ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জেনেভায় বৈঠকে যোগ দিতে বিরোধী পক্ষের ‘না’

সিরীয় শান্তি আলোচনা অনিশ্চিত

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬

সিরীয় শান্তি আলোচনা অনিশ্চিত

সিরীয় সরকারবিরোধী পক্ষ জেনেভায় শান্তি আলোচনায় অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে। শুক্রবার এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ওই সিদ্ধান্তের ফলে পাঁচ বছর ধরে চলমান সিরীয় যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে আলোচনা অনুষ্ঠানের জন্য দু’বছরের মধ্যে নেয়া প্রথম উদ্যোগ নিষ্ফল হতে চলেছে। খবর ইয়াহু নিউজের। রিয়াদে আহূত বিরোধী পরিষদ বলেছে, এর প্রতিনিধিরা শুক্রবার অবশ্যই জেনেভায় যাবেন না। পরিষদ বিমান হামলা ও অবরোধের অবসানসহ সদিচ্ছার নিদর্শনমূলক এর কয়েকটি দাবির প্রতি বিশ্বাসযোগ্য জবাব পায়নি। আলোচনা সময়মতো শুরু করার ব্যর্থতায় স্থলযুদ্ধ অব্যাহত থাকার মধ্যে শান্তি স্থাপনের চ্যালেঞ্জগুলোই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সিরীয় সরকার ইরান ও রাশিয়ার সামরিক সহায়তা নিয়ে বিদ্রোহীদের কাছ থেকে ভূখ- পুনর্দখল করছে। এ সরকার আলোচনায় যোগ দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। জাতিসংঘ দূত স্তাফান দ্য মিসতারা পরোক্ষ উপায়ে এ আলোচনার পরিকল্পনা করছেন। আরেক বিরোধী প্রতিনিধি বলেন, প্রতিনিধি দলের দাবিগুলো যদি দু’এক দিনের মধ্যে পূরণ করা হয়, তবে তারা আলোচনায় যোগ দিতে পারেন। কিন্তু সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে হয়। ঘটনার মোড় বদল দ্য মিসতারার জন্য এক বড় ধরনের আঘাতই হবে। তার দফতর তার পক্ষ থেকে সিরীয় জনগণের উদ্দেশে পাঠানো এক বার্তায় বলেছিল, আলোচনা আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা করা যাচ্ছে। বিরোধী পক্ষের বিবৃতি প্রকাশিত হওয়ার আগে দ্য মিসতারার দফতরের এক মুখপাত্র বলেন, আলোচনা পূর্বনির্ধারিত মতো শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে। বিরোধী হাইনিগোশিয়েশনস কমিটির (এইচএনসি) সদস্য জর্জ সাবরা বলেন, এটা নিশ্চিত যে, আমরা জেনেভায় যাব না এবং এইচএনসির কোন প্রতিনিধি দল আগামীকাল জেনেভায় থাকবে না। এইচএনসি সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত রাজনৈতিক ও সশস্ত্র দলগুলোকে নিয়ে গঠিত। এতে ইসলামপন্থী জৈইশ-আল ইসলাম ও ফ্রি সিরিয়ান আর্মির মতো পশ্চিম সিরিয়ায় লড়াইরত প্রধান প্রধান সশস্ত্র দল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জৈইশ-আল ইসলামকে রাশিয়া এক সন্ত্রাসী দল বলে গণ্য করে থাকে। আর ফ্রি সিরিয়ান আর্মির উপদলগুলো সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে সামরিক সাহায্য পেয়েছে। আলোচনার আগে এইচএনসি বেসামরিক এলাকাগুলোতে হামলা চালানো বন্ধ করা বন্দীদের মুক্তি দেয়া এবং অবরোধ তুলে নেয়াসহ কতগুলো পদক্ষেপের বিষয়ে জাতিসংঘের কাছ থেকে নিরাপত্তা চাচ্ছিল। গত মাসে নিরাপত্তা পরিষদের এক প্রস্তাবে ওই সব পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করা হয়। ওই প্রস্তাবে সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়। সাবরা বলেন, দ্য মিসতারার জবাব কেবল কাগজে কলমেই রয়ে গেছে। তিনি বলেন, এ সুযোগ যে ঐতিহাসিক, সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই। তিনি আরবী নিউজ চ্যানেল আরাবিয়া আল-হাদাসের সঙ্গে এক সাক্ষাতকার দিচ্ছিলেন। সিরীয় বিরোধী পরিষদের প্রধান রিয়াদ হিজাব আরাবিয়া টিভিকে বলেন, সদস্যরা জেনেভা শহরে যাবেন, কিন্তু আলোচনায় যোগ দেবেন না। তিনি অবরোধ ও বোমাবর্ষণের শিকারে পরিণত হয়েছে এমন সিরীয়দের দুর্দশা লাঘবের জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। এইচএনসির আরেক কর্মকর্তা বলেন, বিরোধী পক্ষের দাবিগুলো দু’তিন বা চার দিনের মধ্যে মেনে নেয়া হলে তারা আলোচনায় যোগ দিতে পারেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সিরীয় যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে ঐতিহাসিক সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কোন পূর্বশর্ত ছাড়াই আলোচনায় যোগ দিতে বিরোধী পক্ষের প্রতি আহ্বান জানায়। এ যুদ্ধের ফলে ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়।
×