ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রিটেন ইইউ ছাড়লে জোটে বিভেদ সৃষ্টি হবে ॥ জার্মানির হুঁশিয়ারি

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১৭ জুন ২০১৬

ব্রিটেন ইইউ ছাড়লে  জোটে বিভেদ সৃষ্টি হবে ॥ জার্মানির হুঁশিয়ারি

আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় গণভোটে ব্রিটেন যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে এই পদক্ষেপের পরিণামে জোটের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হতে পারে। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্র্যাঙ্ক ওয়াল্টার স্টেইনমেইয়ার বুধবার বার্লিনে ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-মার্ক আয়রায়ুলতের সঙ্গে বৈঠকের এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এদিকে ব্রিটেন ইইউ ছেড়ে গেলে জনস্বার্থে সরকারী ব্যয় কমিয়ে দেয়া ও কর বাড়ানোর হুমকি দিয়েছেন সেদেশের অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবোর্ন। ইইউ সমর্থকরা ‘বিকারগ্রস্ত’ মানুষের মতো আচরণ করছে বলে ইইউ ছাড়তে আগ্রহীরা মন্তব্য করেছে। খবর বিবিসি ও টেলিগ্রাফের। স্টেইনমেইয়ার জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, এটি এক ইউরোপীয় দেশকে অন্য দেশের বিরোধী করে তুলবে। তবে যুক্তরাজ্যের ‘লিভ প্রচারকারীরা’ এই ধরনের মন্তব্যকে এর আগে আতঙ্কসৃষ্টিকারী বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইউরোপে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার জার্মানি। স্টেইনমেইয়ার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইইউ ত্যাগের পক্ষে ভোট ইউনিয়নের জন্য হবে একটি বড় ধাক্কা। ২৮ জাতি জোট ইইউতে ব্রিটেনের ইইউ থাকা না থাকা প্রশ্নে আগামী ২৩ জুন গণভোট হতে যাচ্ছে। এই গণভোট এমন এক সময় হতে চলেছে যখন ইউরোপ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে কঠিন অভিবাসী সমস্যা মোকাবেলা করছে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাত ইউরোপে সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। গণভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জনগণকে ইইউ ছাড়া বিপজ্জনক দিক সম্পর্কে সতর্ক করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে অসবোর্ন হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন যে, ইইউ ছাড়লে ব্রিটেনের বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৩ হাজার কোটি পাউন্ড। অসবোর্নের ভাষায় এটি এক ‘কৃষ্ণগহ্বর’ যা পূরণ করা কার্যত অসম্ভব। তখন জনকল্যাণমূলক খাতে ব্যয় হ্রাস ও কর বাড়ানো ছাড়া সরকারের সামনে বিকল্প কোন উপায় থাকবে না। বাজেট ঘোষণার আগে লেবার দলীয় সদস্য লর্ড ডার্লিংয়ের সঙ্গে যৌথভাবে টাইমস পত্রিকায় তিনি একথা লিখেছেন। অসবোর্ণ লেখেন যে, ঘাটতি পূরণ করতে সরকারী বরাদ্দ ছাঁটাই দেড় হাজার কোটি পাউন্ড ও সমপরিমাণ অতিরিক্ত অর্থ করারোপ করতে হবে। ব্রেক্সিট বা ব্রিটেন ইইউ ত্যাগ করলে সরকারী ব্যয় হ্রাস করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও কয়েকদিন আগে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) ও অবসরপ্রাপ্তদের পেনসনসহ সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় সরকার যেমন বছরের পর বছর বাড়িয়ে এসেছে ব্রেক্সিটের পর তা অব্যাহত রাখা সম্ভব নাও হতে পারে। ব্রেক্সিট সমর্থক কনজারভেটিভ এমপি স্টিভ বেকার বলেছেন, আমি এই ভেবে রীতিমতো আতঙ্কিত যে, চ্যান্সেলর অব এক্সচেকার (অসবোর্ন) তাদের বহু নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করার হুমকি দিয়েছেন। এই প্রতিশ্রুতিগুলোর ভিত্তিতেই তারা জনগণের ভোট পেয়েছিলেন। ইইউ ছাড়লে ব্রিটেন ইউরোপে বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করা নিজ অর্থের ওপর নিয়ন্ত্রণ পুনরায় ফিরলে সেটি তখন এনএইচএসের মতো খাতগুলোয় বিনিয়োগ করা যাবে। এদিকে বুধবার অসবোর্নের বাজেট হুঁশিয়ারিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন ৫৭ জন টোরি (কনজারভেটিভ) সদস্য। তারা অসবোর্নের প্রস্তাবিত বাজেট যেন পাস না হয় সেজন্য সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করারও ঘোষণা দিয়েছেন।
×