ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ভূতের আছর অজুহাতে গৃহবধূ শিকলবন্দী

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৭ আগস্ট ২০১৬

ভূতের আছর অজুহাতে  গৃহবধূ শিকলবন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা, ৬ আগস্ট ॥ ভূতের আছর হয়েছে এই অজুহাতে কিশোরী গৃহবধূ দিপালী রানীকে পায়ে লোহার ডান্ডাবেড়ি এবং শেকলে বেঁধে রাখা হয়েছে। অপচিকিৎসার নামে তার ওপর ওঝা-ফকিরদের নানা নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের খামারচান্দের ভিটা গ্রামের বাসিন্দা সুশিল চন্দ্র। ভ্যান চালিয়ে রোজগার যা হয় তাতে সংসার চলে। তার তিন মেয়ে রূপালী, সোনালী ও দিপালী। ছোটবেলা থেকে মেয়ে দিপালী রানী স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে ওঠে। মা অমলা রানী জানায়, ২০০২ সালের শেষদিকে দিপালী রানী অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। কম কথা বলা, একা একা জোরে গান গাওয়া, হঠাৎ করে বাড়ি থেকে রাস্তা দিয়ে দৌড় দেয়া। মেয়ের এই অস্বাভাবিক আচরণ দেখে দরিদ্র ভ্যানচালক পিতা সুশিল চন্দ্র বেকায়দায় পড়ে। তাকে ঝাড়ফুঁকের জন্য কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কবিরাজ বলেন, দিপালীর ওপর ভূতের আছর হয়েছে। শুরু হয় চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা। চিকিৎসার বদলে চলে ঝাড়ফঁক ও কবিরাজি ওষুধ। কিন্তু তাতেও উন্নতি হয়নি দিপালীর। এক পর্যায়ে কবিরাজের পরামর্শে ওই অবস্থায় মেয়েকে গত বৈশাখ মাসে সাঘাটা উপজেলার পুটিমারী গ্রামের গণেশ চন্দ্রের সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের সময় দরিদ্র পিতা সুশিল তার জামাইকে ২০ হাজার টাকা যৌতুকও দেয়। বিয়ের পর প্রায় দুই মাস ভালই কেটেছিল দিপালী রানীর। কিন্তু এরই মধ্যে আবারও দিপালী রানী তার শ্বশুরবাড়িতে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। গত ১ আগস্ট দিপালীর স্বামী গণেশ চন্দ্র ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন দিপালীর হাত-পা বেঁধে তার পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে দেয়। তার কোন চিকিৎসা না করে হাত-পা বেঁধে ভ্যানযোগে নিয়ে আসেন দিপালীদের বাড়িতে। তারপর গণেশ শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
×