ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শীর্ষ আটে থাকতে পারলেই খুশি বাকী

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১৭ জুলাই ২০১৬

শীর্ষ আটে থাকতে পারলেই খুশি বাকী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রিও অলিম্পিকে বাংলাদেশের হয়ে অংশ নিতে আগামী ৩১ জুলাই দেশ ছাড়বেন শূটার আবদুল্লাহ হেল বাকী। ওয়াইল্ড কার্ডের মাধ্যমে বিশ্ব ক্রীড়ার সবচেয়ে বড় এ আসরে অংশ নিলেও বাকীর লক্ষ্য লাল-সবুজের পতাকা বিশ্বের বুকে তুলে ধরা। তবে তার আগে আরও বেশি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হলে এবং ব্রাজিলের পরিবেশে অনুশীলনের পর্যাপ্ত সময় পেলে সেটা ফলাফলে ভাল প্রভাব ফেলতো বলে মনে করেন এই শূটার। সব শিরোপাই যেন তুচ্ছ অলিম্পিক পদকের সামনে। তাই প্রতিটি এ্যাথলেটেরই জীবনে লক্ষ্য থাকে অলিম্পিকের মতো ক্রীড়া জগতের এই মহাযজ্ঞে অংশ নেয়ার। যদিও বাংলাদেশের এ্যাথলেটদের জন্য তা আকাশ কুসুম কল্পনা। কারণ প্রতিবারই তাদের অপেক্ষায় থাকতে হয় ওয়াইল্ড কার্ডের আশায়! এবার গলফার সিদ্দিকুর সরাসরি অংশ নিলেও ওয়াইল্ড কার্ড পেয়ে বাংলাদেশের হয়ে রিও অলিম্পিকে প্রতিনিধিত্ব করবেন বাকি চার এ্যাথলেট। যাদের মধ্যে শূটার বাকী অন্যতম। গাজীপুরের ছেলে বাকী। সবসময়ই ভেবেছেন একদিন খেলবেন অলিম্পিকে। এবারই ভাগ্যদেবী মুখ তুলে তাকিয়েছেন তার দিকে। সর্বশেষ জুনে আজারবাইজানে বিশ^কাপ শূটিংয়ে অংশ নিয়ে ২৮তম হন। অনুশীলন চালাচ্ছিলেন ওয়াইল্ড কার্ড পাওয়ার আগে থেকেই। কিন্তু কেবল ঘরোয়া অনুশীলনই যে বিশ্বক্রীড়ার এই মহাযজ্ঞের প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট নয়, তা আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন বাকী। আগামী ৫ আগস্ট ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে পর্দা উঠবে অলিম্পিকের ৩১তম আসরের। তাই অংশ নিতে ৩১ জুলাই দেশ ছাড়ার কথা বাকীদের। মাঝে সময়টা খুব অল্প। তাই ব্রাজিলের পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে বাড়তি কিছু সময় পাওয়া গেলে ফলাফল আরও ভাল হতো বলে মনে করেন তিনি। পথটা বন্ধুর হলেও রিও অলিম্পিকে ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছাতে চান বাকী। শূটার বাকী অলিম্পিকে যাবেন এই পথম। তার প্রত্যাশাÑ নিজের সেরা স্কোর গড়া। ৬২৮ স্কোর গড়তে পারলে শীর্ষ আটে জায়গা করে নিতে পারবেনÑ এমনটিই তার আশাবাদ। তারপর ফাইনাল পর্বে উঠতে পারলে দিনটি ভাল গেলে সাফল্য আসতেও পারে। ‘অনুশীলনে আমার স্কোর ৬৩১.৭। আর আন্তর্জাতিক লেভেলে সেরা স্কোর ৬২৪.৮। আমি যদি ৬২৮ স্কোর করতে পারি, তাহলে নিশ্চয়ই ফাইনালে যেতে পারব।’ গত তিনটি বিশ্ব আসরে অবশ্য সেরা আটে যেতে পারেননি বাকী। ব্রাজিলে ৬২২.৮, জার্মানিতে ৬২৪.৮ ও আজারবাইজানে ৬২৩.৮ স্কোর ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ের অনুশীলনে স্কোর বেড়েছে। ডেনমার্কের কোচের অধীনে নতুন করে কিছু শিখছেনও। স্বপ্নের আসর অলিম্পিকে যাওয়া নিয়ে অনুভূতি কেমন? ‘এর আগেও শূটিং খেলতে ব্রাজিলে গিয়েছি। তবে সেটা অন্য টুর্নামেন্টে। আর এবার অলিম্পিকে। তাই খুব খুশি। অনেকদিনের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। আমার পরিবারের সদস্যরাও রোমাঞ্চিত।’ রিও অলিম্পিকে তো জঙ্গীরা হামলার হুমকি দিয়েছে। ভয় লাগছে না? ‘না, কারণ এর আগেও ব্রাজিলে খেলতে গিয়ে দেখেছি ওখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই শক্ত। কাজেই এ নিয়ে কোন দুশ্চিন্তা নেই।’ ওয়াইল্ড কার্ড পাননি মেজবাহ-শিরিন ॥ প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে অলিম্পিক গেমসে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন গলফার সিদ্দিকুর রহমান। এছাড়া আরচারির শ্যামলী রায়, শূটার আবদুল্লাহ হেল বাকী, সাঁতারু মাহফিজুর রহমান সাগর, সোনিয়া আক্তার টুম্পাসহ মোট ৪ জনের ওয়াইল্ড কার্ডের মাধ্যমে অলিম্পিকে অংশগ্রহণের বিষয়টি ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়েছে। এছাড়াও এ্যাথলেটিক্স দলের মেজবাহ আহমেদ এবং শিরিন আক্তারের অংশগ্রহণের বিষয়টি এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) পক্ষ থেকে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের মিডিয়া কমিটির সদস্য সচিব কাজী রাজীব উদ্দিন আহমেদ চপল বলেন, ‘শুক্রবার রাত আটটা পর্যন্ত ছিল শেষ সময়। কিন্তু ওই সময়েও আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি আমাদের ই-মেইলে জানায়নি এ্যাথলেটিক্সে কোন ওয়াইল্ড কার্ড দেবে কি না। তবে এর আগের আসরেও তারা সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ওয়াইল্ড কার্ড দিয়েছিল এ্যাথলেটিক্সকে। সে অনুযায়ী আমাদের ক্ষীণ হলেও আশা আছে। কেননা আগামী সোমবার ওয়াইল্ড কার্ড সংক্রান্ত কাজ শেষ করবে আইওসি।’ যদি শেষ পর্যন্ত এ্যাথলেটিক্স কোন কার্ড না পায় সেক্ষেত্রে এই প্রথম এই ডিসিপ্লিনে বাংলাদেশের কোন এ্যাথলেট ওয়াইল্ড কার্ড পাচ্ছেন না। যেটি এবার পাওয়ার কথা বাংলাদেশের দ্রুততম মানব মেজবাহ আহমেদ ও মানবী শিরিন আক্তারের।
×