ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধান বিচারপতিসহ কেউই আইনের উর্ধে নন ॥ ইমরান সরকার

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১ মার্চ ২০১৬

প্রধান বিচারপতিসহ  কেউই আইনের  উর্ধে নন ॥  ইমরান সরকার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডাঃ ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, প্রসিকিউশন, তদন্তকারী দল এমনকি প্রধান বিচারপতি কেউই কিন্তু আইনের উর্ধে নন। তাদের মনে রাখতে হবে, আমরা কেউ ব্যক্তিস্বার্থে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাচ্ছি না। সোমবার রাজধানীর শাহবাগে যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেম আলীকে রক্ষার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সমাবেশ ও মশাল মিছিল করেছে গণজাগরণ মঞ্চ। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রাখা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে ইমরান এইচ সরকার বলেন, আট মার্চ মীর কাশেমের রায়কে কেন্দ্র করে আমাদের সকলকে সজাগ থাকতে হবে। আদালত অবমাননার ভয় দেখিয়ে আমাদের দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করলে তা উপেক্ষা করেই আমাদের রাজপথে প্রতিবাদ জারি রাখতে হবে। সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র। এই কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে ২, ৪, ৬ মার্চ প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত শাহবাগে গণঅবস্থান। এছাড়া প্রতিবারের মতোই আপীল বিভাগ কর্তৃক রায় ঘোষণার দিন, ৮ মার্চ সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচী পালন করবে গণজাগরণ মঞ্চ। সমাবেশের পর গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা মশাল মিছিল বের করেন। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ঘুরে আবার শাহবাগে এসে শেষ হয়। ইমরান বলেন, ইসলামী ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ধনকুবের মীর কাশেম আলী তার অর্থ-বিত্ত- প্রতিপত্তিকে কাজে লাগিয়ে কোনভাবে বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে কিনা সেই আশঙ্কা আমাদের শুরু থেকেই ছিল। নানা সময়ে গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশিতও হয়েছে, বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়েছে। এই সকল প্রতিকূলতার মধ্যেও তার বিরুদ্ধে আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে দশটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হয়েছে, যার মধ্যে দুটি অপরাধে তাকে মৃত্যুদ- এবং বাকি আটটি অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে মোট বাহাত্তর বছরের কারাদ-ের রায় দেয়া হয়েছে। আমরা জানি এই মীর কাশেম আলী মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত কুখ্যাত ইসলামী ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদক এবং বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত ঘাতক আলবদর বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা ছিল। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের ডালিম হোটেলে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষদের নির্যাতনের যে অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছিল তা প্রত্যক্ষদর্শী ১৪ জনের সাক্ষ্যের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। ইমরান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বক্তব্য বিবৃতিতে এবং বিচার সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের কার্যকলাপে আমাদের মাঝে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে যে, এই রাজাকারকে কোনভাবে রক্ষার চেষ্টা হয় কিনা। সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি আদালতে একটি বক্তব্য রেখেছেন, যেখানে তিনি প্রসিকিউশন ও তদন্তকারী দলের নানা দুর্বলতার কথা বলেছেন। আমরা ধরে নিচ্ছি যে দশটি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে তিনি সেগুলোর কথা বলেননি। যে চারটি অভিযোগে শাস্তি দেয়া যায়নি, তিনি সেগুলোর কথাই বলেছেন। প্রধান বিচারপতি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ব্যবহার করে ইতোমধ্যেই দেশী-বিদেশী বিভিন্ন চক্র যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।
×