জাপনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রাণহানি ও ব্যাপক হতাহতের মধ্যেই ফের কয়েক দফা ভূমিকম্প হয়েছে। যাতে আরও ২৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শনিবার মধ্যরাতে কুমামতো প্রদেশে ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এ নিয়ে গত তিন দিনে সেখানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৭-এ দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া ভূমিকম্পে আহত প্রায় দুই হাজার মানুষকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। খবর এনএইচকে, বিবিসি ও এএফপির।
ভূমিকম্পদুর্গত এলাকায় জরুরী অবস্থা ঘোষণা করে প্রায় ৭০ হাজার লোককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ভূকম্পনপ্রবণ জাপানের মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়াশিদা সুগা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দক্ষতার সঙ্গে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা করছি। প্রায় দু’লাখ লোক বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। আমরা সবাইকে বলেছি, নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে।
প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন, এটি নিঃসন্দেহে ২০১১ সালের পর বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা ২৫ মিনিটে (জিএমটি সময় শুক্রবার ১৫টা ২৫ মিনিট) রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৩ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানার পর রাতভর অনেক মানুষ খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেয়। এর ২০ মিনিট পরই দুই দফায় ৫ দশমিক ৮ ও ৫ দশমিক ৭ মাত্রার দুটি ভূকম্পন অনুভূত হয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে।
মধ্যরাতে দু’দফা ভূমিকম্পের পর জাপানের আবহাওয়া অধিদফতর শনিবার ভোর পর্যন্ত সুনামি সতর্কতা জারি করলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়। ভূমিকম্পের পর কুমামতো বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ট্রেন চলাচল। বাসিন্দাদের স্থানীয় স্কুল, কিন্ডার গার্টেন ও উপাসনালয়গুলোতে স্থান করে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলছেন, শুক্রবারের রাতের ভূমিকম্পে কয়েকটি বাড়ি ধসে পড়েছে। রাস্তাঘাটও ভেঙ্গে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কুমামতো শহরের মাইশিতে। ভূমিকম্পের পর থেকে বিদ্যুত ও গ্যাসবিহীন এই অঞ্চল।
ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতায় এক হাজার ৭ জন বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসডিএফ) সদস্য, এক হাজার ৯২০ পুলিশ ও দুই হাজার ৯৩৭ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী অংশ নেয়। এর আগে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমামতো ও কিয়েশু প্রদেশে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পে বিপুলসংখ্যক বাড়িঘর ধসে পড়ে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তাঘাট। তাতে অন্তত দশজন নিহত এবং বহু লোক আহত হন।