ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ঠিকাদারি নিয়ে দ্বন্দ্ব

আওয়ামী লীগ নেতা টুকু হত্যা পরিকল্পিত-দাবি পরিবারের

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৬ এপ্রিল ২০১৬

আওয়ামী লীগ নেতা টুকু হত্যা পরিকল্পিত-দাবি পরিবারের

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও রাজশাহী চেম্বারের সাবেক প্রশাসক, ব্যবসায়ী জিয়াউল হক টুকুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষে দাবি করা হয়েছে। হত্যার পর কৌশলে পালিয়ে যাওয়া নয়ন নামে ঢাকার যুবক ফোনে হত্যাকা-ের কথা স্বীকার করলেও গত ২৪ ঘণ্টায় তার হদিস পায়নি পুলিশ। ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরেই টুকুকে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছেন টুকুর ঘনিষ্ঠরা। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আরও দুইজন পলাতক রয়েছে। তবে এ ঘটনায় টুকুর স্থানীয় দুই বন্ধু রবিউল ইসলাম ও জসিম উদ্দিনকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এদিকে পরিকল্পিত হত্যাকা-ের অভিযোগ এনে নিহত টুকুর স্ত্রী শামসুন্নাহার লতা সোমবার বোয়ালিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ব্যবসায়িক বন্ধু ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নয়ন, রাজশাহী নগরীর তরিকুল ইসলাম ও অজ্ঞাত একজনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে এ হত্যাকা- নিয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, রাজশাহীর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) একটি কাজ পায় আওয়ামী লীগ নেতা টুকুর মেসার্স প্রমিনেন্ট কনস্ট্রাকশন। এ কাজে তার সঙ্গে পার্টনার হিসেবে যুক্ত হয় ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ কাজ নিয়ে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে টুকুর দেনা-পাওনা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। ১০ দিন আগে টুকু ঢাকায় গিয়ে তার পাওনা পরিশোধের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল। এরপর দুই দিন আগে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে নয়নকে রাজশাহীতে পাঠানো হয়। দুই দিন থেকে নয়ন রাজশাহীতেই অবস্থান করছিল। রবিবার দুপুরে একসঙ্গে তারা টুকুর চেম্বারে বসে দুপুরের খাবারও খায়। সেখানেই টেবিলে থাকা টুকুর লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে পেছন থেকে তাকে গুলি করা হয়। এ সময় অপর দুই বন্ধু জসিম ও রবিউল বাইরে থাকলেও তরিকুল ও অজ্ঞাত একজন চেম্বারেই ছিল। সেখানে নাটক সাজিয়ে প্রচার করে টুকু তার পিস্তল পরিষ্কার করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়। তাৎক্ষণিক এ তথ্য সাংবাদিকদেরও জানানো হয়। তবে সন্ধ্যার পর হত্যাকা-ের রহস্য বেরিয়ে আসে। এরপর থেকেই আত্মগোপনে চলে যায় ঢাকার যুবক নয়ন, স্থানীয় তরিকুল ও অজ্ঞাত একজন। টুকুর ঘনিষ্ঠরা জানান, নয়ন পেশাদার খুনী। ব্যবসায়িক হিসাবনিকাশ নিয়েই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এদিকে জিয়াউল হক টুকুকে পেছন থেকে গুলি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের (রামেক) ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ এনামুল হক। ময়নাতদন্ত শেষে তিনি জানান, টুকুকে পেছন থেকে গুলি করা হয়েছে। পিঠের দিকে যে ফুটো আছে তা তুলনামূলক ছোট। এছাড়াও বুকের হাড়ের ভেতরের অংশে গুলির জখম পাওয়া গেছে। এ থেকে বিষয়টি বোঝা যায় যে, টুকুকে পিঠের সাইড থেকে গুলি করা হয়েছে। গুলি হাড়ের ভেতরের অংশ জখম করে অল্প উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। এছাড়াও গুলিতে টুকুর ফুসফুসের নিচের অংশ জখম হয়।
×