ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

দুই সহোদরসহ চার রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড, আমৃত্যু কারাদণ্ড ১

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৪ মে ২০১৬

দুই সহোদরসহ চার রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড, আমৃত্যু কারাদণ্ড ১

বিকাশ দত্ত ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ, নির্যাতনের, মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের ৭ অভিযোগে কিশোরগঞ্জের দুই সহোদর এ্যাডভোকেট শামসুদ্দিন আহম্মেদ ও ক্যাপ্টেন (অব) নাসির উদ্দিন আহম্মেদ সহ চার রাজাকারকে মৃত্যুদ- ও এক রাজাকারকে আমৃত্যু কারাদ- প্রদান করেছেন ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করেছেন। ট্রাইব্যুনাল বলেন, মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে (ফায়ারিং স্কোয়াড) দ- কার্যকর করা যাবে। পাশাপাশি পলাতকদের গ্রেফতারে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশ মহাপরিদর্শককে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে ইন্টারপোলের সহযোগিতা নিতেও বলা হয়। প্রসিকিউশন পক্ষ জন্মদিনে শহীদ জননী কে উৎসর্গ করেছে যুদ্ধাপরাধীর দ-ের রায়। পাঁচ যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ফাঁসির আসামি কিশোরগঞ্জের আইনজীবী শামসুদ্দিন আহম্মেদই কেবল রায়ের সময় কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। শামসুদ্দিনের ভাই সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মোঃ নাসিরউদ্দিন আহমেদ, রাজাকার কমান্ডার গাজী আব্দুল মান্নান, আজহারুল ইসলাম ও হাফিজউদ্দিন মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন। এদের মধ্যে পলাতক আজহারুলকে আমৃত্যু কারাদ- দিয়েছে আদালত; বাকিদের দেয়া হয়েছে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- অথবা গুলির মাধ্যমে মৃত্যুদ- কার্যকর করা। একাত্তরে এই পাঁচ আসামি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর সহযোগিতায় গঠিত রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এটি ২৩তম রায়। রায়কে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও সুপ্রীমকোর্টের সমস্ত প্রবেশ দ্বারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সকাল থেকেই সুপ্রীমকোর্টের সব প্রবেশ পথে নেয়া হয় কড়া নিরাপত্তা। আদালতে প্রবেশের সময় সবার পরিচয়পত্র দেখা হয়। সন্দেহ হলে করা হয় তল্লাশি। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় বিচারকরা আদালত কক্ষে আসার আগে শামসুদ্দিনকে হাজতখানা থেকে নিয়ে কাঠগড়ায় বসানো হয়। পৌনে ১১টার দিকে রায় পড়া শুরুর কিছুক্ষণ পর পর্যন্ত তিনি বসেই ছিলেন। তবে ১১টার কাছাকাছি সময়ে তিনি চেয়ার থেকে উঠে কাঠগড়ার রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। রায় শেষ হওয়া পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বিরতি দিয়ে তিনি এভাবে দাঁড়ান। রায় শেষ হওয়ার সময়ও তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন। আদালতে তার পরিবারের কয়েক সদস্যকেও দেখা যায়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রায় ঘোষণা শেষ হলে তিনি এ কথা বলতে শুরু করেন। তবে তার গলার স্বর ছিল নিম্নমুখী। রায় ঘোষণার পর আদালতে উপস্থিত একমাত্র আসামি শামসুদ্দিন বলেন, ‘ফলস উইটনেস, ফলস জাজমেন্ট...। বানানো সাক্ষীর বিচার।’ রায় ঘোষণার পর প্রসিকিউশন প্েক্ষর প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন বলেন আমরা ৭টি অভিযোগই প্রমাণ করতে পেরেছি। আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদ- হয়েছে। আমরা এ রায়ে খুশি। ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল রায় প্রদান করেছেন, আর কাকতালীয়ভাবে এদিনই শহীদ জননী জাহানারা ইমামের জন্মবার্ষিকী। তাই এই রায় তাকেই উৎসর্গ করছি। প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন বলেন, ‘আমরা মনে করি এই পাঁচ রাজাকারের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের আজকের রায় শহীদ জননীর আত্মাকে শাস্তি দেবে। এ রায় আমাদের বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।’ অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী মাসুদ রানা বলেন, আমরা এ রায়ে অখুশি। আমরা মক্কেলের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তীতে আপীলের ব্যবস্থা করব। পলাতক আসামিদের পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট আব্দুস শুকুর মিয়া। তিনি বলেন আমার মক্কেল আদালত উপস্থিত থাকলে এমন রায় হতো না। ট্রাইব্যুনাল আসামি ৫ জনকে সাজা দিয়েছেন। এর মধ্যে এ মামলায় প্রসিকিউশনের আনা সাতটি অভিযোগের মধ্যে ১, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় পাঁচ যুদ্ধাপরাধীর সবাই ছিলেন আসামি। এছাড়া ২ নম্বর অভিযোগে হত্যার ঘটনায় নাসির; ৫ নম্বর অভিযোগে হত্যার ঘটনায় শামসুদ্দিন; ৬ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যা এবং ৭ নম্বর অভিযোগে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মান্নানকে আসামি করা হয়। ট্রাইব্যুনালের ২৩তম রায় ॥ ২০১০ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর এ পর্যন্ত ২২টি মামলার রায় হয়েছে। তার মধ্যে ৩১ জনকে বিভিন্ন দ- প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০ জনের মৃত্যুদ-, এক জনের যাবজ্জীবন, একজনের ৯০ বছরের কারাদ- এবং ৯ জনকে আমৃত্যু কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে পতালক আছে ৯ জন। যাদের দ- দেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন, জামায়াতের সাবেক রুকন বাচ্চু রাজাকার হিসেবে পরিচিত আবুল কালাম আজাদ (মৃত্যুদ-), জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লা (আমৃত্যু কারাদ- (আপীলে মৃত্যুদ-, পরবর্তীতে রায় কার্যকর), জামায়াতের নায়েবে আমির দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী (মৃত্যুদ-) আপীলে আমৃত্যু কারাদ-, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান (মৃত্যুদ-) আপীল বিভাগেও মৃত্যুদ- বহাল, পরবর্তীতে রায় কার্যকর। জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম (৯০ বছরের কারাদ-) অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহাসান মুহাম্মদ মুজাহিদ (মৃত্যুদ-), পরে তার রায় কার্যকর। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (মৃত্যুদ-), পরে তার দ- কার্যকর। বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আলীম (আমৃত্যু করাদ-) অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ, বদর বাহিনীর নেতা চৌধুরী মাঈনুদ্দিন এবং মোঃ আশরাফুজ্জামান খান (মৃত্যুদ-), জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী (মৃত্যুদ-), জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর কাশেম আলী (মৃত্যুদন্ড), বিএনপি নেতা নগরকান্দা পৌর মেয়র জাহিদ হোসেন খোকন ওরফে খোকন রাজাকার (মৃত্যদ-), আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত মোঃ মোবারক হোসেন (মৃত্যুদ-), জাতীয় পাটির সাবেক মন্ত্রী কাযসার বাহিনীর প্রধান সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার (মৃত্যুদ-), জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজাহারুল ইসলাম (মৃত্যুদ-) জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুস সুবহান (মৃত্যুদ-) ও জাতীয় পাটির আব্দুল জব্বার (আমৃত্যু কারাদ-)। মাহিদুর রহমান এবং আফসার হোসেন চুটু (আমৃত্যু কারাদ-), হাসান আলী (মৃত্যুদ-), ফোরকান মল্লিক (মৃত্যুদ-), কাসাই সিরাজকে মৃত্যুদ- ও খান আকরামকে আমৃত্যু কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। সর্বশেষ আতাউর রহমান ননি ও ওবায়দুল হক তাহেরকে মৃত্যুদ- প্রদান করা হয়েছে। আর সর্বশেষ ৩ মে কিশোরগজ্ঞের ৫ জনের মধ্যে একজনকে আমৃত্যু ও ৪ জনকে মৃত্যুদ- প্রদান করা হয়েছে। যত অভিযোগ ॥ কিশোরগজ্ঞের ৫ রাজাকারের বিরুদ্ধে ৭টি অভিযোগ আনা হয়। সে গুলো হলো : অভিযোগ ১ : ১৯৭১ সালের ১২ নবেম্বর দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার বিদ্যানগর ও আয়লা গ্রামের মোট আট জনকে হত্যা ও একজনকে আহত করা। অভিযোগ ২ : ১৩ নবেম্বর আয়লা গ্রামের মিয়া হোসেনকে হত্যা। অভিযোগ ৩ : একই উপজেলার মোঃ আব্দুল গফুরকে অপহরণ করে ২৬ সেপ্টেম্বর খুদির জঙ্গল ব্রিজে নিয়ে হত্যা। অভিযোগ ৪ : ২৩ আগস্ট করিমগঞ্জ উপজেলা ডাকবাংলোতে শান্তি কমিটির কার্যালয়ে আতকাপাড়া গ্রামে মোঃ ফজলুর রহমান মাস্টারকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যা। অভিযোগ ৫ : ৭ সেপ্টেম্বর রামনগর গ্রামের পরেশ চন্দ্র সরকারকে হত্যা। অভিযোগ ৬ : ২৫ আগস্ট পূর্ব নবাইদ কালিপুর গ্রামে আবু বক্কর সিদ্দিক ও রুপালিকে অপহরণ করে নির্যাতন ও হত্যা। অভিযোগ ৭ : ১৫ সেপ্টেম্বর আতকাপাড়া গ্রামে আক্রমণ করে ২০-২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ। অভিযুক্তদের পরিচয় ॥ কিশোরগঞ্জ জেলা বারের সদস্য শামসুদ্দিন আহমেদের জন্ম ১৯৫৬ সালে। বাড়ি করিমগঞ্জ উপজেলার করিমগঞ্জ মধ্যপাড়া (ডুলিপাড়া) গ্রামে। একাত্তরে তিনি রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়ে করিমগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত হন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বেশ কিছুদিন পলাতক থেকে আবারও সমাজের মূল ধারায় মিশে যান শামসুদ্দিন। ১৯৮২ সালে বিএ ডিগ্রী নেয়ার পর ১৯৯১ সালে এলএলবি করেন। তার চার বছর পর তিনি ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএড ডিগ্রী পান। এই লেখাপড়ার পাশাপাশি ১৯৮৫ সাল থেকেই নিয়ামতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কাজ করে আসছিলেন একাত্তরের এই যুদ্ধাপরাধী। তামোনি ভূইয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে ২০০৪ সালে তিনি অবসরে যান। শিক্ষকতা থেকে অবসরের পর শামসুদ্দিন ময়মনসিংহ জেলা বারে এ্যাডভোকেট হিসেবে এনরোলমেন্ট পান। নাসিরউদ্দিন আহমেদ ॥ শামসুদ্দিনের বড় ভাই নাসিরউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সাবেক ক্যাপ্টেন। স্কুলের রেকর্ড অনুযায়ী, তার জন্ম ১৯৫৪ সালে। প্রসিকিউশনের তথ্য অনুযায়ী, জঙ্গলবাড়ি হাই স্কুল থেকে নাসিরউদ্দিনের এসএসসি পাসের পর পরই দেশে শুরু হয় স্বাধীনতার যুদ্ধ। আর তিনি তখন যোগ দেন রাজাকারের দলে। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, শামসুদ্দিন ও নাসিরউদ্দিন দুই ভাই সে সময় ট্রেইনিং নেন রাজাকার কমান্ডার গাজী আব্দুল মান্নানের কাছ থেকে। নানা মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটিয়ে ছোট ভাইয়ের মতো স্বাধীনতার পর তিনিও আত্মগোপনে যান। পরে একময় স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন একাত্তরের রাজাকার নাসিরউদ্দিন। এ কারণে এলাকার মানুষ তাকে ক্যাপ্টেন নাসির নামেও চেনে। ‘অনৈতিক কর্মকা-ের’ অভিযোগে ২০০২ সালে সেনাবাহিনী থেকে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। গাজী আব্দুল মান্নান ॥ গাজী আব্দুল মান্নানের জন্ম ১৯২৭ সালে করিমগঞ্জের চরপাড়া গ্রামে। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করা এই মান্নানই একাত্তরে স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার বনে যান এবং রীতিমতো সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। সহযোগীদের নিয়ে তিনি নিজের এলাকায় নানা মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান বলে আদালতের নথিতে উঠে এসেছে। হাফিজউদ্দিন ॥ কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার খুদির জঙ্গল গ্রামের হাফিজউদ্দিনের জন্ম ১৯৪৯ সালে। লেখাপড়া করেছেন মাদ্রাসায়। একাত্তরে তিনিও রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতায় নানা যুদ্ধাপরাধ ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। আজহারুল ইসলাম ॥ আজহারুল ইসলামের জন্ম ১৯৫৬ সালে, করিমগঞ্জের হাইধনখালি গ্রামে। হাফিজউদ্দিনের মতো তিনিও মাদ্রাসায় পড়েছেন এবং একাত্তরে রাজাকারের দলে যোগ দিয়ে যুদ্ধাপরাধে যুক্ত হয়েছেন বলে প্রসিকিউশনের তথ্য। এক নজরে মামলা ॥ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ২০১৩ সালের ৬ জুন এই পাঁচ যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এক বছর পাঁচ মাস ১৮ দিন পর গতবছর ২৪ নবেম্বর তদন্ত কাজ শেষ হয়। ২০১৪ সালের ২৭ নবেম্বর ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার তারেরঘাট সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল শামসুদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতার করে। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ২০১৫ সালের ১০ মে এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করলে তিন দিন পর আদালত তা আমলে নেয়। অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর পাঁচ আসামির যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করে আদালত। প্রসিকিউশন পক্ষে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ২৫ জন এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। আসামিপক্ষে কোন সাক্ষী ছিল না। শুনানিতে প্রসিকিউশনপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামি শামসুদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম মাসুদ রানা। পলাতক অপর চারজনের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান শুনানিতে অংশ নেন। প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে গত ১১ এপ্রিল আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে।
×