ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ২১ ॥ কারখানা ছুটি ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৮:০৪, ১১ জুন ২০১৬

গাজীপুরে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ২১ ॥ কারখানা ছুটি ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ বকেয়া এক মাসের (মে) বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে শুক্রবার গাজীপুরের এক পোশাক কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়া হয়েছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানায় ব্যাপক ভাংচুর করেছে। এ সময় তারা ঢাকা-গাজীপুর সড়ক অবরোধ ও কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রায় অর্ধশত রাউন্ড শর্টগানের গুলি, টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জ করেছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ইন্সপেক্টরসহ অন্ততঃ ২১জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ শুক্রবার কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে। আন্দোলনরত শ্রমিক, এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চান্দনা এলাকায় হাসান তানভীর ফ্যাশন ওয়্যারস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের গত মে মাসের বকেয়া বেতন পাওনা রয়েছে। প্রতিমাসের ১০ তারিখে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের কথা থাকলেও বৃহস্পতিবার কারখানা কর্তৃপক্ষ মে মাসের অর্ধেক বেতন শুক্রবার ও অবশিষ্ট অর্ধেক ১৬জুন পরিশোধের ঘোষণা দেয়। তবে শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে কর্তৃপক্ষ বেতনের ৭০ ভাগ শুক্রবার এবং অবশিষ্ট ৩০ ভাগ পরবর্তী সপ্তাহে পরিশোধের ঘোষণা দেয়। কিন্তু শ্রমিকরা তা মেনে না নিয়ে শুক্রবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে কারখানায় কর্মবিরতি শুরু করে। তারা বেতন-ভাতাসহ সম্পূর্ণ পাওনা শুক্রবারের মধ্যে পরিশোধের দাবিতে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কারখানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে থাকে। এ সময় তারা প্রতিমাসের ৭ তারিখে তাদের পাওনাদি পরিশোধেরও দাবি জানায়। কর্তৃপক্ষ আন্দোলনরতদের দাবি মেনে না নেয়ায় শ্রমিকরা এক পর্যায়ে কারখানার সামনে ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ ও গাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে কারখানায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করলে শ্রমিকরা পুলিশের ওপর হামলা চালায় এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশও শ্রমিকদের উপর লাঠিচার্জ করে। এতে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়া হয়। শ্রমিকদের হামলায় গাজীপুর শিল্প পুলিশের উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) মোঃ মাহফুজ আফজাল ও ইন্সপেক্টর মানিক মিয়াসহ পুলিশের অন্তত ৭ জন আহত হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ শটগানের ৪৯ রাউন্ড গুলি ও ২৩ রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় অন্তত ১৪ জন শ্রমিক ও পথচারী আহত হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কে প্রায় ১ ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হয়।
×