
ছবি: জনকণ্ঠ
রোদ-বৃষ্টিতে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর একটি ছাতা। এক সময় শহর ও গ্রামের হাট-বাজারে ছাতা মেরামতের কারিগরদের সহজেই দেখা মিলত, কিন্তু এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। অনেকেই ছেড়ে দিয়েছেন এ পেশা, কেউ কেউ আবার ছাতা মেরামতের পাশাপাশি অন্য কাজেও যুক্ত হয়েছেন। কালের পরিবর্তনে এই পেশার মানুষ কমে যাচ্ছে।
এক সময় মানুষ ছাতা প্রচুর ব্যবহার করত। তখন মানুষ বেশি হেঁটে চলাফেরা করত, তাই রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পেতে ছাতাই ছিল একমাত্র ভরসা। কিন্তু এখন মানুষ যানবাহনে চলাফেরা করে, ফলে ছাতার প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই কমে গেছে।
এছাড়া বাজারে এসেছে ‘ওয়ান টাইম ইউজ’ চীনা ছাতা যার দাম কম। ছাতা নষ্ট হলে মানুষ তা ফেলে দেয়, ঠিক করায় আগ্রহী হয় না। মানুষের আয়-উপার্জন বৃদ্ধির ফলে নতুন ছাতা কেনাও সহজ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে গাইবান্ধা সদরের বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাজারে আর ছাতা মেরামতের কারিগর নেই। পেশাটির প্রতি আগ্রহ হারিয়েছেন অনেকে।
গাইবান্ধার রুপার বাজারে দেখা যায় ছাতা মেরামতের কারিগর হিরু চন্দ্র রবিদাসকে। সংসার চালানো কঠিন হওয়ায় তিনি এখন জুতা তৈরির কাজও করেন।
হিরু চন্দ্র রবিদাস (৩৫) বলেন, “এ কাজ করে এখন আর সংসার চলে না। কোনো দিন দুই-একটা ছাতা ঠিক করতে আসে, আবার কোনো দিন আসেই না। বৃষ্টি বাদলে দু-একটা কাজ পাওয়া যায়, তাও নিয়মিত না। চীনা ছাতা এখন সস্তায় পাওয়া যায়, নষ্ট হলে মানুষ ফেলেই দেয়।” একই বাজারে আগে ছাতা মেরামতের কাজ করতেন ভুট্ট চন্দ্র রবিদাস (৪০)। বর্তমানে তিনি গাছ কাটার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
তিনি বলেন, “অনেক আগে ছাতা ঠিক করতাম। এখন আর সেটা দিয়ে চলে না। বর্ষাকালে দু-চারদিন কাজ পাওয়া যায়, তবে সারা বছর গাছ কাটার কাজই ভরসা। আগে মানুষ ছাতা ঠিক করতে আসত, এখন আর আসে না।”
শহীদ