ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্প-হিলারি বাগ্যুদ্ধ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১২ আগস্ট ২০১৬

ট্রাম্প-হিলারি বাগ্যুদ্ধ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দু’প্রধান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হিলারি ক্লিনটন বুধবার একে অপরের রাজনৈতিক দুর্বলতাকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালান। গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি (জিওপি) বা রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প তার ডেমোক্র্যাটিক প্রতিদ্বন্দ্বীর নৈতিকতা ও সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আর হিলারি ট্রাম্পের আচার-আচরণ নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করেন। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। ভার্জিনিয়াতে ট্রাম্প আর্থিক চাঁদার বিনিময়ে সুযোগ-সুবিধা দেয়ার ব্যবসায় লিপ্ত হওয়ার দায়ে হিলারির ঘনিষ্ঠ মহলকে অভিযুক্ত করেন। ট্রাম্প এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার প্রকাশিত ই-মেইলগুলোর উদ্ধৃতি দেন। এসব ই-মেইলে দেখা যায়, হিলারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ফাউন্ডেশনের বড় বড় দাতার জন্য পররাষ্ট্র দফতরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দিতে চেয়েছিলেন। ট্রাম্প বলেন, একেই বলা হয় আর্থিক চাঁদার বিনিময়ে সুযোগ-সুবিধা বণ্টন এবং এরূপ কোন কোন কাজ আসলেই খুব খারাপ ও বেআইনী। আইওয়াতে প্রচার অভিযানে যাত্রা বিরতিকালে হিলারি সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনীর সমর্থক এমন লোকজনের বিষয়ে ট্রাম্পের মঙ্গলবারের উক্তি স্মরণ করিয়ে দেন। সমালোচকরা বলেন, উক্তিটিতে হিলারির ওপর সহিংস আক্রমণ চালাতে বন্দুক মালিকদের উৎসাহিত করা হয়েছে এমন ব্যাখ্যা দেয়া যেতে পারে। হিলারি সহিংসতা উস্কে দেয়ার জন্য ট্রাম্পের নিন্দা করেন। তিনি বলেন, সহজ কথায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও কমান্ডার-ইন-চীফ হওয়ার মতো মেজাজ ট্রাম্পের নেই। উভয় আক্রমণই প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্বাচনী প্রচার কৌশলের সঙ্গে খাপ খায় এবং জনমত জরিপে উদঘাটিত দুর্বলতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল/এনবিসি নিউজের পরিচালিত সর্বশেষ জরিপে ট্রাম্পের মেজাজ নিয়ে ভোটারদের গভীর উদ্বেগ ধরা পড়ে। রেজিস্টার্ড ভোটারদের শতকরা মাত্র ১৬ জন বলছেন, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার মতো সঠিক মেজাজ রয়েছে এবং শতকরা মাত্র ২৩ ভাগ বলছেন, প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব পালনের মতো জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা তার রয়েছে। আস্থার বিষয়টিই হিলারির দুর্বল দিক। জরিপের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এমন ব্যক্তিদের শতকরা ২২ জন তাকে সৎ ও অকপট বলে মনে করেন, আর ৫৬ শতাংশ ঐসব গুণ প্রসঙ্গে তাকে ভাল মনে করেন না। ট্রাম্প মঙ্গলবার হিলারির আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অধিকারের বিরোধী এমন ব্যক্তিদের সুপ্রীমকোর্টের বিচারক নিয়োগের সম্ভাবনার কথা বলে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি করেন। তিনি বলেন, যদি হিলারি তার বিচারকদের নিয়োগ করার সুযোগ পান, তাহলে আপনারা কিছুই করতে পারবেন না। তবে দ্বিতীয় সংশোধনীর (অগ্নেয়াস্ত্র রাখার অধিকার) সমর্থক এমন লোকজন সেখানে থাকতে পারেন, আমি জানি না। হিলারির প্রচার শিবির ও অন্যরা জোর আপত্তি জানিয়ে বলেছেন যে, তার মন্তব্যকে সহিংস কার্যকলাপের আহ্বান বলে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। তিনি বলেন, তার নিজের সঙ্গে ট্রাম্পের অন্যতম পার্থক্য এই যে, লাগামহীন কথাবার্তার যে বড় পরিণতি থাকতে পারে, ট্রাম্প তা বোঝেন না। ট্রাম্পের মিত্ররা বলেন, তিনি লোকজনকে তাদের রাজনৈতিক শক্তির সমবেশ ঘটানোর আহ্বান জানাচ্ছিলেন এবং ডেমোক্র্যাটরা এক বিতর্ক সৃষ্টির জন্য তার কথাবার্তার অপব্যাখ্যা করছেন। ট্রাম্প মঙ্গলবার অরেকটি ঘটনার দিকে আরও মনোযোগ দেন। সেটি ছিল হিলারির ব্যক্তিগত সার্ভার থেকে ২৯৬ পৃষ্ঠার ই-মেইল প্রকাশিত হওয়ার ঘটনা। রক্ষণশীল গ্রুপ জুডিশিয়াল ওয়াচ তথ্য স্বাধীনতা আইনে মামলা করে এসব দলিল সংগ্রহ করে। একটি ঘটনায় ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের এক কর্মকর্তা, পররাষ্ট্র দফতরের এক কর্মকর্তা এবং গিলবার্ট চাগোরি নামের এক দাতার মধ্যে এক বৈঠকের আায়োজন করতে হিলারি ক্লিনটনের শীর্ষ সহকারীদের অনুরোধ জানান। চাগোরি ফাউন্ডেশনে ১০ লাখ থেকে ৫০ লাখ ডলার দান করেছিলেন। প্রকাশিত ই-মেইল থেকে এটা জানা যায়। হিলারির প্রচার শিবির এক বিবৃতিতে জানায় যে, ই- মেইলগুলোতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জড়িত নন বা সেগুলো ফাউন্ডেশনের কাজকর্ম সম্পর্কিতও নয়। সেগুলো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহকারী ও প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত সহকারীর মধ্যে পত্র বিনিময়ের ঘটনা।
×