ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাড়ির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ১৫ মার্চ ২০১৬

মাড়ির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি

মুখের অভ্যন্তরে দাঁতের যতেœর পাশাপাশি মাড়ির স্বাভাবিক পরিচর্যা প্রয়োজন। কিন্তু মাঝে মাঝে যে কোন সমস্যার কারণে মাড়ির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা জিনজাইভাল এনলার্জমেন্ট দেখা যেতে পারে। মাড়ির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা জিনজাইভাল এনলার্জমেন্ট অন্য যে সব নামে পরিচিত সেগুলো হলো- জিনজাইভাল ওভারগ্রোথ, হাইপারট্রফিক জিনজিভাইটিস, জিনজাইভাল হাইপারপ্লাসিয়া এবং জিনজাইভাল হাইপারট্রফি। আমাদের দেশে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে মাড়ির অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে জিনজাইভাল হাইপারপ্লাসিয়া হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। মাড়ির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বিভিন্ন কারণে হতে পারে: মুখের স্বাস্থ্য নিম্নমানের হলে প্ল্যাক জমা হয়ে প্রদাহের সৃষ্টি হয়ে মাড়ির বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। যারা মুখ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয় তাদের ক্ষেত্রেও এমনটি হতে পারে। অবস্থাজনিত কিছু কারণে মাড়ির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হতে পারে। বয়ঃস্বন্ধি এবং গর্ভাবস্থায় হরমোনের তারতম্যের কারণে ও মাড়ির বৃদ্ধি ঘটতে পারে। গর্ভাবস্থায় পায়োজেনিক গ্রানুলোমার কারণে ও মাড়ির বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়। ভিটামিন সি -এর অভাব হলে এবং চলমান থাকলে মাড়ির বৃদ্ধি ঘটতে পারে। সিস্টেমিক কারণ : * এইচআইভি ভাইরাস * ডায়াবেটিস * ক্রনস্ ডিজিজ * লিউকেমিয়া বা রক্তের ক্যানসার । ওষুধ সেবনজনিত কারণ : * উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার এজেন্ট যেমন : নিফিডিপিন, এমলোডিপিন ও মাড়ির বৃদ্ধি করতে পারে। * মৃগী রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ ফিনাইটয়েন। সাইক্লোসপরিন জাতীয় ওষুধ। সাইক্লোসপরিন ব্যবহৃত হয় সোরিয়াসিস রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে। সাইক্লোসপরিন একটি ইমমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধ * এন্টিবায়োটিক এবং বিষণœতানাশক ওষুধ ও মাঝে মাঝে মাড়ির বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। কিন্তু সেটি পরিমাণে খুব কম হয়ে থাকে। মাড়ির অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রোগীর সার্বিক ইতিহাস জানা খুব জরুরী। বিশেষ করে রোগী কোন ওষুধ সেবন করছেন কিনা বা কোন নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করছেন কিনা তা জানতে হবে। সাধারণ কারণগুলোতে মাড়ির অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কিছু ওষুধ অথবা জিনজিভেকটোমি করিয়ে নিলে রোগ থেকে পরিত্রাণ লাভ করা যায়। কিন্তু কোন কারণ খুঁজে না পাওয়া গেলে অতি দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করতে হবে রক্তের ক্যান্সার বা লিউকেমিয়া আছে কিনা তা জানার জন্য। এছাড়া টিস্যু কেটে বায়োপসি করা প্রয়োজন অন্য কোন সমস্যা জানার জন্য। রোগীদের একটি কথা মনে রাখতে হবে যে, মাড়ির অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোন সময় নষ্ট করা যাবে না। মুখস্থ ভিটামিন সি সেবন করে বা উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা মোটেই উচিত নয়। আপনার যা করতে হবে তা হল দ্রুত আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। খারাপ কোন কিছু হলে যেমনÑ লিউকেমিয়া বা অন্য কোন ক্যান্সার হলে প্রাথমিক অবস্থাতেই যেন আপনার চিকিৎসা শুরু“করা যায়। মনে রাখতে হবে ক্যান্সারের চিকিৎসা প্রাথমিক অবস্থায় শুরু করলে, আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। কিন্তু অযথা সময় নষ্ট করে চিকিৎসা করলে আপনার জীবন বিপন্ন হতে পারে। ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ শাহ আলী হাসপাতাল মিরপুর-১, ঢাকা। মোবাইল : ০১৮১৭৫২১৮৯৭
×