ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন গান থ্রি চিয়ার্স ফর পাঠান-হিটার, ওয়ে...ওয়ে..ওয়ে

প্রকাশিত: ১৯:৫১, ৪ মে ২০১৬

নতুন গান থ্রি চিয়ার্স ফর পাঠান-হিটার, ওয়ে...ওয়ে..ওয়ে

অনলাইন ডেস্ক ॥ থ্রি চিয়ার্স ফর পাঠান-হিটার, ওয়ে...ওয়ে..ওয়ে...! গলার শিরা ফুলিয়ে চেঁচাচ্ছেন রবিন উথাপ্পা, চেঁচিয়েই যাচ্ছেন। আশপাশ থেকে উড়ে আসার মুহুর্মুহু শিসের তীব্রতা এতটাই যে, শুনলে মনে হবে কেকেআর মালিকের ব্লকবাস্টার সিনেমার ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো চলছে! ওয়াসিম আক্রম-জাক কালিসের মতো কিংবদন্তিরাও তো দেখা যাচ্ছে নাইট-ফোবিয়ায় আক্রান্ত! চিন্নাস্বামীর বীরকে দেখামাত্র হাততালির ঝড় তুলে দিচ্ছেন। আর তিনি, সিনিয়র পাঠান কেমন সলজ্জ। ব্যাটটা তুলে নাগাড়ে ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বলে যাচ্ছেন প্রতিসম্মান প্রদর্শনে। বেঙ্গালুরু রাতের পরের প্রহর। বিরাট কোহালির টিমের বিরুদ্ধে অবিশ্বাস্য জয় তুলে নেওয়ার উৎসবের প্রহর। পাঠান টিম রুমে ঢোকামাত্র ‘কেয়া বাত হ্যায়’, ‘কেয়া বাত হ্যায়’, কেক কাটা। কিছু বাকি থাকল না। পার্টিটা সোমবার রাতেই যে শেষ হয়ে গেল, এমনও নয়। বরং মঙ্গলবার শহরে কেকেআর টিম হোটেলে গিয়ে মনে হল, পার্টি চলছে এখনও। চলবে এখনও কিছু দিন। আকর্ষণের সবচেয়ে বড় বিষয়বস্তু, কেকেআর মনোভাব। পাঠান পাওয়ার আর মাসল রাসেল মিলে যেন গোটা টিমের থিমটাকেই পাল্টে দিয়েছেন। একটা আরসিবি ম্যাচ জেতার চেয়ে যা অনেক, অনেক বড়। অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। বুধবার ইডেনে যে একটা ম্যাচ আছে, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল-ডেভিড মিলারদের কিংগস ইলেভেন পঞ্জাব বলে যে একটা টিম সামনে অপেক্ষা করছে, কেকেআরকে দেখলে বোঝা যাবে? নাহ্, যাবে না। বরং মনে হবে, বুধবারের ইডেনে দু’টো নয়, মাত্র একটা টিমই নামবে এবং যেন অনায়াস ওয়াকওভার নিয়ে বেরিয়ে যাবে! কোন টিম? কেন, কেকেআর! এ দিন সন্ধের ইডেনে প্রথাগত সাংবাদিক সম্মেলন করতে এসে পঞ্জাব পেসার কাইল অ্যাবট বলছিলেন যে, টুর্নামেন্টের এমন গুরুত্বের সময়ে ম্যাড ম্যাক্স, কিলার মিলারের ফর্মে ফেরাটা খুব দরকার। কিন্তু তাই বলে আইপিএল শেষ, এখনই পঞ্জাব তা মনে করে না। দক্ষিণ আফ্রিকা পেসার বললেন বটে, কিন্তু সাংবাদিক ছাড়া আর সে সব শুনল কে? শুনবেও বা কে? প্রায় কাছাকাছি সময়ে তো কফিশপে বসে অন্য জন যা বলে গেলেন, শুনলে নাইট-ভক্তদের হাসি আরও চওড়া হওয়ার কথা। ‘‘আরে, বাইরের ম্যাচে আমরা যখন এত ভাল খেলেছি, তখন ঘরের মাঠে তো আরও ভাল খেলব। ঈশ্বর সঙ্গে থাকলে বুধবারও জিতব,’’ টিম হোটেলের কফিশপে বসে বলছিলেন ইউসুফ। যাঁকে অসম্ভব সশ্রদ্ধ শোনাল কেকেআরের দুই কোচ নিয়ে। জাক কালিস আর সাইমন কাটিচকে বারবার ধন্যবাদ দিচ্ছিলেন। বলছিলেন, ‘‘আমাকে দশ ওভার সময় দেওয়ার জন্য ওঁদের ধন্যবাদ। ওঁরা আমাকে বলেছিলেন যে, তিন চারটে ওভার দেখে নাও। তার পর বড় শটে যাও। ওই সমর্থনটা না পেলে এমন ইনিংস খেলতে পারতাম না।’’ ইউসুফ খুশি এমন একটা ম্যাজিক ইনিংস খেলতে পেরে। ইউসুফ খুশি, আইপিএল মরসুম শুরুতে ভক্তদের দেওয়া বড় রানের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পেরে। বলেও দিলেন, ‘‘আমার প্রিয় গানটা জানেন তো? যো ওয়াদা কিয়া উয়ো নিভানা পড়েগা! কথা রাখলাম কিন্তু।’’ কথা রেখেছেন ইউসুফ। খেলেছেন এমন একটা ইনিংস, যার সংক্রমণে গোটা টিমের মধ্যে একটা অকুতোভয় মেজাজ যেন ঢুকে পড়েছে। কলকাতাবাসী অবশ্য শুধু পাঠানের ২৯ বলে অপরাজিত ৬০ নয়, মুগ্ধ তাঁর মনোভাবে। মুগ্ধ তাঁর ভয়ডরহীন ক্রিকেটে। টিম এর পর চার্জড হবে না কেন? কেয়ার-ফ্রি মনোভাব দেখাবে না কেন? রবি উথাপ্পা-সূর্য যাদবরা এ দিন শহরে ঢুকে শপিং মলে চলে গেলেন। সুনীল নারিনকেও দেখা গেল সস্ত্রীক বেরোচ্ছেন। গৌতম গম্ভীর, তাঁকে দেখেও মনে হল না জরিমানার কোনও প্রভাব পড়েছে। সত্যি তো, সোমবার রাতের পর ও সব কে মনে রাখে? এত দিন টানা অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে হয়েছে। এ বার পরপর হোম। যেখানে পছন্দের ঘাসহীন উইকেটও পাওয়া যাচ্ছে। টিম বরং এখন ক্রিকেটের বাইরের উপভোগের পৃথিবীকেও চেখে দেখতে চাইছে। টুইটারে এক-এক জনকে এক-এক রকম ‘টাস্ক’ দেওয়া হচ্ছে। জেসন হোল্ডারকে বলা হচ্ছে, একটা বলিউডি গান গেয়ে শোনাও। মর্কেলকে বলা হচ্ছে ব্যাটসম্যানকে ভয় পাইয়ে দেওয়া মুখচোখ করো। চিন্নাস্বামী রাতের পর একটা গানও তো বেঁধে ফেলেছে টিম। যা ব্যাখ্যা করবে আগামীর থিম, যা গেয়েছেন ক্রিস লিন। ‘পুট ইওর হ্যান্ড অন ইওর হার্ট অ্যান্ড সিংগ/ প্লেয়িং ফর কেকেআর মিনস এভরিথিং।’ পঞ্জাবের উপর কোন ঝড় আসছে বোঝা গেল? সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×