ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ডোপ- দুই বছর নিষিদ্ধ শারাপোভা

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ১০ জুন ২০১৬

ডোপ- দুই বছর নিষিদ্ধ শারাপোভা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত জানুয়ারিতে ডোপ পরীক্ষায় ব্যর্থ হন মারিয়া শারাপোভা। সংবাদ সম্মেলন করে গোটা বিশ্বকে নিজের মুখেই তা জানিয়েছিলেন রাশিয়ান টেনিসের এই গ্ল্যামারগার্ল। তবে না জেনেই দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ ড্রাগ ‘মেলডোনিয়াম’ সেবন করছিলেন বলে জানান তিনি। যে কারণে চলতি বছরের ১২ মার্চ টেনিস থেকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল রাশিয়ার এই তারকাকে। আর তার পূর্ণাঙ্গ শুনানি শেষে শারাপোভার ওপর দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। বুধবার শারাপোভার নিষেধাজ্ঞার কথা জানায় আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশন (আইটিএফ)। তবে বিশ্ব টেনিসের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইপিএফের এই সিদ্ধান্ত কিছুতেই মানতে পারছেন না শারাপোভা। এমন সিদ্ধান্তকে খুবই ‘রূঢ় ও অনায্য’ বলে মনে করছেন বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান তারকা। গত ২৬ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালের পর ড্রাগ পরীক্ষায় উতরাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন শারাপোভা। তার শরীরে ধরা পড়েছিল নিষিদ্ধ ড্রাগ মেলডোনিয়ামের উপস্থিতি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে দীর্ঘদিন ধরেই এই ড্রাগ ব্যবহার করছিলেন মাশা। তবে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এটিকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেছিল ওয়ার্ল্ড এ্যান্টি ডোপিং এজেন্সি (ডব্লিউএডিএ)। এটি যে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, সেটা জানতেন না বলেই দাবি করেছিলেন শারাপোভা। না জেনে নিষিদ্ধ এই ড্রাগ গ্রহণ করেছিলেন বলে শারাপোভার শান্তি অনেক কমে যাবে বলেই ধারণা করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আইটিএফ। এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না পাঁচ গ্র্যান্ডসøামের মালিক। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এখন পাল্টা আপীল করার হুমকি দিয়েছেন টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান তারকা। এ প্রসঙ্গে নিজের ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, ‘ট্রাইব্যুনালের সদস্যরা এ বিষয়ে একমত হয়েছেন যে, আমি ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল কিছু করিনি। তারপরও তারা আমাকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছেন। আমি এই অনায্য ও রূঢ় সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছি না।’ দুই বছরের এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ক্রীড়াবিষয়ক বিশেষ আদালতে আপীল করবেন বলেও জানিয়েছেন শারাপোভা, ‘কোর্ট অব অরবিট্রেশনের কাছে আমি খুব দ্রুতই আপীল করব।’ ডোপ পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ার ঘটনাটি গত জানুয়ারি মাসে ঘটেছিল। তাই সে সময় থেকেই গোনা শুরু হবে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ। আপীলের মাধ্যমে শাস্তি কমাতে না পারলে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত টেনিস সংক্রান্ত সব ধরনের কর্মকা- থেকে দূরে থাকতে হবে শারাপোভাকে। রাশিয়ান টেনিস তারকা মাশার বর্তমান বয়স ২৯। দুই বছর পর তা বেড়ে দাঁড়াবে একত্রিশে। বর্তমান সময়েই টেনিস কোর্টে নিষ্প্রভ ছিলেন তিনি। সর্বশেষ গ্র্যান্ডসøাম জিতেছিলেন দুই বছর আগে। ২০১৪ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আর কোন মেজর শিরোপা জিততে পারেননি ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার এই তারকা। তাই দুই বছরের এই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ৩৫ শিরোপা জয়ের মালিক শারাপোভা আবার টেনিস কোর্টে ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট সংশয়। টেনিসবোদ্ধারাও তার ফেরাটাকে ইতিবাচক ভঙ্গিতে দেখতে পারছেন না। টেনিস কিংবদন্তি মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা তো টুইটারে জানিয়েই দিয়েছেন শারাপোভার জন্য কোর্টে ফেরাটা খুব কঠিন হবে, ‘শারাপোভা দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছে। এখান থেকে ফেরাটা খুবই কঠিন হবে।’ তবে এখনও আশা ছাড়ছে না শারাপোভার স্পন্সরগুলোর সেরা প্রতিষ্ঠান নাইকি। এ প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে নাইকি জানায়, ‘মারিয়া শারাপোভা সবসময়ই তার অবস্থান পরিষ্কার করে এসেছেন। তার ভুলের জন্য সে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমাও চেয়েছেন। এখন তিনি তার নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপীল করবেন। আইটিএফের সিদ্ধান্ত এবং প্রকৃত ঘটনার যাচাই-বাছাই শেষে আমাদের প্রত্যাশা শারাপোভা আবারও কোর্টে ফিরবেন এবং আমরাও তার সঙ্গে একত্রে কাজ করব।’
×