ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

উর্দু এদের ভাষা ;###;নেই কোন শহীদ মিনার ;###;অবাঙালী ক্যাম্প বাইশটি

বাংলাদেশে পাকিস্তানী ছিটমহল!

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশে পাকিস্তানী ছিটমহল!

মানিক সরকার মানিক/ তাহমিন হক ববী, নীলফামারীর সৈয়দপুর ঘুরে এসে ॥ রেল এবং অবাঙালীদের শহর বলে পরিচিত উত্তরের জেলা নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও এখানে বসবাসরত বাঙালী-অবাঙালীদের অধিকাংশাই এখনও কথা বলেন উর্দুতে। অনেকের মতে, দেশের অভ্যন্তরে যেন আরেকটি মিনি পাকিস্তান এটি। রাষ্ট্রভাষা বাংলা নয়, উর্দুই যেন এখানকার রাষ্ট্রভাষা। বাঙালীরাও যেন উর্দুতে কথা বলতে গর্ববোধ করেন। এ নিয়ে ভাষাসৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ সন্তান, রাজনীতিকসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করলেও ভাষা আন্দোলনের ৬৪ আর মুক্তিযুদ্ধের ৪৫ বছর পরও এ ভাষার ব্যবহার বন্ধে নেয়া হয়নি কার্যকর কোন ব্যবস্থা। ভাষা আন্দোলনের এ মাসে সম্প্রতি সৈয়দপুর শহরে পা দিতেই মাইকিংয়ের আওয়াজ ভেসে এলো উর্দুতে; ‘খোস্ খবরি, খোস্ খবরি, খোস্ খবরি- হার্টকে মারিজোকে লিয়ে খোস্ খবরি। সিনেমে লাহার, সিনেমে দারুদ, আর কাহুকে বাহারমে জানিকে দরকার নেহি হ্যায়। আপ হামারা সাইদপুরমে ইলাজ হতো হায়।’ এর অর্থ একটি সুখবর, একটি সুখবর, একটি সুখবর। অর্থাৎ যাদের বুকে ব্যথা, বুক চিন চিন করে তাদের আর কাউকে বাইরে কোথাও যেতে হবে না। সৈয়দপুরেই এখন থেকে এসবের চিকিৎসা মিলবে। কিছুদূর এগোতে আবারও উর্দুতে আরেকটি মাইকিং কানে এলো; ‘এক মাইয়াতকে এলান’। অর্থাৎ একটি শোক সংবাদ। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, উর্দুই যেন এই শহরের মূলভাষা! শুধু মাইকিংই নয়, এখানকার সকল প্রচার, সভা-সমাবেশ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কেনাবেচা এমনকি দাফতরিক কার্যক্রমেও ব্যবহার হয়ে থাকে উর্দু ভাষা। আর উর্দুর ব্যবহার শুধুই যে মুখেই সীমাবদ্ধ তাও নয়, অধিকাংশ দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ব্যবহার হচ্ছে উর্দুতে লেখা সাইনবোর্ড। বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন, পরে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভাষা ও দেশ স্বাধীনতা ফিরে পেলেও নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর যেন আজও ফিরে পায়নি স্বাধীনতা। আর এতেই ক্ষুব্ধ এখানকার প্রগতিশীল মানুষ। শহীদ সন্তান এবং স্থানীয় সাংবাদিক এমআর আলম ঝন্টু ক্ষোভের সঙ্গে জনকণ্ঠকে জানালেন, সৈয়দপুরকে মনে হয় যেন একটা মিনি পাকিস্তান। এখানকার বাঙালীদের মাঝেও এটি কালচারে পরিণত হয়েছে। তার মতে, বাঙালীদের উর্দুতে কথা বলতে পারাটা যেন অনেকের কাছে একটা গর্বের বিষয়। আর এজন্য তিনি আইন করে উর্দুতে মাইকিং বন্ধ করার দাবি জানান। একই কথা জানালেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান জোয়ারদার। তিনি জানান, বাঙালী নেতৃত্বের দুর্বলতার সুযোগেই এমনটা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। এজন্য নেতৃত্বের পরিবর্তন আনা দরকার বলেও মনে করেন তিনি। অন্যদিকে প্রজন্ম-৭১ সৈয়দপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক মহসীনুল হক বললেন, অবাঙালীদের মাতৃভাষা উর্দু। তারা না হয় উর্দু ব্যবহার করবেই। কিন্তু বাঙালীরা যখন একই স্রোতে গা ভাসায় তখন লজ্জা ঢাকার স্থান পাই না। তিনি জানান, এখানে উর্দুতে কথা বলতে না পারলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অনেক স্থানেই চাকরি হয় না। উর্দুতে প্রচার না করলে সেখানে লোকসমাগম হয় না। এসব কারণেই বাঙালীদেরও বাধ্য হয়ে করতে হয় উর্দুর ব্যবহার। স্থানীয় সুশীল সমাজ রাষ্ট্রভাষা বাংলা ছেড়ে উর্দুতে মাইকিং কিংবা সভা-সমাবেশ এবং পণ্য বেচাকেনা না করার দাবি জানালেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু ছালেহ মোঃ মুসা জঙ্গী যা জানালেন তা যেন অনেকটাই আগুনে ঘি ঢালার মতোই। বললেন, উর্দুতে কথা বলা কিংবা মাইকিং করা যাবে না- এর কি কোন সরকারী বাধা আছে? যেহেতু তারা একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী এখানে বাস করে তারা ওই ভাষার ব্যবহার করতেই পারে। তবে বাঙালীরা কেন করে সেটা তাদের কাছে প্রশ্ন করুন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ॥ এই ছোট্ট শহরে প্রাণ গেছে চার হাজার বাঙালীর। মুক্তিযুদ্ধে সৈয়দপুরের রয়েছে এক মর্মান্তিক ইতিহাস। এ প্রজন্মের কাছে তা অজানা হলেও ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় সৈয়দপুরের সেই মর্মান্তুদ কাহিনীর কথা। অবাঙালী অধ্যুষিত এই সৈয়দপুরে ’৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সময় স্থানীয় মাত্র গুটিকয়েক অবাঙালীর সহায়তায় পাক-সেনাদের হাতে ছোট্ট এই শহরে প্রাণ দিতে হয় হাজার চারেক বাঙালীকে। সেদিনের সেসব মর্মস্পর্শী এবং স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরেও এ শহরে নেই শহীদ মিনার। স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও সৈয়দপুর শহরে আজও গড়ে ওঠেনি কেন্দ্রীয় কোন শহীদ মিনার। আর তাই বিভিন্ন জাতীয় দিবসে স্বাধীনতাপ্রেমী মানুষকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে যেতে হয় রেলওয়ে অথবা সৈয়দপুর ডিগ্রী কলেজের শহীদ মিনারে। কিন্তু তাদের মতে, শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে অন্যের ঘরে কেন তারা? তারা শ্রদ্ধা জানাবে রাষ্ট্রের নিজস্ব স্মৃতির মিনারে। জানা যায়, ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রাক্বালে ২৪ মার্চ ইউপি চেয়ারম্যান শহীদ মাহাতাব বেগের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হলে অবাঙালীদের সহায়তায় তাকে গুলি করে পাক সেনারা। পরে অবাঙালী কুখ্যাত রাজাকার ইজাহার আহমেদের নেতৃত্বে মাহাতাব বেগের মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ছিন্ন মস্তক নিয়ে মিছিল করে অবাঙালীরা। একই দিনে সৈয়দপুরের ডাঃ জিকরুল হক, তুলশীরাম আগরওয়ালা, ডাঃ বদিউজ্জামান, ডাঃ শামসুল হকসহ প্রায় দেড় শ’ রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীকে পাক সেনারা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যায় অবাঙালীদের সহায়তায়। ১০-১২ দিন পর রংপুর শহরের নিসবেতগঞ্জে এনে গুলি করে হত্যা করে তাদের। শহীদ সন্তান আব্দুর রশীদ জানালেন, ১৫ এপ্রিল তার দাদা-দাদি, মা-বাবা, ভাই-বোনসহ ১০ জনকে তার চোখের সামনে নৃশংসভাবে হত্যা করে পাক সেনারা। এর আগে ১৩ জুন শহরের গোলাহাট ওয়াপদা মোড় থেকে ৪১৩ জন হিন্দু, মুসলিম, খ্রীস্টান এবং মারোয়ারীকে পাক সেনারা ধরে নিয়ে যায় অবাঙালীদের সহায়তায়। শহীদ সন্তান এমআর আলম ঝন্টু জানালেন, ২০১২ সালে একাত্তরের শহীদ ডাঃ সামসুল হকের ছেলে অধ্যাপক সাখাওয়াত হোসেন খোকনের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ বাস্তবায়ন কমিটির ব্যানারে উদ্যোগ নেয়া হয় একটি স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলার। এজন্য বেসরকারীভাবে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে শুরু হয় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কাজ। বিভিন্ন বিনোদমূলক অনুষ্ঠান করে সে থেকে আয় এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহায়তায় প্রায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ের পর এখন এর নির্মাণকাজ আর্থিক সঙ্কটে আটকে আছে। সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা আমজাদ হোসেন সরকার ভজে জানান, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার তো দূরের কথা, এখানে নিজস্ব জায়গা এবং আর্থিক বরাদ্দ না থাকায় কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ এবং শিশুপার্কও গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। এখানে কোনকিছুর উদ্যোগ নিতে গেলেই মামলা খেতে হয়। তাই সব বন্ধ রয়েছে। শহরে অবাঙ্গালি ক্যাম্প ২২টি ॥ অবাঙালী অধ্যুষিত সৈয়দপুর শহরে এখনও রয়েছে ২২টি অবাঙালী ক্যাম্প। এসব ক্যাম্পে বসবাস করে অন্তত ৬০ হাজার অবাঙালী। এর বাইরেও রয়েছে আরও অন্তত ৩০ হাজার। ক্যাম্পগুলো হলোÑ গোলাহাট, মিস্ত্রীপাড়া, বাঁশবাড়ি, দুর্গা অয়েলমিল, ৭ নম্বর গোডাউন, ৪ নম্বর গোডাউন, তিনবাড়ি ক্যাম্প, ৬ নম্বর ক্যাম্প, নিজপাড়া ক্যাম্প, আউট হাউস ক্যাম্প, রেলওয়ে ক্যাম্প, ইসলামবাগ, বার্মা মেস ক্যাম্প, সিনেমা হল ক্যাম্প, জোরা ক্লাব ক্যাম্প, বালুরেচ ক্যাম্প, কাতিখানা ক্যাম্প, হাতিখানা ক্যাম্প। এসব অবাঙালী ক্যাম্পে থাকা মানুষরা এতকাল স্ট্রেন্ড্রেট পাকিস্তানিজ জেনারেল রিপ্যাট্রিয়েশন কমিটির (এসপিজেআরসি) অধীনে থেকে পাকিস্তানে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেও সম্প্রতি তারা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়েছে। আগে তারা পাকিস্তানী নাগরিক হিসেবে রিলিফসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেলেও এখন ভোগ করছে এ দেশীয় নাগরিকের সুবিধা। কিন্তু তারপরও তাদের অন্তরে সত্যিকারেই রয়েছে ‘পেয়ারে পাকিস্তান’। বেশ কয়েকটি ক্যাম্প ঘুরে দেখা গেছে, ৮ ফুট ও ৬ ফুট দৈর্ঘ্য-প্রস্থের একেকটি ঘরে স্ত্রী-সন্তান, জামাই, নাতি-নাততিদের নিয়েই তাদের বসবাস। এর সঙ্গে কমবেশি প্রতি পরিবারেই রয়েছে দু-একটি করে ছাগল। এদের ৮-১০টি পরিবার মিলে রয়েছে মাত্র একটি টিউবওয়েল আর বাথরুম। এসবেই কোন রকমে লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট করে সারতে হয় প্রাকৃতিক কর্ম আর মেটাতে হয় খাবার পানির চাহিদা। হাতিখানা ক্যাম্পের নুরউদ্দিন, সালেহা বেগম, বাঁশবাড়ি ক্যাম্পের নুরী বেগমসহ অনেকেই জানালেন তাদের কষ্টের কথা। বর্তমান পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন ভজেকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘জব ইলেকশন আতা হায়, তব সব আতা হায় হামলোককো পাস, ভোট লেনেকে আগে বলতে হায় যে, হাম রাস্তা করদেংগা, ড্রেনভি কর দেংগা, আফলোককে জো সওলাত হোগা তো হাম করদেংগা, আর ভোট হোনেকা বাদ কিসিকা খবরি কই নেই রাখতা হায়।’ অর্থাৎ প্রতিবছরই ভোটের সময় প্রার্থীরা আসেন, তারা প্রতিশ্রুতি দেন, ড্রেন করে দেবেন, রাস্তা করে দেবেন। কিন্তু ভোটের পর কেউ-ই আর তাদের খোঁজ রাখেন না। ক্যাম্পের অবাঙালীদের মাঝে প্রকৃত অর্থেই বাংলাদেশপ্রীতি নেই কারও মাঝেই। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে উঠছে শহরটিতে ॥ অবাঙালী অধ্যুষিত এবং ব্যবসাপ্রসিদ্ধ সৈয়দপুর শহরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এসবের মধ্যে রয়েছেÑ গার্মেন্টসের ঝুট কাপড় দিয়ে কোট, প্যান্ট, ট্রাউজারসহ নানা পোশাক তৈরি শিল্প। বর্তমানে প্রায় ৪শ’ ক্ষুদ্র ও মাঝারি গার্মেন্টস ও হাড়শিল্পসহ এমন শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় এক হাজারের মতো। আর এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন অন্তত ৭০ হাজার শ্রমিক। এসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত অনেক পণ্যই দেশের গ-ি পেরিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে ভারত, ভুটান, নেপালসহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে। সৈয়দপুরের রফতানিমুখী গার্মেন্টস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাজমুল হোসাইন মিলন জানান, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে আনা ঝুট দিয়ে যে ধরনের পোশাক এখানে তৈরি হচ্ছে, তা দেখে এ দেশ ছাড়া বহির্বিশ্বেও এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ছে। আর এতে করে এর সঙ্গে এখানকার হাজার হাজার মানুষ যুক্ত হয়ে নিজেদের বেকারত্ব দূর করছে। এখানকার মানুষের মাঝে আগে যে অভাব ছিল তার অনেকটাই কেটে গেছে আজ। গার্মেন্টস এবং ঝুটশিল্প ছাড়াও এখানে আরেকটি বড় ধরনের সাফল্য বিরাজমান। তা হলো গরু ও মহিষের শিং ও হাড় এবং নারিকেলের মালাই দিয়ে এখানে তৈরি হচ্ছে রকমারি বোতাম, যা গোটা দেশে বিরল এবং এসবও রফতানি করে দেশে আসছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। সৈয়দপুর বণিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী জানালেন, সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা এবং স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করা হলে শিল্প শহর গড়ে তোলার পাশাপাশি সৈয়দপুরের মাধ্যমে পাল্টে যাবে রংপুর অঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র। সৃষ্টি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানেরও। বিমানবন্দর উন্নয়নে পাল্টে যাবে চিত্র ॥ রংপুর বিভাগের একমাত্র সৈয়দপুর বিমানবন্দরটি নেপাল-ভুটানের ট্রানজিটসহ আঞ্চলিক বিমানবন্দরে রূপান্তর করা হলে পাল্টে যাবে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আর্থসামাজিক চিত্র। সৃষ্টি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানেরও। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখান থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দর এবং নেপাল-ভুটানের দূরত্ব খুব কাছাকাছি হওয়ায় এতে করে বিনিয়োগ বাড়বে এবং অনগ্রসরতাও দূর হবে। জানা গেছে, সৈয়দপুর বিমানবন্দর দিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানের একটি, ইউএস বাংলা, ইউনাইটেড বাংলা, নভো এয়ারসহ মোট চারটি বিমানে প্রায় ৩শ’ যাত্রী প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে, যা চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন এখানে রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের অন্তত এক হাজার বিমান টিকেটের চাহিদা রয়েছে। রংপুর বিভাগের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় সংগঠন রংপুর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোঃ আবুল কাশেমও এই বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তর করার যৌক্তিকতা তুলে ধরে বললেন, ব্যবসায়ীদের প্রাণ হচ্ছে সেই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। যোগাযোগ ব্যবস্থার অনগ্রসরতার কারণে আমাদের এ অঞ্চল অনেকটা পিছিয়ে আছে এখনও। এছাড়া সৈয়দপুর থেকে বুড়িমারী, ভারত, নেপাল এবং ভুটানের দূরত্ব খুবই কাছাকাছি হওয়ায় আন্তর্জাতিক ব্যবসায় এক আমূল পরিবর্তন আসবে এ অঞ্চলের।
×