ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

গণভবনে বন্যাদুর্গতদের জন্য অনুদানের চেক গ্রহণ

দেশের মাটিতে জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদ চলতে দেব না ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ১০ আগস্ট ২০১৬

দেশের মাটিতে জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদ চলতে দেব না ॥ প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলায় তাঁর সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, ইসলামের নামে যারা মানুষ হত্যা করছে তারা এ পবিত্র ধর্মকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এই ধর্মের সব থেকে বেশি সর্বনাশ নিজেরাই (জঙ্গী-সন্ত্রাসীরা) করছে, এটাই হচ্ছে দুঃখজনক। তবে বাংলাদেশের মাটিতে আমরা জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ চলতে দেব না। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণভবনে বন্যাদুর্গতদের সাহায্যার্থে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে আর্থিক অনুদানের চেক গ্রহণকালে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমি বুঝতে পারি না, যারা ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করছে তারা কীভাবে ইসলামের জন্য ভাল হতে পারে? বরং আমি মনে করি, এতে করে ইসলামকে কলঙ্কিত এবং পবিত্র ধর্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। এ ধরনের কাপুরুষোচিত কর্মকা-কে দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা প্রকৃতপক্ষে ইসলামের ক্ষতি করছে। শান্তির ধর্ম ইসলামের নাম নিয়ে মানুষ খুন করে আমাদের পবিত্র ধর্মকে তারা হেয় করে দিচ্ছে, ছোট করে দিচ্ছে, মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করে দিচ্ছে। অনুষ্ঠানে দেশের বেসরকারী ব্যাংকের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সদস্যভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুদানের চেক তুলে দেন ব্যাংকগুলোর প্রতিনিধি। এছাড়া ব্যবসায়ীদের আরও তিনটি সংগঠন এবং একাধিক ব্যবসায়িক গ্রুপের পক্ষ থেকেও অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়। বিএবির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের সঞ্চালনায় চেক গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান দেয়া ব্যবসায়ীদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সমস্যা আসবে এবং আমরা এসব সমস্যা সমাধান করব। আমাদের অবশ্যই সমস্যা সমাধান করতে হবে। আর সমাধানও করি আমরা। আমরা যেভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করছি, ইনশাল্লাহ সেভাবেই মানুষের সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলা করব। আমাদের সিদ্ধান্তই আছে যে, কোন ধরনের জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসকে আমরা প্রশ্রয় দেব না। এ ব্যাপারে আপনাদেরও সহযোগিতা চাই। জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সকলের সহযোগিতা কামনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে তাঁর সরকার জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ চলতে দেবে না। তাই আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় সকলের সহযোগিতা চাই। যে যেখানেই থাকুন, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে কেউ এই দুই দানবের সঙ্গে জড়িত হতে না পারে। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে এ ধরনের সচেতনতা সৃষ্টি করেছি। এমনকি গ্রামের জনগণও এখন এই দুই শয়তানের বিরুদ্ধে সজাগ রয়েছে। অনুদান প্রদানকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা যে সহযোগিতা দেন তা সাধারণ মানুষের কাজে লাগে। এটা মানুষের কল্যাণেই যায়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বন্যা কবলিতদের জন্য সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, যখনই আমরা দেখছি বন্যা আসছে, সঙ্গে সঙ্গে যা যা দরকার স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে সব আমরা দিয়ে দিয়েছি। রোগের প্রাদুর্ভাব যাতে না দেখা দেয়, আগ থেকেই সে ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি। দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেসরকারী খাতকে আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। বেসরকারী খাত এত বেশি প্রাধান্য কখনও পায়নি। ১০টায় ব্যাংক হিসাব খেলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যাংক ব্যবহার করতেও মানুষকে আমরা উৎসাহিত করেছি। তার সুফলটাও আপনারা পাচ্ছেন। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ছে। দেশের অর্থনীতি এখন ‘অনেক গতিশীল’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে সাধারণত বর্ষাকালে জিনিসের দাম বাড়ে। এবার কিন্তু জিনিসের দাম আমরা বাড়তে দেইনি। মুদ্রাস্ফীতি এখন মাত্র ৫ দশমিক ৪ ভাগে নামিয়ে এনেছি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আছে। অর্থাৎ মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা আছে। তিনি দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে সবার সহযোগিতাও কামনা করেন।
×