ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রমিকদের উন্নয়নে কাজ করছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৩:২৪, ১ মে ২০১৬

শ্রমিকদের উন্নয়নে কাজ করছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ শ্রমিকদের নিয়ে সকলের মাঝে দায়িত্ববোধ থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার বিকাল ৪টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত মে দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘শ্রমিকদের কল্যাণ করা আমাদের দায়িত্ব। বাংলাদেশকে উন্নত করতে হলে কল-কারখানা করার পাশাপাশি শ্রমিকদের অধিকারও প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কারণ তাদের শ্রম-ঘাম দিয়ে উৎপাদন হয়। যাদের ত্যাগের বিনিময়ে উৎপাদন তাদের উন্নয়ন হলেই দেশ উন্নত হবে। শ্রমিকদেরও কর্তব্য আছে যেন কল-কারখানাগুলো সঠিক ভাবে চলে। অনেক কল-কারখানা আছে, যেগুলোর যন্ত্রপাতি পুরনো কাজ চলে না। সেগুলোর বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি।’ শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘উৎপাদন বাড়াতে হলে মালিক-শ্রমিকের একটা সুসম্পর্ক থাকা উচিত। মালিকদের ভাবা উচিত কাজের সুন্দর পরিবেশ থাকলে শ্রমিকরা ভালো কাজ করবে। আর শ্রমিকদেরও ভাবতে হবে যে কারখানার মাধ্যমে আপনাদের রুটি-রুজি নিশ্চিত হচ্ছে। সেই কারখানার যেন ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে আপনাদের সজাগ থাকতে হবে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘মালিকরা যত্রতত্র জমি কিনে শিল্প গড়ে তুলবেন না। আমরা যে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি সেখানে শিল্প গড়লে গ্যাস পানি সকল বরাদ্দ পাবেন। কৃষি জমি যাতে নষ্ট না হয়। ছোট্ট দেশে শিল্প ও কৃষি দুটোই থাকতে হবে। আমরা অন্তত ১শ টি শিল্প অঞ্চল গড়ে তুলবে, যেখানে মালিকরা শিল্প গড়ে তুলতে পারবেন।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার যে খরচ প্রাথমিক শিক্ষার অবৈতনিক জাতির পিতা করে গিয়েছেন। প্রি-প্রাইমারিক থেকে উচ্চ শিক্ষা অথাৎ কেউ যদি পিএসডি করতে চায় তাহলে আমরা উপবৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। টঙ্গী-নারায়ণগঞ্জে শ্রমিকদের জন্য দুটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। সারা দেশের শ্রমিকরা ট্রেনিং পাবে।’ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিলো, শ্রমিকরা ন্যায্য মূল্যার জন্য আন্দোলন করেছিলো। রমজান মাস সংযমের মাস। কথা আছে, একটা পিপড়াকেও মারতে হয় না। গুলি করে হত্যা করা হয়েছিলো। মজুরী তো দূরের কথা গুলি খেয়ে লাশ হয়ে আপনজনের কাছে ফিরেছে।’ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে আসিনি। আমরা কল্যাণ করতে এসেছি। জনগণের যে কল্যাণ সেটার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা পরিকল্পিতভাবে কাজ করছি বলেই উন্নয়ন হচ্ছে। কাজেই এর ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে।’ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রবাসে যে শ্রমিকরা যান তাদের কল্যাণের জন্য আমরা কাজ করছি। প্রবাসে থেকে তারা মজুরি পাচ্ছে কি না, কাজ পাচ্ছে কি না সেগুলোর বিষয়ে আমাদের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় কাজ করছে।’ ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বহু শিল্প-কলকারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। লোকসান হয় তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কোন কিছু লোকসান হলে তা লাভজনক করার বিষয়ে ভাবতে হবে। মাথা ব্যাথার জন্য মাথা কেটে ফেলা হবে-এই ধরণের বিভ্রান্তিকর বিষয় পচাত্তরের পর বাংলাদেশে দেখেছি।’ বলেও বলেন আওয়ামীলীগ সভানেত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিজয়ী জাতি তাই মাথা উচু করে চলতে চাই। মাথা উচু করতে চলতে হলে একযোগে কাজ করতে হবে। আসুন আমরা এক সঙ্গে কাজ করি, জাতির পিতার ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলি। দুনিয়ার মজদুরকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন শেখ হাসিনা।
×