হাতে নিয়েছে। গত মাসে ভারত চীন সংলগ্ন এর সীমান্ত বরাবর উত্তরাঞ্চলীয় লাদাখে প্রায় ১০০টি ট্যাংক মোতায়েন করেছে বলে গত মাসে খবর বেরোয়। ভারতের সামরিক কর্মকর্তারা এর কারণ হিসেবে সীমান্তে চীনা অংশে চীনের সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন। এ নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী ২০১৪ সালের পর লাদাখ অঞ্চলে তৃতীয়বারের মতো ট্যাংক বাহিনী মোতায়েন করল। ১৯৬২ সালে ভারত ও চীনের সীমান্ত বিরোধ দুটি দেশের মধ্যকার সর্বাত্মক যুদ্ধের রূপ নেয়। ভারতের নৌবাহিনী দক্ষিণ চীন সাগরেও তিনটি জাহাজ পাঠিয়েছে। ভারতের পূর্ণাঙ্গ মানচিত্রকে গুগলের স্বীকৃতি ॥ অনলাইন বার্তা সংস্থা কলকাতা ২৪ জানায়, বহু বছর পর হলেও অবশেষে ইতিহাসের সত্যিকে স্বীকার করে ভারতের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে নিল গুগুল। পাকিস্তান অধিকৃত ‘কাশ্মীর’ ও চীন অধিকৃত ‘আকসাই চীন’ ভারতেরই অঙ্গ। এমনটাই জানিয়ে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে গুগুল। এতে হতাশা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর এবং আকসাই চীন ভূখ- জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের দুই প্রান্তে অবস্থিত। প্রতিবেশী পাকিস্তান ও চীন দীর্ঘদিন ধরেই যা জবরদখল করে রেখেছে। কাশ্মীর ইস্যু পাকিস্তনের মূল বিদেশ নীতি- এমনই জানিয়েছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াজ শরীফ। তার মন্তব্যের জের ও লাগাতার জঙ্গী অনুপ্রবেশে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে উপত্যকা। এরই মাঝে গুগুলের নতুন ম্যাপ পাকিস্তানের হতাশা বাড়িয়ে দিয়ে দেখাল, অধিকৃত কাশ্মীর ও তার রাজধানী মুজাফ্ফরাবাদ ভারতেরই অংশ। একইসঙ্গে গিলগিট, রাওয়ালকোট, নিউ মীরপুর, স্কার্দু, দিয়োসাই ও সান্দুর ন্যাশনাল পার্ক ভারতের সীমারেখার মধ্যে দেখানো হয়েছে, যা অধিকৃত কাশ্মীরের অংশ হিসেবে পাকিস্তান নিজেদের বলে দাবি করে। শুধু তাই নয়, গুগুলের ম্যাপে বলা হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ কে-২ ভারতেরই।
×