ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লঙ্কাবধে ফাইনালে ভারত

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২ মার্চ ২০১৬

লঙ্কাবধে ফাইনালে ভারত

মোঃ মামুন রশীদ ॥ এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনালটা যেন অধরা হয়ে গিয়েছিল ভারতের জন্য। ২০১০ সালে সর্বশেষবার ফাইনাল খেলে চ্যাম্পিয়ন হলেও পরের দুই আসরে ২০১২ ও ২০১৪ সালে ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। কিন্তু এবার টি২০ ফরমেটে এশিয়া কাপ হওয়াতেই সম্ভবত ‘এশিয়ার বিশ্বকাপ’ বিবেচিত এ টুর্নামেন্টটি পয়মন্ত হলো ভারতের জন্য। মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বেশ সহজেই শ্রীলঙ্কাকে ৫ উইকেটে পরাজিত করে এক ম্যাচ হাতে রেখে সবার আগে ফাইনালে পৌঁছে গেছে ভারত। প্রথম ব্যাট করে ৯ উইকেটে ১৩৮ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। জবাবে বিরাট কোহলির অপরাজিত অর্ধশতকে ১৯.২ ওভারে ১৪২ রান তুলে জয় পায় ভারত। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টানা তিন ম্যাচ জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে আগেভাগেই এ ফাইনালে পা রাখা টি২০ র‌্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বসেরা দলটির। আর গত এশিয়া কাপ ও টি২০ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন লঙ্কানদের বিদায় প্রায় নিশ্চিতই হয়ে গেছে এ পরাজয়ে। কারণ শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতলেও নেট রানরেটে অনেক পিছিয়ে থাকায় অবিশ্বাস্য রকমের ব্যবধানে জিততে হবে তাদের। তবেই শুধু পেছনে ফেলতে পারবে স্বাগতিক বাংলাদেশ অথবা পাকিস্তানকে। দারুণ উজ্জীবিত ভারতের বিরুদ্ধে কোণঠাসা শ্রীলঙ্কা। ভারতের বিরুদ্ধে হারলেই বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাবে। কারণ নেট রানরেট কম থাকায় এমনিতেই কোণঠাসা লঙ্কানরা। এমন একটি জরুরী ম্যাচেও নিয়মিত অধিনায়ক ও পেসস্তম্ভ লাসিথ মালিঙ্গাকে ছাড়াই বুধবার নামতে হয়েছে গত এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে। অবশ্য ভারতীয় দল শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি শক্তি নিয়েই নামতে পেরেছে। নির্ভরযোগ্য আক্রমণাত্মক ওপেনার রোহিত শর্মার ইনজুরি সমস্যা থাকলেও তিনি তা কাটিয়ে একাদশে ফেরেন। আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ানও ছোটখাটো যে ইনজুরির কারণে আগের ম্যাচ খেলতে পারেননি, তিনিও ফিরেছেন। একাদশের বাইরে চলে গেছেন আজিঙ্কা রাহানে। টস জিতে আগে লঙ্কানদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় ভারত। এদিন আবারও উইকেটে কিছুটা ঘাস ফিরে এসেছে বলেই মহেন্দ্র সিং ধোনি পেসারদের কথা ভেবে সুযোগটা নিয়েছেন। তাঁর সেই চিন্তাটা বেশ কার্যকর হয়েছে প্রথম থেকেই। চলতি এশিয়া কাপে কোন দলেরই ওপেনিং জুটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারেনি আগের ম্যাচগুলোয়। এবারও ব্যতিক্রম হলো না। দলীয় ১৫ রানে দুটি উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার ৩১ রান খারাপ ছিল না। কিন্তু এরপর প্রথম বলেই সাজঘরে নির্ভরযোগ্য ওপেনার তিলকারতেœ দিলশান (১৮)। বিপদ নেমে আসে। দলীয় ৫৭ রানে বিদায় নেন অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসও। তবে পঞ্চম উইকেটে ৪৩ রান করে একটি সম্মানজনক সংগ্রহে দলকে নিয়ে যাওয়ার ভিত দেন কাপুগেদেরা-মিলিন্ডা শ্রীবর্ধেনে জুটি। এরপর ভারতীয় স্পিন আক্রমণ জেঁকে বসে লঙ্কান ব্যাটিং লাইনআপে। শ্রীবর্ধেনে ২২ রান করে বিদায় নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে। কাপুগেদেরাও ৩০ রান করে বিদায় নেন বুমরাহর বলে। কিন্তু শেষদিকে ঝড় তোলেন থিসারা পেরেরা। ৬ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ১৭ রান করে তিনি দলের সংগ্রহটাকে চ্যালেঞ্জিং অবস্থানে নিয়ে যান। ফলে ৯ উইকেটে ১৩৮ রানের লড়াকু পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা। মালিঙ্গাহীন হয়েও পেস আক্রমণটা দুর্বল হয়নি সেটা শুরুতেই ভারতকে বুঝিয়ে দেন নুয়ান কুলাসেকারা। দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান (১) ও রোহিত শর্মাকে (১৫) একাই শিকার করে দারুণ সূচনা দেন লঙ্কানদের। দলীয় ১৬ রানে দুই ওপেনার হারালেও ভারতীয় শিবিরে হতাশা ভর করতে দেননি সুরেশ রায়না ও বিরাট কোহলি। তৃতীয় উইকেটে ৫৪ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান। রায়না ২৫ রানে বিদায় নিলে যুবরাজ সিংয়ের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে আরও ৫১ রানের জুটি গড়েন কোহলি। যুবরাজ তা-ব চালিয়ে ১৮ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৫ রানের ইনিংস খেলে লঙ্কান শিবিরে পরাজয় আশঙ্কা ঘনীভূত করেন। কোহলি ছিলেন অনেকটাই ধীরস্থির। তিনি ক্যারিয়ারের ১৩তম অর্ধশতক আদায় করে দলকে জয় এনে দিয়েই মাঠ ছাড়েন। ৪৭ বলে ৭ চারে ৫৬ রান করেন কোহলি। ৪ বল বাকি রেখে কোহলির বাউন্ডারিতে জয় নিশ্চিত করে ভারত। ২১ রানে দুই উইকেট নেন কুলাসেকারা।
×