ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

আইএমএফের ওয়াক আউট

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ১৩ জুন ২০১৫

আইএমএফের ওয়াক আউট

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ঋণভারে জর্জরিত গ্রীসের সঙ্গে অনুষ্ঠানরত আলোচনা থেকে নাটকীয়ভাবে সরে দাঁড়ায়। আইএমএফ প্রতিনিধিদল ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হয়ে যায়। এতে এথেন্স সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের চাপ বেড়ে গেল। আইএমএফ মুখপাত্র গেরি রাইস বলেন, তাদের আলোচনায় বড় ধরনের মতপার্থক্য বয়ে গেছে এবং তারা কোন চুক্তি থেকে বেশ দূরেই রয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক ঋণদাতা সংস্থাটি শ্রমবাজার ও পেনশন সংস্কার নিয়ে আপোসরফা করতে ব্যর্থ হওয়ার দায়ে এথেন্সকে অভিযুক্ত করে। খবর বিবিসি ও গার্ডিয়ান অন লাইনের। আইএমএফ বলেছে, এর আলোচক দল এক অচলাবস্থায় পড়ার পর ব্রাসেলস আলোচনা ত্যাগ করেছে। এর ফলে গ্রীক আলোচকদেরও কথাবার্তা ছেড়ে স্বদেশের উদ্দেশে রওনা হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনি। গ্রীস এক সংস্কারের বিনিময়ে অর্থ চুক্তি চাচ্ছে, যাতে দেশটি আইএমএফের ১৫০ কোটি ইউরোর ঋণ পরিশোধে খেলাপী হওয়া এড়াতে পারে। তবে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক বলেন, জুয়াখেলার আর সময় নেই এবং শীঘ্রই এর অবসান হতে হবে। তিনি বলেন, আমার মনে হয়, গ্রীসকে আরও কিছুটা বাস্তববাদী হতে হবে। গ্রীক প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপরাস বৃহস্পতিবার বিকেলে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জাঁ-ক্লদ জাঙ্কারের সঙ্গে কথা বলেন, কিন্তু এতে সামান্যই অগ্রগতি হয়। এথেন্স সরকার চূড়ান্ত বেইলআউট তহবিল (দেউলিয়াত্ব এড়াতে অর্থ সহায়তা) বাবদ ৭২০ কোটি ইউরো ছাড়ের বিনিময়ে যে পরিমাণ অর্থনৈতিক সংস্কার সাধনের প্রস্তাব দিচ্ছে, তাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আইএমএফ সন্তুষ্ট নয়। গ্রীসের সঙ্গে তাদের বেইলআউট চুক্তি করার সময় ৩০ জুন শেষ হয়ে যাবে। সিপরাসের বামপন্থী সিরিজা পার্টি কৃচ্ছ্রবিরোধী এক কর্মসূচী পেশ করে জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসে। আইএমএফের গেরি রাইস ওয়াশিংটনে বলেন, ব্রাসেলসে আইএমএফ এবং গ্রীক আলোচকদের মধ্যে আলোচনায় মতপার্থক্য হ্রাস করার ক্ষেত্রে কোন অগ্রগতি হয়নি। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, আইএমএফ কখনও আলোচনার পথ ছেড়ে যায়নি। আমরা আলোচনাতে আছি তবে ঠিক এখন বল গ্রীসেরই কোর্টে। তিনি বলেন, পেনশন, কর ও অর্থসংস্থান এখনও মতপার্থকের বিষয় হয়ে রয়েছে। সিরিজা নেতৃত্বাধীন সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, এর আলোচকদল এমন কি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেও কোন চুক্তিতে পৌঁছতে প্রচেষ্টা জোরদার করতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঐ কারণে সরকার রাজস্ব ও ঋণের মতো অবশিষ্ট ইস্যুগুলো নিয়ে কাজ করে যাবে। গ্রীসের বেইলআউটের অবশিষ্ট তহবিল ছাড়ের বিষয়ে ঋণদাতাদের সঙ্গে বাকবিত-ায় লিপ্ত রয়েছে। ৭২০ কোটি ইউরো না পেলে গ্রীস অচিরেই দেউলিয়াত্বের মুখে পড়বে। এতে দেশটি পুঁজির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ এবং ইউরো মুদ্রা ত্যাগ করতে পারে। ইইউর এক কূটনৈতিক সিপরাস ও জাঙ্কারের বৈঠককে এক ঋণ চুক্তিতে পৌঁছার এক “শেষ চেষ্টা” বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, যদি প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে কাজ করত, তা হলে প্রেসিডেন্টকে আজ সিপারাসের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হতে হতো না। টাস্ক সতর্ক করে দেন যে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কোন চুক্তি সই না হলে আলোচনা ভেঙ্গে পড়বে এবং গ্রীস এর বর্তমান ৩২ হাজার ইউরোর ঋণ পরিশোধে খেলাপী হবে। তিনি বলেন, এখন সিদ্ধান্ত নেয়ার সময়। তিনি ইইউ, লাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, গ্রীক সরকারের আরও কিছুটা বাস্তববাদী হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এটি খুবই স্পষ্ট যে, আমাদের সিদ্ধান্ত প্রয়োজন, দর কষাকষি নয়।
×