ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আদিবাসীদের সমস্যা জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্ব পায় না ॥ সংলাপে অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৮:৪৬, ৮ আগস্ট ২০১৬

আদিবাসীদের সমস্যা জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্ব পায় না ॥ সংলাপে অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে উচ্চ পর্যায়ের নীতি-নির্ধারণী সংলাপে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আদিবাসীরা অভিযোগ করেছেন, স্বাধীনতার পর থেকে জাতিগত আদিবাসীর সংখ্যা কমেই চলেছে। তাদের সমস্যা ও অধিকারের বিষয়গুলো জাতীয় রাজনীতি ও গণমাধ্যমে গুরুত্ব পায় না। আদিবাসীদের উন্নয়নে সরকার যে সব পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের গতিও অত্যন্ত শ্লথ। রবিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে দিনব্যাপী সংলাপে তারা এ কথা বলেন। জাতীয় সংসদের আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাস এই সংলাপের আয়োজন করে। তিন পর্বে বিভক্ত এই অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সমতলের বরেন্দ্র অঞ্চল, ময়মনসিংহ ও সিলেটসহ অন্য এলাকার আদিবাসী প্রতিনিধিরা তাদের জীবন ও জীবিকার সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। সকালে প্রথম পর্বের আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও পাবর্ত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)। ককাসের আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা এমপির সভাপতিত্বে বিভিন্ন অঞ্চলের আদিবাসী প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় পর্ব। আর বিকেলে সমাপনী পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন ককাসের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক এবং বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। মেনন বলেন, আদিবাসীদের বিভিন্ন ইস্যু এখন জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। জাতি বৈচিত্র্যের এই দেশ আদিবাসীদের অস্বীকার করে এগিয়ে যেতে পারবে না। বাঙালী ও স্থানীয় প্রশাসনের আদিবাসী বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গী ও মানসিকতার কাক্সিক্ষত পরিবর্তন এখনও আসেনি। দ্বিতীয় পর্বে আদিবাসী প্রতিনিধিরা বলেন, মধুপর গড়ের প্রায় ১০ হাজার একর জমি সংরক্ষিত বন ঘোষণা করা হয়েছে। ওই এলাকার প্রায় ছয় হাজার আদিবাসী এখন উচ্ছেদ আতঙ্কে আছেন। দিনাজপুরে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটি গ্রামের আদিবাসীরা এখন কোথায় আছেন কেউ জানে না। উন্নয়ন প্রকল্পের নামে প্রায় গোটা গ্রামই অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সিলেট ও হবিগঞ্জের খাসিয়াপুঞ্জির আদিবাসীরাও উচ্ছেদ আতঙ্কে আছেন। এর আগে প্রথম পর্বে সন্তু লারমা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি হয়েছে, কিন্তু তার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এখনও হয়নি। বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী এখনও পার্বত্য চট্টগ্রামকে তাদের উপনিবেশ হিসেবে দেখছে। এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ থেকে আদিবাসীরা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তবে ককাসের সদস্য ও এমপি এ কে এম ফজলুল হক সন্তু লারমার এই অভিযোগ সত্য নয় বলে তাঁর বক্তৃতায় মন্তব্য করেন।
×