ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আবেদন খারিজ

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৮ এপ্রিল ২০১৬

আবেদন খারিজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে প্রধান আসামি খালেদা জিয়ার দায়ের করা মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি মাহমুদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন। অন্যদিকে একই মামলায় আগামী ১৭ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিচারিক আদালত। এছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বাদীর পরবর্তী জেরার জন্য আগামী ২১ এপ্রিল দিন ঠিক করেছেন একই বিচারক। মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ ॥ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯ মার্চ খালেদার পক্ষে রিটটি দায়ের করেন তার আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন। পরে ২৩ ও ২৪ তারিখে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ব্যস্ততা দেখিয়ে সময় চান। পরে আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে। সেই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয় হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা এ মামলায় তদন্তের দায়িত্ব পান সংস্থাটির উপ-পরিচালক হারুন-অর রশিদ। তার নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেন আরেক উপ-পরিচালক আকরাম হোসেন। মামলা বাতিলের আবেদনে বলা হয়, দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে কমিশন। আর কমিশন বলতে তিন কমিশনারকে বোঝায়। অতএব হারুন-অর-রশিদের নিয়োগ আইনসম্মত হয়নি। তাই তদন্ত কর্মকর্তার নিয়োগ অবৈধ ঘোষণার পাশাপাশি মামলা বাতিল চাওয়া হয়েছিল। খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থন ১৭ এপ্রিল ॥ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আগামী ১৭ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অপরদিকে মামলার আসামি মুন্না ও মনিরুল আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদ্দার এ আদেশ দেন। ওই দিন বেগম খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থন ও মামলার যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য করে আদালত। খালেদা জিয়া শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে আদালতে হাজির হতে না পারায় তার আইনজীবী এ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া সময়ের আবেদন করেন। অপরদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সময়ের আবেদন মঞ্জুর না করার জন্য বিচারককে বলেন। তিনি বলেন, আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য সময়ের আবেদন করা যায় না। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে বলেন, এবারের মতো সময়ের আবেদন মঞ্জুর করা হলো। এর পরবর্তী ধার্য তারিখে বেগম খালেদা জিয়া হাজির না হলে আইনের গতিতে মামলা চলবে। অপরদিকে মামলার অপর দুই আসামি বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান আত্মপক্ষ সমর্থন পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করেন। এরপর বিচারক তাদের মামলার ৩২ সাক্ষীর সাক্ষ্য পড়ে শুনান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচারের আশা করেন। দুই আসামি বলেন, আমরা লিখিতভাবে বক্তব্য দেব এবং মামলায় কোন সাফাই সাক্ষী দেবেন না। এর আগে গত ৩১ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদকে জেরা শেষ করেন আইনজীবী। তার জেরা শেষে ৭ এপ্রিল আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য খালেদা খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার পরবর্তী জেরা ২১ এপ্রিল ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বাদীর পরবর্তী জেরার জন্য ২১ এপ্রিল দিন ধার্য করেছে আদালত। ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদ্দার বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। বৃহস্পতিবার মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদকে জেরা করেন খালেদার আইনজীবী এ্যাডভোকেট আব্দুর রেজ্জাক। তার জেরা শেষ না হওয়ায় পরবর্তী জেরার জন্য ২১ এপ্রিল দিন ধার্য করেন। এদিন খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হতে না পারায় এ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া ও জয়নুল আবেদীন মেজবা তার পক্ষে হাজিরা দাখিল করেন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ॥ মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই মামলার অপর আসামিরা হলেনÑ খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডল্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ॥ মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেনÑ মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
×