ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

যমুনার স্পারে ধস

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ১৩ জুলাই ২০১৬

যমুনার স্পারে ধস

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ যমুনার পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতে নদী ভাঙ্গন বৃদ্ধি পেয়েছে। সোমবার রাতে যমুনা তীরবর্তী ধুনট উপজেলার ভা-ারবাড়ী ইউনিয়নে বানিয়াজান স্পারের ২৫ মিটার ধসে গেছে। এছাড়া সেখানকার আরেকটি স্পার হুমকির মুখে। ভাঙ্গন ও পানিবৃদ্ধির কারণে যমুনাপারের মানুষ শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। পাশের সারিয়াকান্দি উপজেলার বেশ কিছু স্থানে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ইতোমধ্যে দুই উপজেলারই বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেতরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও যমুনাপারের মানুষ জানান, দু’সপ্তাহ ধরে যমুনার পানি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। কখনও আবার একটু কমলেও পরক্ষণেই তা আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। পানি বৃদ্ধি ও কমায় দুই উপজেলার বিভিন্নস্থানে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গনও। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন জানান, রাতে ধসে যাওয়া স্থানে বালু ভর্তি জিও টেক্সের বস্তা ফেলা হচ্ছে। দুই তিন দিনের মধ্যে এটি নিরাপদ অবস্থানে আনা যাবে। স্পারে ধস দেখা দেয়ায় এলাকার লোকজনের মধ্যে ব্যাপক শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ ভাঙ্গন পরিস্থিতির উন্নতি না হলে স্পার পুরোটা ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বানিয়াজান, শিমুলবাড়ি,কয়াগাড়ি, চিথুলিয়া, চল্লিশপাড়া, মানিকপটল, ভা-ারবাড়ী এবং সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার কিছু এলাকার ফসলি জমি এবং ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে। হুমকিতে ভূঞাপুরের চার ইউনিয়ন নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল থেকে জানান, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে যমুনা নদীর তীব্র ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। অথচ ভাঙ্গনরোধে কোন কাজই করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন প্রকল্পতেই আটকে আছে যমুনা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধের কাজ। এদিকে প্রতিবছরের মতোই ভিটাবাড়িহারা হচ্ছে কয়েক হাজার একর জমি ও শতশত মানুষ। চলতি বর্ষায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি গ্রাম বিলীন হয়ে গেলেও কোন পদক্ষেপই নিচ্ছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড এমন অভিযোগ ভাঙ্গন কবলিত এলাকার বিক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের। এদিকে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে বসে আছে অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায়। উপজেলার গোবিন্দাসী, নিকরাইল, অজুর্না ও গাবসারা ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা জানান, কয়েক বছরে যমুনা নদীর ভাঙ্গনে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে হাজার হাজার পরিবার তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে সহায়সম্বলহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। ফসলি জমি হারিয়ে কৃষকরা নিঃস্ব হয়ে গেছে। নতুন করে ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে আওরও কয়েকটি গ্রাম। টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ বলেন, ভূঞাপুরে যমুনার নদী ভাঙ্গন রোধে ইতোমধ্যে কয়েকটি প্রকল্প তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বড় প্রকল্প অনুমোদন না হওয়াতে প্রকল্পগুলো ছোট ছোট আকারে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলেই কাজ শুরু করা হবে। শঙ্কায় চারঘাটের পদ্মাপারের মানুষ স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙ্গন হুমকির মধ্যে পড়েছে জেলার চারঘাটের নদীতীরবর্তী মানুষ। বিশেষ করে উপজেলার সীমান্তঘেঁষা ইউসুফপুর ইউনিয়নবাসী রয়েছেন শঙ্কায়। এদিকে নগরীর বুলনপুর এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, কয়েক বছরের নদী ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি, আবাদি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা পদ্মায় তলিয়ে যাওয়ায় ১৯৮৮ সালের দিকে নির্মাণ করা হয় পদ্মার বাঁধ। ফলে অনেকটা সস্তিতেই ছিল ইউনিয়নবাসী। সর্বশেষ গত বছরে ইউসুফপুর কৃষি উচ্চ বিদ্যালয় ও বিজিবি ক্যাম্পের কাছে বাঁধে দেখা দেয় তীব্র ভাঙ্গন। ওই বছর বাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করে লোকালয়ে। রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, ইউসুফপুর এলাকায় নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে ইতোমধ্যে টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে কাজ শুরু হবে।
×