ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

সরকারি সেবা বঞ্চিত রোগীরা

চন্দনাইশ ও দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স আছে, চালক নেই

মো. দেলোয়ার হোসেন, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১৬:৪০, ১৯ জুন ২০২৫

চন্দনাইশ ও দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স আছে, চালক নেই

শুধুমাত্র একজন চালকের অভাবে জরুরি চিকিৎসার জন্য মুমূর্ষু রোগীদের অন্য কোনো হাসপাতালে পরিবহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ২টি কোনো কাজেই আসছে না। ফলে বাধ্য হয়ে মুমূর্ষু রোগীর স্বজনদের অতিরিক্ত মূল্যে দ্বারস্থ হতে হচ্ছে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবার। যা দিনে দিনে বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন মধ্য ও নিম্নবিত্ত পরিবারের রোগীর স্বজনরা।

এদিকে গত ২ বছরের অধিক সময় ধরে দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সটি বিকল হয়ে পড়ে আছে। গত ৩ দিন ধরে চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সের ২টি চাকা নষ্ট হয়ে বিকল হয়ে পড়েছে।

রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, চন্দনাইশে দোহাজারী ও চন্দনাইশ সদরে ২টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২টি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও এ এলাকার রোগীদের বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে হচ্ছে। চন্দনাইশ থেকে রোগী নিয়ে চমেক হাসপাতালে যেতে ১৫শ’ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে। যেখানে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকাকালীন সময়ে মাত্র ৮শ’ টাকা ফিতে নেওয়া হতো।

অনেক সময় উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসার পর চিকিৎসকেরা মুমূর্ষু রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করলেও দরিদ্র রোগীদের স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া জোগাড় করতে হিমশিম খেতেন।

বিগত ২ বছরের অধিক সময় ধরে দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সটি বিকল হয়ে পড়ে আছে। গত ৩ দিন ধরে চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সের ২টি চাকা নষ্ট হয়ে বিকল হয়ে পড়েছে। যদিও চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সটি হাসপাতালের আয় থেকে চালকের বেতন দিয়ে সচল রাখা হয়েছিল।

জানা যায়, চন্দনাইশ ২টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২টি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সরকারিভাবে চালক ছিল ১ জন। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে চালক গোলাম মোস্তফা শারীরিক অসুস্থতার কারণে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর থেকে পদটি শূন্য রয়েছে। সে সময় থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ নিজস্ব আয় থেকে বেতন দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালু রেখেছিল।

স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. রশ্মি চাকমা বলেছেন, অ্যাম্বুলেন্স আছে কিন্তু চালক নেই। অনেক সময় মুমূর্ষু রোগীর স্বজনরা আমাদের কাছে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের বিষয়ে জানতে চাইলে চালক না থাকার কারণে হাসপাতালের আয় থেকে বেসরকারিভাবে চালক দিয়ে সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সটি সচল রাখা হয়। গত ২ দিন ধরে ২টি চাকা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।

তাছাড়া একেকটি চাকা ১৩ হাজার ৫শ’ টাকায় ক্রয় করতে হয়। এ মুহূর্তে এত টাকা না থাকার কারণে কয়েকদিন সময় লাগবে। তাছাড়া চন্দনাইশে যে ২টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে সেগুলো অনেক পুরনো মডেল। প্রায়ই নষ্ট হয়, আর নষ্ট হলে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করে সংস্কার করতে হয়। তাই নতুনভাবে অ্যাম্বুলেন্সের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে বলে জানান। একই সাথে একজন সরকারিভাবে চালকের চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ইতিমধ্যে চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩ বছর ধরে এক্স-রে মেশিন ও আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন ছিল না। চাহিদাপত্র দেওয়ার পর ইতিমধ্যে অত্যাধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন ও আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন এসেছে। এক্স-রে মেশিনের মূল্য আনুমানিক ৬০ লাখ, আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিনের মূল্য আনুমানিক ২০ লাখ টাকা।

দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য অত্যাধুনিক ডেন্টাল চেয়ারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। পাশাপাশি চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওটি ল্যাবের লেবার রুমের টেবিল আনা হয়েছে।

সানজানা

×