ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

তাপস মজুমদার

সাবধান! বাজার আসছে

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ২ আগস্ট ২০১৬

সাবধান! বাজার আসছে

বাঙালী মধ্যবিত্ত বাজার করতে ভালবাসে। পারলে সে প্রতিদিন বাজারে যায়। বাজার করাটা তার কাছে একই সঙ্গে ফ্যাশন এবং প্যাশন। এর পাশাপাশি নিম্ন মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষ, যারা অনেকাংশে দিন আনে দিন খায়, তারা প্রায় দৈনিক বাজার করে। তাদের কথা এখানে বলা হচ্ছে না। কেননা, তারা প্রধানত প্রতিদিনের আয় অথবা মজুরি বুঝে চাহিদামাফিক শুধু সেদিনের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসটুকু কিনে থাকে। যেমন, একটু মাছ, একটু নুন, তেল, সামান্য সবজি ও চাল। চাহিদা থাকলে কেনে আটা-চিনি-চা-ও। তবে মধ্যবিত্ত বাজার করে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে। নিত্যদিনের চাহিদামতো মাসকাবারি চাল-ডাল-তেল-চিনির পাশাপাশি রুচিমাফিক মাছ-মাংস অথবা ডিমের সঙ্গে সে খুঁজে বেড়ায় কম্বিনেশন। অর্থাৎ, কোন মাছের সঙ্গে কোন তরকারি জমবে ভাল। মাংস যদি হয়, তাহলে সেটি মুরগি, খাসি নাকি গরু। অনেকে দেখি মহিষ কিংবা ভেড়ার মাংসও খুঁজে ফেরে বাজারে। মাছের মুড়ো, ইলিশ মাছের ডিম, শোল কিংবা মাগুর মাছ সে কেনে পরিকল্পনা করে। এর বাইরেও একটু শাকপাতা, নতুন মুলোশাক অথবা পালং, পাটশাক অথবা লালশাক, সজনে ডাটা, উচ্ছে কিংবা করলা। সঙ্গে একটু কুচো চিংড়ি, কচি লাউ, চালকুমড়া অথবা লাউয়ের ডগা প্রায়ই উদ্দীপ্ত করে থাকে বাঙালীর চিরায়ত রসনাকে। আর বাজারে ইলিশ লাগলে তো কথাই নেই। দামের জন্য বাজেটে না কুলোলেও সে মাছের রাজা অথবা রানী- যাই বলি না কেন, তার আশপাশ দিয়ে একটু ঘুর ঘুর করবে। সেদিন সুনিশ্চিত তার অফিসে যেতে বিলম্ব ঘটে। এবং একরাশ হতাশা নিয়ে সে সেদিন অফিসে প্রায় মনমরা হয়ে থাকে সারাদিন। বাজারে আসা নতুন ইলিশ কিনতে না পারার দুঃখে সেদিন সে সুযোগ পেলেই সহকর্মীদের সঙ্গে বাজারের দুরবস্থা তথা মা¹িগ-ার বাজার নিয়ে আলাপ-আলোচনা করবে। আজকাল অবশ্য অধিকাংশ মধ্যবিত্তের বাড়িতে ফ্রিজ আছে। এমনকি কিস্তির সুবিধা নিয়ে অনেকে ডিপফ্রিজও কিনে থাকে। আবার অফিসে যাওয়ারও তাড়া থাকে প্রতিদিন। প্রায়ই যানজট ও নানা কারণে অফিসে পৌঁছাতে দেরি করলেও বাজারের কথাটা সে কখনই ভুলে না। সকালে অনেকে অফিসের তাড়ায় বাজারে যেতে না পারলেও অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে অন্তত একবার সে বাজারে ঢুঁ মারবেই মারবে। মতিঝিলের কথা বলতে পারি এখানে। প্রতিদিন অফিস থেকে ফেরার পথে দেখতে পাই প্রায় অপরাহ্ন থেকেই মতিঝিল অফিসপাড়া অথবা বাণিজ্যপাড়া পরিণত হয়ে যায় পরিপূর্ণ এক বাজারে। মাছ-মাংস-মুরগি-শাকসবজি, তরিতরকারি-ফলমুল থেকে শুরু করে হেন কিছু নেই যা মতিঝিলে পাওয়া যায় নাÑ সৈয়দ মুজতবা আলীর এক রসগল্পে বর্ণিত কাঠের পিঁড়ি পর্যন্ত। আর দরদাম, চেঁচামেচি, হৈ-হল্লা, ভিড়ে-ভিড়াক্কার তো আছেই। মতিঝিলের আরও একটি অনবদ্য আকর্ষণের কথা না বলে পারা যায় না। বেশ বড় বড় চৌবাচ্চার মতো পাত্র থেকে শুরু করে ছোট বড় নানা সুশোভিত পাত্রে টই-টম্বুর করছে একেবারে জলজ্যান্ত মাছÑ রুই-কাতল-বোয়াল-চিতল এমনকি পাবদা-পুঁটি-ট্যাংরা। জ্যান্ত শোল, টাকি, শিং, মাগুর, কৈ তো আছেই। সত্যি বলতে কী বড় ও পুরনো বাজার হিসেবে প্রসিদ্ধ ঠাটারিবাজারেও জ্যান্ত মাছের এত বিবিধ সমাহার দেখা যায় না। পানিতে সাঁতরাতে থাকা জ্যান্ত মাছের সবিশেষ কদর দেখেছি কলকাতায়ও। সেখানেও বাঙালী বাবুদের দেখেছি, প্রায় প্রতিদিন তড়িঘড়ি করে থলে নিয়ে বিশেষ করে মাছের বাজারে ছোটা প্রিয় একটা হবি। পাতে চাই জ্যান্ত মাছ। ফ্রিজের মাছ-মাংসে নাকি স্বাদ ও স্বস্তি কম। জানি না, কথাটা কতটা সত্যি, অথবা আদৌ সত্যি কিনা! পুষ্টিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে কী বলেন, কে জানে! কলকাতায় তো বর্তমান ঢাকার মতো যানজট ও পরিবহন সমস্যা প্রকট নয়, বাস-মিনিবাসের পাশাপাশি আছে ট্রেন-ট্রাম। সুতরাং বাজার সেরে হাঁপাতে হাঁপাতে নাকে-মুখে দুটো গুঁজে ট্রেন-ট্রাম-বাস ধরতে তেমন অসুবিধা হয় না। বুদ্ধদেব বসুর চমৎকার একটি ছোটগল্পে বাঙালী মধ্যবিত্তের বাজারের একটি সুন্দর ছবি আছে। কলকাতার বাজারে নতুন ইলিশ উঠেছে। তারই একটি মহার্ঘ উদাহরণ ঢুকেছে জনৈক মধ্যবিত্তের হেঁসেলে। অতঃপর বাড়ির কিশোরী কন্যাটি সবিশেষ উৎফুল্লচিত্তে প্রায় উড়ে উড়ে গিয়ে সেই সুসংবাদটি পৌঁছে দিচ্ছে প্রতিবেশীদের বাড়িতে, ঘরে ঘরে গিয়ে। আদিখ্যেতা যৎকিঞ্চিৎ থাকলেও বাঙালী মধ্যবিত্তের পারিবারিক এই ছবিটি কিন্তু মনোরম এবং তথাকথিত আধুনিকতার দোহাই দিয়ে অস্বীকার করার জো নেই। প্রসঙ্গত বলি, ইলিশের জন্য বিখ্যাত ও সুখ্যাত হলেও, বাংলাদেশের বাজারে কিন্তু শ্রাবণের এই ভরা বর্ষার মৌসুমেও তেমন দেখা মিলছে না ইলিশের। যদি বা কিছু মেলে, সেসবই প্রধানত খোকা ইলিশ, টেম্পো ইলিশ নিদেনপক্ষে জাটকা। সুতরাং বাঙালীর মৎস্যরসনার ক্ষেত্রে ইলিশ পর্বের এখানেই সমাপ্তি ও দুঃখমোচন। এর বাইরে অবশ্য গত কয়েক বছরে বাঙালী মধ্যবিত্তের জন্য সার্বিক বাজার পরিস্থিতি ছিল অনেক ভাল ও সহনীয়। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি ছিল যথেষ্ট সহনীয় মাত্রায়। মাসওয়ারি ভিত্তিতে সর্বশেষ জুনে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ। মে মাসে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। রোজা ও ঈদের কেনাকাটার কারণে সামান্য এই মূল্যস্ফীতি। অথচ চলতি অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণার সময় স্বয়ং অর্থমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ২ শতাংশের মধ্যে ধরে রাখার আশা প্রকাশ করেছিলেন। সে অনুযায়ী মূল্যস্ফীতি অনুমিত মাত্রার নিচেই থাকল। এর আগে ২০১৪-১৫ এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ছিল যথাক্রমে ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ ও ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। গ্রাম-গঞ্জে মূল্যস্ফীতির চাপ ছিল আরও কম, গড়ে ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। কয়েক বছর ধরে মূল্যস্ফীতির এই সহনীয় প্রবণতা থেকে বাঙালীর মধ্যবিত্তের সুখের মাত্রা সহজেই অনুমেয়। সুসংবাদ আছে আরও একটা। এ সময়ে সরকারী কর্মচারীদের বেতন ও বোনাসের পরিমাণ বেড়েছে বাংলা নববর্ষের উৎসব ভাতাসহ। সার্বিক মূল্যস্ফীতির চেয়ে এ সময়ে মজুরি বৃদ্ধির হারও ছিল বেশি। বলা যায়, এ বড় সুখের সময়। তবে মধ্যবিত্ত বাঙালীর এই সুখের কাল প্রচ- ধাক্কা খেয়েছে ১ জুলাই রমজানে নিরাপদ এলাকা বলে পরিচিত গুলশান এবং পবিত্র ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় আকস্মিক জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের অতর্কিত হামলায়। শান্তিপ্রিয় বাঙালীর জন্য এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত। অবশ্য বিনা মেঘেই বা বলি কেন? অনেক দিন থেকেই শোনা যাচ্ছিল যে, বাঘ আসছে, বাঘ আসবে। মানুষ সেটা পুরোপুরি বিশ্বাস করে উঠতে পারেনি। এরপর যখন সত্যি সত্যি বাঘ এল মূর্তিমান আতঙ্ক ও রক্তপিপাসু হয়ে, তখন সে একেবারে অপ্রস্তুত ও হতভম্ব হয়ে গেল। সত্যি বলতে কি আমাদের মনোজগত ও জীবনযাপন এর জন্য আদৌ প্রস্তুত ছিল না। তবে এখন ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে গর্ত থেকে কেঁচোর পরিবর্তে বেরিয়ে আসছে বিষধর সাপ। এতদিন শোনা গেছে, এখন দেখা যাচ্ছে, শুধু মাদ্রাসার নিম্নবিত্ত দরিদ্র ছেলেরাই নয়; বরং সরকারী-বেসরকারী নামি-দামী বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ-স্কুলের একাধিক শিক্ষার্থী এমনকি শিক্ষকও জড়িয়ে পড়েছে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে। নারীদের অংশগ্রহণও বাদ যাচ্ছে না। তারা শুধু দেশেই নয়, বরং বিদেশেও ডানা মেলেছে তথাকথিত জিহাদে অংশ নিতে। অনেকেই নাম লিখিয়েছে সপরিবারে ও এককভাবে ইরাক-সিরিয়ায় আইএসের খাতায়, আফগানিস্তান-পাকিস্তানে তালেবান-আল কায়েদার কার্যক্রমে। রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় প্রতিদিনই খবর আসছে নিখোঁজ ও নিরুদ্দেশ গন্তব্যে যাত্রার। অথচ কয়েক বছর আগে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় যখন একদল জামায়াত-বিএনপির অনুসারী জোট সরকারের আমলে সেøাগান দিয়েছে, ‘বাংলা হবে আফগান, আমরা হব তালেবান’Ñ তখন সেই সেøাগানের ভাষা আমরা আদৌ আমলেই নেইনি। এর অনিবার্য বিষময় ফল বুঝি ফলতে শুরু করেছে। মধ্যবিত্ত বাঙালীর মন ও মনন এর জন্য প্রস্তুত ছিল না আদৌ। সুতরাং গুলশান-শোলাকিয়ার ঘটনায় সে একেবারে হতচকিত ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে। গত কয়েক বছরে মধ্যবিত্ত বাঙালীর মধ্যে পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্তত সপ্তাহে ‘ইটিং আউট’ তথা বাইরে খাওয়ার চল শুরু হয়েছিল। এখন শুনি এবং গণমাধ্যমে দেখতে পাই যে, গুলশান-বনানীর হোটেল-রেস্তরাঁর ব্যবসায় একরকম ধস নেমেছে। সন্ধ্যার পরে তো কথাই নেই, এমনকি দিনের বেলাও সেখানে পারতপক্ষে কেউ খেতে যায় না। বিদেশীদের ক্লাব ও গেস্ট হাউসগুলো প্রায় বন্ধ। অন্যদিকে বিপণিবিতান ও সুপারমলগুলোতেও ক্রেতা সাধারণের আগমন কম। এর মধ্যে ফেসবুক-টুইটারে কে বা কারা গুজব ছড়িয়েছে যে, সুপার মার্কেটগুলোতে জঙ্গী হামলা হতে পারে। নেহাতই গুজব হয়তো; তবে মানুষ কানে হাত না দিয়ে বসে থাকছে ঘরে। বঙ্গীয় চরিত বলে কথা! ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে সে খুবই উদ্বিগ্ন বর্তমানে। অন্যদিকে সুখবর ও স্বস্তি নেই বাজারেও। শ্রাবণের ভরা মৌসুম ও বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত, রাস্তাঘাট জলমগ্ন, জল-কাদায় ভরপুর, তদুপরি খানাখন্দে ভরা। এর পাশাপাশি অসহনীয় ও দুর্বিষহ যানজট, জলজট, জনজট। হাট-বাজারগুলো জলমগ্ন, নিমজ্জিত। বিক্রেতারা প্রায় কাকের মতো ভেজে অসহায়ভাবে। ছাতি মাথায় ক্রেতারাও জবুথবু। পণ্য সরবরাহও তুলনামূলকভাবে কম। মাছ, ডিম, মাংস, শাক-সবজি, তরিতরকারি ইত্যাদি। সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে চাল, ডাল, তেল, নুন, চিনি, গুঁড়া দুধের। ব্যবসায়ী ও ক্রেতাÑ প্রায় সবাই যেন হাতগুটিয়ে বসে আছে। মূল্যস্ফীতিতে দেখা যাচ্ছে অশনিসঙ্কেত। কেননা সামনে আসছে ঈদ-উল-আযহা, কোরবানির ঈদ। এ সময় স্বভাবতই গরম মসলা, আদা, পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদির চাহিদা ও দাম বেড়ে যায় বহুগুণ। চিনির দাম তো ক্রমাগত বাড়ছেই। গত কয়েক বছর ধরে স্থিতিশীল থাকলেও এসব পণ্যের দাম বাড়ছে আন্তর্জাতিক বাজারেও। বিশ্বব্যাংক ৫ জুলাই আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দামের সর্বশেষ তুলনামূলক একটি প্রতিবেদনে বলছে, জুন মাসে খাদ্য পণ্যের দাম বেড়েছে গড়ে ৪ দশমিক ১ শতাংশ। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) খাদ্য মূল্যসূচক অনুযায়ী, জুন মাসে বিশ্বে খাদ্য-পণ্যের দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। তারা এও বলছে যে, গত ৪ বছরের মধ্যে ১ মাসে এটাই সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধির হার। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ চাল ছাড়া বেশিরভাগ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। ২০১১ সাল থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমতে শুরু করে। সে হিসেবে গত ৪ বছর ছিল বাঙালীর জন্য সুসময়। এবারে কোরবানির ঈদে গরুর কি হবে? ভারত থেকে গরু আসা প্রায় বন্ধ রয়েছে। রাজস্থান থেকে আসত উট ও দুম্বা। এবার আসবে কিনা সন্দেহ। চোরাই পথে গরু আসাও প্রায় বন্ধ বিএসএফের কঠোর নজরদারির কারণে। ভরসার কথা অবশ্য বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী- ‘হাঁস-মুরগি, ছাগল-ভেড়া গেলে দোষ নেই, যত দোষ গরুর বেলায়!’ সেক্ষেত্রে দুই দেশের সীমান্তের দু’পাশের চোরাচালানিদের কল্যাণে শেষ পর্যন্ত কিছু গরু এলেও আসতে পারে চোরাই পথে। তবে দাম যে খুব চড়া হবে তাতে সন্দেহ নেই। হায়, সুসময় বুঝি শেষ হতে চলল! বাংলাদেশ, জার্মানি, ফ্রান্স, বেলজিয়ামে জঙ্গী ও সন্ত্রাসী হামলা, তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান পরবর্তী অসিহষ্ণু প্রতিক্রিয়া, মধ্যপ্রাচ্যে ইরাক-সিরিয়ায় আইএসের তা-ব এবং তা প্রতিরোধে ন্যাটো জোটের যুদ্ধ ঘোষণা, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের টানটান উত্তেজনা সর্বোপরি বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি অসহায় ও উদ্বাস্তু শরণার্থীর আর্তনাদ সমগ্র বিশ্বকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে প্রায় একটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধাবস্থায়। যুদ্ধবিগ্রহ এবং জঙ্গী ও সন্ত্রাসী হামলার অনিবার্য অভিঘাত অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে পড়বেই। আর এর সুনিশ্চিত প্রভাব পড়বে পণ্যদ্রব্যের আন্তর্জাতিক বাজারেও। শ্বাসরুদ্ধকর এই অবস্থায় অন্ধ হয়ে ঘরে বসে থাকলে কিন্তু চলবে না। প্রলয় বন্ধ হবে না তাতে। সুতরাং সবার দলেবলে রাজপথে নেমে আসার এখনই প্রকৃষ্ট সময়। তবে সমস্যাও আছে বৈকি। চোরাবালিÑ চারদিকে চোরাবালি।... অতঃপর অসহায় কণ্ঠস্বরে দূরদিগন্তে ডাকতে হয়, কোথায় ঘোড়সওয়ার!... বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যোগ্য বিশ্ব নেতৃত্ব আজ কোথায়?
×