ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বার্সিলোনাও ছাড়তে হচ্ছে মেসিকে!

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ১১ জুলাই ২০১৬

বার্সিলোনাও ছাড়তে হচ্ছে মেসিকে!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কালো সময়ই বোধ হয় পার করছেন লিওনেল মেসি। একের পর এক ধাক্কায় রীতিমতো বিধ্বস্ত, ক্লান্ত বার্সিলোনার আর্জেন্টাইন তারকা। টানা ব্যর্থতার কারণে হতাশা থেকে ইতোমধ্যে জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়েছেন বর্তমান ফিফা সেরা ফুটবলার। দিনকয়েক আগে কর ফাঁকির মামলায় ২১ মাসের কারাদ- হয়েছে বার্সা ডায়মন্ডের। এই সাজার পর মেসি বার্সিলোনাও ছেড়ে দিতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্প্যানিশ লা লিগার সভাপতি জ্যাভিয়ের টেবাস। রবিবার এক সাক্ষাতকারে এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তিনি। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের পর টানা দুটি কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিলির কাছে হারের হতাশা নিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলকেই বিদায় বলে দিয়েছেন মেসি। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই আবার নতুন ঝামেলায় জড়িয়েছেন মেসি। কর ফাঁকির দায়ে মেসি ও তার বাবাকে ২১ মাসের কারাদ-াদেশ দিয়েছেন বার্সিলোনার এক আদালত। স্পেনের আইন অনুযায়ী, মেসিকে অবশ্য হাজতবাস করতে হবে না। কিন্তু এই ঘটনার পর তিনি যে বার্সা ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, এমন আশঙ্কাও আছে স্প্যানিশ ফুটবলে। লা লিগার সভাপতি টেবাস এ প্রসঙ্গে বলেছেন, মেসি চলে যেতে পারেন, এই আশঙ্কা আমার আছে। কিন্তু আমি তাকে একটা কথাই বলতে পারি যে, আমাদের বিশ্বাস তিনি দোষী নন। আর তাকে এখানে পেয়ে আমরা খুবই খুশি। গত বুধবার স্পেনের একটি আদালত ২০০৭-২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪১ লাখ ইউরো কর ফাঁকির জন্য মেসি ও তার বাবা জর্জ মেসিকেও ২১ মাসের কারাদ- দেয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপীলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেসি। এই দুঃসময়ে অবশ্য মেসির পাশে আছে তার ক্লাব। ইউরোপের অন্যতম সেরা এই ক্লাবের সভাপতি জোসেফ মারিয়া বার্টোমেউ এক টুইটবার্তায় বলেছেন, লিও, যারা তোমার দিকে আঘাত হানছে, তারা বার্সা ও তার ইতিহাসের দিকেও আঘাত হানছে। আমরা তোমাকে শেষপর্যন্ত সমর্থন দিয়ে যাব। সব সময় একসঙ্গে!’ মেসির সমর্থকদের দুঃসময়ে তার পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানানো হয়েছে বার্সিলোনার পক্ষ থেকে। এত কিছুর পরও মেসি যে কাতালান শিবির ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেবেন না, সেই নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না। মেসির বাবা সম্প্রতি ইংল্যান্ডের শীর্ষ ক্লাব চেলসির মালিক রোমান আব্রামোভিচের সঙ্গেও দেখা করেছেন বলে জানা গেছে ইংলিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে। মেসিকে দলে ভেড়ানোর জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করতেও রাজি আছে ব্লুজরা। মেসির বার্সা ছাড়ার গুঞ্জনটা তাই থেকেই যাচ্ছে। তবে মেসির পাশে থাকার এই বিষয় নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছে বার্সা। মেসির ২১ মাসের কারাদ-ের পর তার পাশে দাঁড়ানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার শুরু করেছিল বার্সা। সেটাই এখন বুমেরাং হয়ে ফিরে আসছে তাদের দিকে। নিজেদের ওয়েবসাইটে বার্সা জানিয়েছে, এই দুঃসময়ে মেসির পাশেই আছে ক্লাব। বার্সা চায়, সমর্থকেরাও মেসির পাশে এসে দাঁড়াক। মেসি জানুক, তিনি একা নন। সে জন্যই টুইটারে মেসিকে নিয়ে ছবি বা নিজের অনুভূতি পোস্ট করার অনুরোধ করেছিল বার্সা। কিন্তু সেটি এখন হিতে বিপরীত হয়েছে। বার্সা সমর্থকেরাই এই প্রচার জন্য ক্লাবকে খোঁচা দিতে ছাড়ছেন না। অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মেসির বিষয়টা পুরোপুরি আইনগত। আদালতেই ব্যাপারটার নিষ্পত্তি হবে। আর মেসি কর ফাঁকি দিলে সেটির দায় সমর্থকেরা কেন নেবেন? পুরো বিষয়টি ‘হাস্যকর’ বলেও মন্তব্য করেছেন অনেক বার্সাভক্ত। মেসি বিপাকে থাকলেও স্বস্তির একটি খবর পেয়েছেন আরেক বার্সা তারকা নেইমার। দুর্নীতি ও প্রতারণার একটি অভিযোগ থেকে সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছেন ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক। তারকা এই ফরোয়ার্ডের বিরুদ্ধে ব্রাজিলের এক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের করা অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন স্পেনের হাই কোর্ট। ব্রাজিলের ডিআইএস নামের একটি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান নেইমারের ক্রীড়া স্বত্বের ৪০ শতাংশের মালিক ছিল। ব্রাজিল অধিনায়কের বার্সিলোনার যোগ দেয়ার মূল ট্রান্সফার ফি গোপন করায় তাদের ঠকানো হয়েছে বলে দাবি করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত প্রমাণ না থাকার কথা রায়ে উল্লেখ করে হাইকোর্টের বিচারক ডে লা মাটা নেইমারের বিরুদ্ধে করা ডিআইএসের অভিযোগ গত শুক্রবার খারিজ করে দেন। অভিযোগ থেকে নেইমার পরিত্রাণ পাওয়ায় বেজায় খুশি বার্সিলোনা। ক্লাবটির মুখপাত্র জোজেপ ভাইভস সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে বলেন, একটা অধ্যায়, যেটা অনেক ঝামেলা সৃষ্টি করেছে। কিন্তু এখন সবকিছু শেষ। ক্লাবের এই সব আইনী ব্যাপারগুলো পরিষ্কার করা প্রয়োজন। যেন সমর্থক আর সদস্যরা খেলায় মনোযোগ দিতে পারে।
×