
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ।
স্বাদের জন্য সারা দেশে বিখ্যাত ময়মনসিংহের ত্রিশালের কচু ও লতি। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে এই কচু আর লতি এখন ঠাঁই করে নিয়েছে বিদেশের ভোজনরসিকদের খাবার প্লেটেও। একসময়ের গরিবের খাবার হিসেবে পরিচিত কচু ও লতি এখন বিক্রি করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন ত্রিশালের অনেক কৃষক। তবে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় দাম নিয়ে হতাশ কৃষকরা।
জানা যায় ত্রিশাল উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই চাষ হচ্ছে কচু ও লতি। তবে রামপুর ইউনিয়নের গফাকুঁড়ি ও ঠাকুরবাড়ি গ্রামে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয় এই সবজির। লতির গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এই দুটি গ্রাম। ঢাকা, গাজীপুর, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যাপারীরা আসেন এখানে। ব্যাপারীরা এখান থেকে লতি ও কচু কিনে ট্রাকে ভরে ঢাকার কারওয়ান বাজার, মিরপুর, মহাখালী কাঁচা বাজার, গাজীপুর টঙ্গীসহ সারা দেশে নিয়ে যায়। দেশ ছাড়াও বিদেশে এখানকার লতির ব্যাপক চাহিদা থাকায় বিক্রি হয় প্রচুর। অন্যান্য ফসলের তুলনায় অল্প পরিচর্যায় ফলন ভালো হওয়ায় কচু লতি চাষের দিকে ঝুকছেন এখানকার কৃষকেরা। তবে সার, বীজের দাম, শ্রমিকের মজুরিসহ উৎপাদন খরচ বাড়ায় বাজারে কচু ও লতি ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ কৃষকরা।
কৃষক হেলাল মিয়া বলেন, “কচু ও লতি প্রতি বছরই চাষ করি উৎপাদন বেশী হলেও দাম কম, আমরা সঠিক দাম পাই না। আমাদের কাছ থেকে পাইকাররা কম দামে কিনে তারা ঢাকাসহ দেশে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বেশী দামে বিক্রি করে।”
কৃষক ইউনুস আলী বলেন, “৭ কাঠা জমিতে কচু ও লতি চাষ করেছি ৩ মাস লতি বিক্রি করি। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৮ থেকে ৯ হাজার টাকার লতি বিক্রি করতে পারি।”
কচু ও লতি কিনতে আসা ব্যবসায়ী আফাজ উদ্দিন বলেন, “ত্রিশাল থেকে কচুর লতি কিনে ঢাকার কারওয়ান বাজার, মিরপুর, মাওনা, চৌরাস্তা নিয়ে বিক্রি করি। এখানের কচু ও লতি ভালো চাহিদা রয়েছে। ঢাকার কাঁচামাল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে শুনেছি এখানের কচু ও লতি বিদেশে পাঠানো হয়। তবে সংরক্ষণ ও পরিবহণ খরচ বেড়ে গেছে অনেক।”
ত্রিশাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, “এ বছর ত্রিশালে প্রায় তিনশ হেক্টর জমিতে কচু ও লতি আবাদ করা হয়েছে। কচু ও লতি আমাদের দেশ ছাড়িয়ে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। কচু ও লতি চাষ সম্প্রসারণে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদেরকে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা।”
মিরাজ খান