ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শীর্ষস্থানীয় অনেক নেতা নিহত, ক্রমাগত পিছু হটছে জঙ্গীরা

ইসলামিক স্টেট এখন বিপর্যয়ের মুখে

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৯ মার্চ ২০১৬

ইসলামিক স্টেট এখন বিপর্যয়ের মুখে

এক বছর ধরে চলা সামরিক অভিযানে ইসলামিক স্টেট এখন বিপর্যয়ের মুখে। নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন ভূমিগুলো হারাতে বসেছে। এছাড়া দলের অনেক শীর্ষ পর্যায়ের নেতা নিহত হয়েছেন। খবর টেলিগ্রাফ অনলাইনের। ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলে ছিল আইএসের মূল ঘাঁটি। সেখান থেকে তারা পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে টেলিগ্রাফ এসব জানতে পেরেছে। ফালুজা এক সময় ইরাকের সবচেয়ে সংঘাতপূর্ণ শহর বিবেচনা করা হতো। কারণ জিহাদীরা বেশিরভাগ সময় শহরটি নিয়ন্ত্রণ করেছে। সম্প্রতি আইএস সেখান থেকেও হাত গুটাতে বাধ্য হয়েছে। ঘটনা শুরু হয়েছিল একটি রুটির দোকানে কাস্টোমারদের লাইনে দাঁড়ানো কেন্দ্র করে। সেখান থেকে শহরের তিনটি বড় এলাকায় আইএসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে। বেশ কিছু আইএস সদস্যকে হত্যার পর তারাও শহরের আট বাসিন্দার প্রাণদ- কার্যকর করে। পরিস্থিতি এখন থমথমে রয়েছে। পশ্চিমের হিত শহরেরও একই অবস্থা। সেখানকার আলবু নিমর নামে গোত্রের প্রধান হিকমত আল জুদ জানিয়েছেন, তিনি ব্যক্তিগত অপমানের শোধ নিতে ছয় আইএস কর্মকর্তাকে হত্যা করেছেন। এ ঘটনার পর তাকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। টেলিগ্রাফকে তিনি বলছিলেন, আইএসের কারণে পরিবারগুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে। পছন্দ হলে তারা যে কোন নারীকে জোরপূর্বক বিয়ে করে থাকে। জুদ পরিবারটি ওই সুন্নি গোত্রের নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। আইএস অধিকৃত এলাকার বাইরের লোকজনের অবাধ প্রবেশাধিকার না থাকায় এসব ঘটনা সঠিক কিনা তা যাচাই করা কঠিন। তবে এসব জায়গা থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের সঙ্গে কথাবার্তায় মোটামুটিভাবে ধারণা পাওয়া যায় যে, আইএসের নিয়ন্ত্রণ ক্রমেই শিথিল হয়ে পড়ছে। স্থানীয়ভাবে আইএস যাদের জোর করে বাহিনীতে রিক্রুট করছে তাদের মধ্যে বাড়ছে হতাশা। ফালুজার কাহিনী অবশ্য অন্যরকম। ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক আগ্রাসন শুরুর পরের বছর থেকে এখানে জিহাদীরা বিদেশী বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করেছে। শহরটি অনেক বছর ধরে যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে পরিচিতি ছিল। ২০১৪ সালে ফালুজার বাসিন্দারা আইএসকে স্বাগত জানিয়েছিল। কিন্তু তারা এখন জঙ্গী গ্রুপটির বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। শহরের মেয়র ইসাম আল ইসাউই এখন বাগদাদে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন। তিনি বলছেন, আইএস সদস্যরা এখন শহরটির মধ্যে (নিরাপত্তার জন্য) অস্ত্র হাতে ঘুরে বেড়ায়। অথচ আগে তারা অস্ত্র ছাড়াই স্বচ্ছন্দে সেখানে বিচরণ করতে পারত। প্রায় এক বছর ধরে ইরাকী বাহিনী শহরটির চারপাশ ঘিরে রেখেছে। মার্কিন ও ন্যাটো জোটের সহায়তায় ইরাকী বাহিনী পশ্চিমাঞ্চলীয় আনবার প্রদেশের রাজধানী রামাদির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেয়ার পর এখন ফালুজার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ইসাউই লছেন, ফালুজায় এখন তীব্র খাদ্য সঙ্কট। খাদ্যাভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শহরের ৬০ থেকে ৭০ হাজার বাসিন্দা এখনও বাইরে অবস্থান করছে, তাদের ফেরত আসতে বাধা দিচ্ছে আইএস। গত বছর মে মাসের পর আইএস কোন বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। ওই সময় ইরাকের রামাদি ও সিরিয়ার পালমিরার অনেকটা অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছিল। তারপর থেকে শুরু হয়েছে তাদের পিছু হটা।
×