ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

অমিয়রঞ্জনের সঙ্গীতসন্ধ্যা ও এ্যালবামের প্রকাশনা

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১৫ মার্চ ২০১৬

অমিয়রঞ্জনের সঙ্গীতসন্ধ্যা ও এ্যালবামের প্রকাশনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বসন্ত সন্ধ্যায় মায়াময় সুরের খেলা ভেসে বেড়াল বেঙ্গল শিল্পালয়ে। রাগ-রাগিনীর অমিত সুধায় সিক্ত হলো শ্রোতার অন্তর। আর এই কণ্ঠের মাধুর্য ছড়ালেন উপমহাদেশীয় শাস্ত্রীয়সঙ্গীত সাধনার বিশিষ্টধারা বিষ্ণুপুর ঘরানার গুরু সঙ্গীতাচার্য প-িত অমিয়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তিনি সঙ্গীত পরিবেশন করে ধানম-ির বেঙ্গল শিল্পালয়ের বেঙ্গল ক্যাফেতে। অমিয়রঞ্জনের সঙ্গীত সঙ্কলনের প্রকাশনার অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয় এ সঙ্গীতসন্ধ্যা। অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হয় শিল্পীর রাগসঙ্গীতের এ্যালবাম ‘টোয়াইলাইট রাগাজ’। এ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করেন সঙ্গীতজ্ঞ ড. করুণাময় গোস্বামী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে সম্মাননা প্রদান করা হয় এই সঙ্গীতাচার্যকে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। সঙ্গীত সংকলনটি প্রকাশ করেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। এতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে শিল্পীর কণ্ঠে ধারণকৃত রাগ ‘পুরিয়া কল্যাণ’ ও ‘জয়-জয়ন্তী’। প্রকাশনা পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সঙ্গীত পরিবেশন করে অমিয়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়।পরিবেশনায় শিল্পীর সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করেন ইফতেখার আলম প্রধান, হারমোনিয়ামে ফকির সুমন, তানপুরায় সুশান্ত সরকার ও মনিন্দ্র নাথ রায়। প-িত অমিয় রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯২৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এক সঙ্গীতপ্রেমী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বিষ্ণুপুর ঘরানার অনুসারী সঙ্গীতাচার্য সত্যকিঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সন্তান ও শিষ্য। সুদীর্ঘ জীবনে তিনি বিস্তর হিন্দুস্থানী সঙ্গীত পরিবেশন এবং এ বিষয়ে প্রচুর বক্তৃতা করেন। তাঁর ভরাট কণ্ঠে রাগের সৃজনশীল বিস্তার, তানের অতুলনীয় শুদ্ধতা এবং ছন্দ সম্পর্কে ধারণার ভিত্তি আর সঙ্গীতে চিন্তা ও আবেগের দক্ষ সমন্বয় খেয়ালের গঠনে এনেছে এক নতুন মাত্রা, উপস্থাপনায় এখনও যা সমকালীন। প-িত অমিয়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও বিভাগীয় প্রধান। ৩০ বছরের বেশি সময় অধ্যাপনা করে ১৯৯২ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। রফিক আজাদের স্মরণসভা আজ ॥ শনিবার না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন কীর্তিমান কবি ও মুক্তিযোদ্ধা রফিক আজাদ। আজ মঙ্গলবার স্মরণ করা বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান এই আধুনিক কবিকে। বিকেল চারটায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে রফিক আজাদ স্মরণে এ নাগরিক শোকসভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন বরেণ্য কবি সৈয়দ শামসুল হকে। যৌথভাবে এ স্মরণসভার আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি ও জাতীয় কবিতা পরিষদ। আলিয়ঁসে ‘সুখের বৃষ্টি’ তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী কাল ॥ বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সুখের বৃষ্টি শীর্ষক তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন ফরাসি নির্মাতা ইসাবেলা আতুনেস। কাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ মিলনায়তনে প্রদর্শিত হবে তথ্যচিত্রটি। ফ্রান্সের প্যারিসে গত ডিসেম্বর মাসে হয়ে যাওয়া জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলন ‘ইউএন সিওপ ২১’ এ ছবিটির প্রদর্শনী হয়েছিল। ছবিটির শূটিং হয়েছে দাউদকান্দিতে। এখানকার নিচু ধানী জমিগুলো বর্ষায় ডুবে যায়। চীন, নেপাল, ভুটান ও ভারতের নদী-খালগুলো থেকে আসা জলে উপচে ওঠে বাংলাদেশ। তাই বলে দিশেহারা হয় না বাংলাদেশের মানুষ। তারা ওই সময়কালে নিচু জমিগুলোয় মাছ চাষ করেন। বাংলাদেশ তাই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সামলানোর মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে। নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বা সমালোচনা সয়ে বাংলাদেশ এখন পরিবর্তনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ইসাবেলা এটিই দেখিয়েছেন তাঁর ছবিতে। মুস্তাফা চৌধুরীর গ্রন্থের আলোচনাসভা ॥ সোমবার সকালে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে মুস্তাফা চৌধুরী রচিত আনকন্ডিশনাল লাভ : স্টোরি অব এ্যাডপশন অব ১৯৭১ ওয়ার বেবিজ শীর্ষক গ্রন্থের আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক ও সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম ও ড. জালাল আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। বক্তারা বলেন, একাত্তরের যুদ্ধশিশুদের বিষয়টি সামনে এনেছেন মুস্তাফা চৌধুরী। তিনি তার গ্রন্থের নাম দিয়েছেন বাংলায় এভাবে ‘৭১-এর যুদ্ধশিশু : অবিদিতি ইতিহাস’। মুস্তাফা চৌধুরীর বইটি পড়তে পড়তে চোখ ভেসে যায় জলে। অধিকৃত বাংলাদেশে পাকিস্তানী সেনারা নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। নারীদের ধর্ষণ করেছে। নারী বন্দীদের বারবার ব্যবহারের জন্য বাঁচিয়ে রাখা হতো। যতদিন পর্যন্ত তাদের ‘ভোগ’ করা যেত ততদিনই ছিল আয়ু। যারা বেঁচে ছিলেন তারা লোকলজ্জায় ভয়ে, সমাজের ভয়ে ধর্ষণের কথা বলেননি। মানব ইতিহাসের নিদারুণ ভয়াবহ সঙ্কটের সন্তানেরা তাদের অস্তিত্বের বিপন্নতা নিয়ে দিনাতিপাত করেছে। এখন সময় এসেছে তাদের গর্বিত আত্মপ্রকাশের কারণ তারা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধেরই সন্তান। তারা বলেন, বিপুল সংখ্যক যুদ্ধশিশুই পাক হানাদার বাহিনীর নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার জীবন্ত সাক্ষ্য বহন করে। এর মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত মানব-অবমাননার বিচারের প্রসঙ্গটি আরও জোরদার হয়ে ওঠে আসে। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, মুস্তাফা চৌধুরীর এই বইয়ের আলোচনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার মহান মাসে বাংলা একাডেমি মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত মা-বোন এবং তাদের যুদ্ধশিশুদের ন্যায়বিচার ও সম্মানপ্রাপ্তির বিষয়টির প্রতি সবার মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায়।
×