ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট নিয়ে জটিলতার অবসান

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১২ মার্চ ২০১৬

কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট নিয়ে জটিলতার অবসান

কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট নিয়ে জটিলতার সমাধান করেছেন বিজ্ঞানীরা। যেসব রোগীর কিডনি প্রতিস্থাপনের দরকার হয় তাদের একটি বড় সমস্যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম নিয়ে। ইমিউন সিস্টেম নতুন প্রতিস্থাপিত কিডনির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে না। ফলে দেহে দেখা দেয় নানা রকম জটিলতা। তাই কোন্ কিডনিটি কোন একজন রোগীর দেহের উপযুক্ত হবে তা খুঁজে বের করতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। চিকিৎসকরা কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য রোগীর দেহের ইমিউন সিস্টেম পাল্টে দিয়ে সফল হয়েছেনÑ এ রকম একটি সমীক্ষার ফল বুধবার নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছে। দেখা গেছে, কিডনি গ্রহণকারী এ রকম অনেক রোগী আট বছরও সুস্থ রয়েছেন। ইমিউন সিস্টেম না বদলালে ওই কিডনিগুলো তাদের দেহে ঠিকমতো কাজ করত না। মৃত কারও কিডনি সংগ্রহের জন্য রোগীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতো। পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির পেরেলমেন স্কুল অব মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ ড. জেফরি বার্নস বলছেন, পদ্ধতিটি বহু রোগীর জীবন বাঁচাতে পারে। পদ্ধতিটির নাম তারা দিয়েছেন ডিসেনসাইটিজেশন। কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা ও ওই সময় রোগীদের বাঁচিয়ে রাখতে ডায়ালিসিস করতে হয়। পদ্ধতিটি ব্যয়বহুল এবং রোগীর জন্য যন্ত্রণাদায়ক। এর ফলে অনেক সময় রোগীর মৃত্যুও হয়ে থাকে। গবেষকরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর প্রায় এক লাখ রোগী কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকে। এদের প্রায় অর্ধেকের দেহে যে এ্যান্টিবডি থাকে তা প্রতিস্থাপিত অঙ্গকে স্বাভাবিক কাজ করতে বাধা দেয়। প্রায় ২০ শতাংশ রোগীর দেহ এত স্পর্শকাতরতা প্রতিক্রিয়া দেখায় যে, সেখানে নতুন কোন অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা প্রায় অসম্ভব। সমীক্ষক দলের প্রধান জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন ড. ডরি সেগেভ বলছেন, ডিসেনসাইটিজেশন প্রক্রিয়ায় রোগীর দেহের রক্ত থেকে প্রথমে এ্যান্টিবডি সরিয়ে অন্য এ্যান্টিবডি ঢোকানো হয়। ওই সময় দেহের ইমিউন সিস্টেম নতুন এ্যান্টিবডি তৈরি করতে থাকে। দেহের মধ্যে নতুনভাবে তৈরি হওয়া এ্যান্টিবডি প্রতিস্থাপিত কিডনির প্রতি কম প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। নতুনভাবে তৈরি হওয়া এ্যান্টিবডিগুলো যদি প্রতিস্থাপিত কিডনির জন্য ঝুঁকি তৈরি করে তবে ওষুধ ব্যবহার করে এর চিকিৎসা করা হয়। ওষুধ রক্তের মধ্যে থাকা নতুন তৈরি এ্যান্টিবডিগুলো ধ্বংস করে দিয়ে কিডনির সুরক্ষা নিশ্চিত করে। ডিসেনসাইটিজেশন প্রক্রিয়াটি ব্যয়বহুল। মোটামুটি ৩০ হাজার ডলার এবং ওষুধ প্রয়োজন হলে এক লাখ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। তবে চিকিৎসকরা আশা করছেন, ব্যাপকভাবে চালু হলে খরচ কমে আসবে। উল্লেখ্য, ডায়ালিসিস বাবদ একজন কিডনি রোগীকে বছরে ৭০ হাজার ডলার ব্যয় করতে হয়। Ñইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস
×