ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

৫ হাজার পরিবারের স্বপ্ন বিষমুক্ত সবজি চাষ

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১৫ মার্চ ২০১৬

৫ হাজার পরিবারের স্বপ্ন বিষমুক্ত সবজি চাষ

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষিতে সার, কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহারে শাকসবজি ও পরিবেশ যেখানে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে, সেখানে খুলনার উপকূলীয় উপজেলা দাকোপের বানিশান্তা ও সুতারখালী ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার পরিবার কৃষিতে ‘পারমাকালচার’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন স্বপ্নের বীজ বুনছেন। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদী ভাঙ্গনসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে নাকাল এ দুটি ইউনিয়নের মানুষ শাকসবজি চাষে পারমাকালচার বা পারমানেন্ট এগ্রিকালচার পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন। তারা স্বল্প জমি, সম্পদ আর সামান্য পুঁজি কাজে লাগিয়ে বিষমুক্ত সবজি, ফসল ও মাছ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। ইতোমধ্যে এলাকায় এ পদ্ধতির চাষ ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সরেজমিন এলাকা ঘুরে জানা যায়, বেসরকারী সংস্থা বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (বিএএসডি) সিফাল স্কটল্যান্ড, গাইয়া এডুকেশন ও ইউনিটারের অংশীদারিত্বে স্কটিশ সরকারের অর্থায়নে বিসিইসি প্রকল্পের আওতায় খুলনার দাকোপ উপজেলার বানিশান্তা ও সুতারখালী ইউনিয়ন এবং বাগেরহাট জেলার মংলা পোর্ট পৌরসভা এলাকার ৪২ গ্রামে ২০১৩ সালের জুন মাসে কার্যক্রম শুরু করে। ওই প্রকল্পের আওতায় গত তিন বছরে ১৪০ প্রতিনিধিকে পারমাকালচার প্রশিক্ষণ, জীবনজীবিকা উন্নয়ন সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ গ্রহণকারীরা নিজ নিজ এলাকায় অন্যদের এ বিষয়ে ধারণা দেন। বর্তমানে এলাকায় পারমাকালচার বা পারমানেন্ট এগ্রিকালচার পদ্ধতিতে চাষাবাদ ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নারী পুরুষ সকলে মিলে এখন বিষমুক্ত জৈব সবজি উৎপাদন, নার্সারি প্রকল্প, সমন্বিত মাছ চাষ প্রকল্প (মাছ, ধান ও পুকুর পাড়ে ঝুলন্ত জৈব সবজির চাষ), কেঁচো সার প্রকল্পসহ বিভিন্ন কর্মকা- পরিচালনা করছেন। সমতল জমি, ঘেরের বাঁধে নানা রকমের সবজি চাষ করা হচ্ছে। ঘের ও পুকুরে হচ্ছে মাছের চাষ। স্থানীয়রা জানান, ‘পারমাকালচার’ তাদের স্বল্প জমির বহুবিধ ব্যবহার শিখিয়েছে। সার, কীটনাশক, মাছের সবকিছুই প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হচ্ছে। ফলে কৃষিজীবীদের খরচ যেমন কমছে, তেমনি পরিবেশ রক্ষাসহ জীবনযাত্রার মানও বেড়েছে। সুফলভোগীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দাকোপ উপজেলার বানীশান্তা ও সুতারখালী ইউনিয়নে প্রায় ৪৭টি স্বনির্ভর কমিটি (কমিউনিটি গ্রুপ) রয়েছে। এসব কমিটির সদস্য সংখ্যা এক হাজার ২৫৬ জন। এই দুই ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পারমাকালচার প্রযুক্তি অনুসরণ করছেন।
×