ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

উপকূলীয় এলাকার উন্নয়নে ধীরগতি ॥ চসিকের লাখো লোক আতঙ্কে

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ২৫ মে ২০১৬

উপকূলীয় এলাকার উন্নয়নে ধীরগতি ॥ চসিকের লাখো লোক আতঙ্কে

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৪১ ওয়ার্ডের প্রায় ১০ ওয়ার্ডই সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায়। ’৯১-এর ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো শনিবার জোয়ারের পানির আতঙ্কে পানিবন্দী হওয়ার আশঙ্কা করেছিল এসব ওয়ার্ডের জনগণ। ’৯১-এর পর দীর্ঘ প্রায় ২৬ বছর পার হলেও শঙ্কামুক্ত হয়নি ওই সব এলাকার এক লাখেরও বেশি মানুষ। অভিযোগ রয়েছে, সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বেড়িবাঁধ সংস্কার ও রিং রোড প্রকল্পের কথা বলেই পার করে দিয়েছে ২৬ বছর। উন্নয়ন এখনও চোখে লাগার মতো নয়। অভিযোগ রয়েছে, চসিকের আওতাধীন ৪১টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে সমুদ্রের জোয়ারের পানি প্রবেশের ঘটনা শুরু হয়েছে সেই ১৯৯১ সাল থেকেই। নগরীর উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলো অনেকটা হাতগুটিয়ে বসে আছে। বিশেষ করে উপকূলবর্তী এলাকাগুলোর মানুষের জীবননাশের হুমকি থাকে ঘূর্ণিঝড়প্রবণ সময়ে। দীর্ঘ প্রায় ২৬ বছরেও নগরীর নেভাল একাডেমি থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধ সংস্কার বা নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। এদিকে সাগরপাড় এলাকায় চলছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের রিং রোড উন্নয়ন প্রকল্প। এ উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ শেষ হতে আরও সময় লাগবে প্রায় দেড় বছর। সমুদ্র উপকূল এলাকায় পর্যাপ্ত সাইক্লোন সেন্টার নেই। এমনকি সাইক্লোন প্রতিরোধে একমাত্র পতেঙ্গার নেভাল এলাকা ছাড়া আর কোথাও কোন প্রতিরোধ দেয়াল নেই। নগরীর চাক্তাই খালসহ বিভিন্ন বড় বড় খালগুলোর মুখে স্লুইচ গেট নির্মাণের প্রয়োজন থাকলেও তা এখনও বাস্তবায়ন করার মতো পরিকল্পনা নেই। নগরীর তিনটি থানা এলাকায় এখনও অনেক পাহাড়ের ক্ষয় রোধে রিটেনিং দেয়াল না থাকায় পাহাড়ের মাটি ধসের ঘটনা ঘটছে। চসিকের আওতাধীন উপকূলীয় অঞ্চলের ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ৪১, ৪০, ৩৯, ৩৮, ৩৭, ৩৬, ৩৫, ৩৪, ৩৩, ২৭, ১৭, ১৮, ১৯, ১০ ও ১১নং ওয়ার্ড। এসব ওয়ার্ডে লক্ষাধিক লোকের বসবাস। দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে এসব এলাকার বাসিন্দাদের জলোচ্ছ্বাসে বন্দী হওয়ার আশঙ্কাসহ প্রাণহানির ভীতিতে থাকতে হয়। এদিকে চট্টগ্রামে জাইকার অর্থায়নে ও সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে এয়ারপোর্ট রোডসহ পর্যটন স্পট পতেঙ্গার উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার সকালে এ কাজের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। এ উন্নয়নে রয়েছে সল্ট খোলা থেকে সিমেন্ট ক্রসিং হয়ে সী-বীচ রোড। আবার এয়ারপোর্ট ডাইভারশন রোড থেকে বাটারফ্লাই পার্ক পর্যন্ত মোট প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার রোড দুটির উন্নয়ন কাজ শেষ হবে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে। জাইকা’র অর্থায়নে এ উন্নয়ন প্রকল্পে প্রায় ২৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয় হবে বলে জানিয়েছে কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ। এ উপলক্ষে শনিবার সকালে আয়োজিত সমাবেশে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ২০১৯ সালের জুন মাসের মধ্যে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের সকল সড়ক, রাস্তা ও বাই লেইনগুলোকে শতভাগ উন্নয়ন কাজ শেষ করা হবে। এ সময় তিনি আরও বলেন, চসিকের উন্নয়ন কাজের জন্য অর্থায়ন করছে জাইকা, এডিবি ও কর্পোরেশনের রাজস্বসহ বিভিন্ন খাত।
×