
ছবি: জনকন্ঠ
ফরিদপুরে এক নারীকে পাচারের দায়ে মাকসুদা বিবি(৪৯) ও মর্জিনা বেগম সোনালী(৩১) নামে দুই নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুর দুইটার দিকে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ রায় দেন। তবে রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি পলাতক থাকায় আদালতে তারা হাজির ছিলেন না।
দণ্ডপ্রাপ্ত মাকসুদা বিবি সাতক্ষীরার বৈশালী গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনাকালীন অবস্থায় তিনি ফরিদপুরের সদর উপজেলার কানাইপুর এলাকায় ভাড়া থেকে স্থানীয় একটি জুট মিলে কাজ করতেন। অপর আসামি মর্জিনা বেগম সোনালীর বাড়ি মুন্সীগঞ্জের হটচারীপুর এলাকায়। মর্জিনা বেগম মাকসুদা বিবির সহযোগী হিসেবে এই পাচারের সাথে যুক্ত ছিলেন বলে মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ফরিদপুর শহরতলীর কানাইপুরে একটি জুট মিলে চাকরি করতেন দুই বোন। এই সুবাদে ওই জুট মিলে চাকুরিরত আসামি মাকসুদা বিবির সাথে তাদের দুই বোনের সম্পর্ক হয়। ২০১২ সালের ৮ মে দুই বোনের মধ্যে বড় বোনকে নিয়ে মাকসুদা বিবি তাদের দেশের বাড়ি সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠানের কথা বলে নিয়ে যান। সেখানে তাকে সুন্দরবন দেখাবে বলে উৎসাহ জাগানো হয়। তাকে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে তার মা রাজিয়া বেগম তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের দুই জনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের খুঁজে পান না। পরবর্তীতে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি ভারত থেকে তার ছোট মেয়ের মোবাইলে ফোন করে জানান যে, তার বড় বোনকে ভারতে পাচার করে এনে বিক্রি করে দিয়েছেন। এ সময় তিনি আরও জানান যে, তার বোন পুলিশের হেফাজতে আছেন। পরবর্তীতে আমরা বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি অফিস ঢাকার মাধ্যমে জানতে পারি যে, আমার মেয়ের অবস্থান সম্পর্কে। তাকে ভারতীয় পুলিশ গত ২০১২ সালে ১৮ মে রেইড দিয়ে তাকে উদ্ধার করেছে।
এই ঘটনা জানার পর ওই মেয়ের মা রাজিয়া বেগম ২০১২ সালের ২৯ মে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করে। বর্তমানে পাচার হওয়া ওই নারী বাংলাদেশে ফিরে এসে অবস্থান করছেন।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন জানান, "সাক্ষী ও শুনানীর পর ওই নারীকে পাচারের দায়ে দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।"
Mily