ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠাতে নারাজ আফগানিস্তান

ইসলামাবাদের আমন্ত্রণে কাবুলের না

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ১৯ জুন ২০১৬

ইসলামাবাদের আমন্ত্রণে কাবুলের না

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের পর আলোচনার জন্য আমন্ত্রিত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ইসলামাবাদে পাঠাতে দৃশ্যত অস্বীকৃতি জানিয়েছে কাবুল। পাকিস্তান এর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে তোরখান সীমান্তে একটি গেট নির্মাণ শুরু করলে আফগানিস্তান এ সিদ্ধান্ত নেয়। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউন অনলাইনের। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ বৃহস্পতিবার টেলিফোনে আফগান নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) হানিফ আতঘারের সঙ্গে কথা বলেন এবং তোরখান সীমান্তে বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য তাকে ও আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালাহউদ্দিন রাব্বানীকে ইসলামাবাদে আমন্ত্রণ জানান। আফগান জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র তাওয়াব গোরাজাংও পাকিস্তানের ঐ আমন্ত্রণ নিশ্চিত করেন। কিন্তু তিনি এখন বলেন, আফগান সরকার পরিবর্তে উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী হেকমত খলিল কারজাইয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তানের এক উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে এক মন্তব্যে বলেছেন, কাবুলের এ উদ্যোগ দৃশ্যত এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, আফগান সরকার ইসলামাবাদের সঙ্গে কোন অর্থবহ বিষয়ে আলোচনায় আগ্রহী নয়। কর্মকর্তা তারপরও স্পষ্ট করে বলেছেন, যে কোন আফগান প্রতিনিধি দলকে পাকিস্তান স্বাগত জানাবে। তোরখান সীমান্তে দীর্ঘস্থায়ী উত্তেজনা সৃষ্টির অভিপ্রায় ইসলামাবাদের নেই। তিনি বলেন, আফগান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণের প্রতি সাড়া দেয়নি। আফগান প্রতিনিধি দলের ইসলামাবাদ সফরের তারিখ ঘোষণা করা হয়নি এবং দুই দেশ তারিখ নির্দিষ্ট করার বিষয়টির ওপর সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমন্বয় করছে। পাকিস্তান ও পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রতিবেশী আফগানিস্তানের মধ্যে ব্যস্ততম সীমান্ত পথ তোরখানে ১২ জুন থেকে সকল কর্মকা- স্থগিত করা হয়েছে। আফগান সৈন্যরা ঐ দিন কোন উস্কানি ছাড়া সীমান্তে গুলিবর্ষণ করে এবং পাকিস্তানের ১ মেজরসহ ২ নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন। পরে, দু’পক্ষই অস্ত্র বিরতি ঘোষণা করে। তারপরও সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং সেনা মোতায়েন রয়েছে এখনও। সীমান্তের দুদিকে আটকা পড়েছে হাজার হাজার লোক ও যানবাহন। এ বিরোধের মূলে রয়েছে এক নতুন সীমান্ত কৌশল যা পাকিস্তান ১ জুন থেকে বাস্তবায়ন শুরু করেছে। এ নতুন সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান এখন স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া এ গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত পথ অতিক্রম করতে দেয়া হবে না কাউকেই। কিন্তু আফগানিস্তান পাকিস্তানের এ উদ্যোগে আপত্তি জানিয়েছে এবং ১২ জুন উস্কানি ছাড়া সীমান্তে গুলিবর্ষণ করেছে। পরে, ইসলামাবাদ ও কাবুল সীমান্তে ঐ ঘটনার ব্যাপারে তাদের সংশ্লিষ্ট প্রতিবাদ জানানোর জন্য পরস্পরের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠান। আফগানিস্তান প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেছে, তাদের মতামত ছাড়া সীমান্তে কোন গেট নির্মাণ করতে পারে না পাকিস্তান। কিন্তু পাকিস্তান বলেছে, তারা সীমান্তে তাদের দিকে ৩৭ মিটারের এ গেট নির্মাণ করছে। প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা এক নীতি সম্পৃক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের আনুপ্রবেশ ঠেকাতে সন্ত্রাস বিরোধী কৌশলের অংশ হিসেবে পাকিস্তান এ নতুন সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সূচনা করেছে।
×