ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত-বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকে সিদ্ধান্ত

দিল্লীর সঙ্গে পানি বণ্টন সমস্যার দ্রুত সমাধান চেয়েছে ঢাকা

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ৩ মার্চ ২০১৬

দিল্লীর সঙ্গে পানি বণ্টন সমস্যার দ্রুত সমাধান চেয়েছে ঢাকা

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ ভারতের সঙ্গে পানিবণ্টন সমস্যার দ্রুত সমাধান চেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনার বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের বিভিন্ন ইস্যু আলোচনার জন্য আগামী জুলাইয়ে ঢাকায় যৌথ পরামর্শ কমিশনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বুধবার দিল্লীতে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কূটনৈতিক সূত্র এসব তথ্য জানায়। বুধবার দিল্লীতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর এক বৈঠক হয়। বৈঠকে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী দুই দেশের মধ্যে পানিবণ্টন সমস্যার বিষয়টি তুলে ধরেন। সুষমা স্বরাজ পানিবণ্টনের বিষয়টি দ্রুত সমাধানে আশ্বাস দিয়েছেন। বৈঠকের বিষয়ে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসবের মধ্যে পানিবণ্টন, ব্যবসা-বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি রয়েছে। এসব বিষয়ে আলোচনার জন্য আগামী জুলাইয়ে ঢাকায় যৌথ পরামর্শ কমিশনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈঠকে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী রাইসিনা সংলাপে যোগ দিতে মঙ্গলবার দিল্লী যান। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দিল্লীভিত্তিক সংস্থা অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন যৌথভাবে রাইসিনা সংলাপের আয়োজন করে। মঙ্গলবার দিল্লীর তাজ প্যালেস হোটেলে এই সংলাপ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সংলাপের উদ্বোধন করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই, শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা প্রমুখ। এছাড়া সংলাপে চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ৪০ দেশের সাড়ে চারশ’ প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন। রাইসিনা সংলাপে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী তার বক্তৃতায় বলেন, সকল পক্ষের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে আমরা একুশ শতকে একটি শান্তিপূর্ণ, সহযোগিতামূলক ও অধিকতর সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়া গড়ে তোলার লক্ষ্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। অন্যথায় আমরা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে দায়ী থাকব। মাহমুদ আলী বলেন, এ অঞ্চল ক্রমান্বয়ে অভিন্ন স্বার্থ ও লক্ষ্য নিয়ে একটি পরস্পর নির্ভরশীল কমিউনিটিতে পরিণত হচ্ছে বলে আমাদের পারস্পরিক কল্যাণ ও সম্মত সমাধান লাভের চেতনা নিয়ে অগ্রাধিকার হিসেবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক অগ্রগতির বিষয়টিকে গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে শক্তি আহরণ, সহযোগিতার জন্য গণসমর্থন সুদৃঢ়করণ, অঞ্চলের পূর্ণ পুনর্জাগরণ ঘটানো সম্ভব। অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর এগুলো নির্ভরশীল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ হয়ত হতাশাবাদী হবেন এই বিশ্বাসে যে, সন্ত্রাস ও সহিংস চরমপন্থার হুমকি, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব এবং দেশগুলোর মধ্যে অবিশ্বাসের চ্যালেঞ্জগুলো আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর ছায়াপাত করতে পারে। তিনি বলেন, শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের যাত্রাপথ নিঃসন্দেহে নিরাপত্তা ইস্যুর বিবেচনায় বাধাগ্রস্ত হয়। রাইসিনা সংলাপের বিভিন্ন পর্বে দেশটির তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, বিদ্যুত মন্ত্রী পিযূষ গয়াল, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ড. এস জয়শঙ্কর, সাবেক কূটনীতিক ও লেখক শশী থারুর, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার তারিক করিম প্রমুখ অংশ নেন। সংলাপ শেষে আজ বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ঢাকায় ফিরবেন।
×