ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

ত্রিশালে যুবককে নির্মমভাবে হত্যা, মাথায় ইটের আঘাতের অভিযোগ

আবু রাইহান, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: ১৯:১৭, ১৬ জুন ২০২৫

ত্রিশালে যুবককে নির্মমভাবে হত্যা, মাথায় ইটের আঘাতের অভিযোগ

ছবি:জনকণ্ঠ

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মাগুরজোড়া এলাকার কানারঘাট ইটভাটার পাশ থেকে হাফিজুল ইসলাম রনি (২৩) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রনি ওই এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে।

 

 

সোমবার (১৬ জুন) সকাল দশটার দিকে ইটভাটার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে ত্রিশাল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

পরিবার ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, রনি সম্প্রতি বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং তার ভিসা ও অন্যান্য কাগজপত্র প্রক্রিয়াধীন ছিল। 
এমন সময় তার মৃত্যুতে পরিবারসহ পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

 

 

সে গতকাল দিবাগত রাত নয়টার দিকে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পার্শ্ববর্তী কানারঘাট বাজার থেকে বিকাশে  ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে তার বাবাকে দেয়। তাকে দ্রুত বাড়ি ফেরার তাগিদ দিয়ে তার বাবা টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরে নিশ্চিন্ত মনে ঘুমিয়ে গেলেও সে আর বাড়ি ফেরেনি। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের ধারণা, হত্যাকাণ্ডে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে রক্তের চিহ্ন ও ইট পাওয়া গেছে, যা হত্যাকাণ্ডের আলামত হিসেবে বিবেচনা করছে পুলিশ।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম। 

 

 

নিহতের বড় বোন সুমা আক্তার বলেন, আমার ভাই গতকাল রাত ১০টার দিকে বিকাশ থেকে ২৫ হাজার টাকা তুলে আমার আব্বার হাতে দেয়। বাকী বেশ কিছু টাকা তার বিকাশে জমা ছিলো। আমার আব্বা টাকা নিয়ে বাড়ি চলে আসলেও সে তার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। 

নিহতের বাবা আব্দুল কাদের বলেন, আমার বড় ছেলে সাদিকুল ইসলাম পলাশ সৌদি আরব থেকে তাঁর বিকাশে টাকা পাঠিয়েছিল। সে টাকা থেকে সে আমাকে ২৫ হাজার টাকা তুলে দেয়। বাকী টাকা তার বিকাশে ছিলো। আমার এই ছেলেটা আর কিছু দিন পরে সৌদি আরব চলে যেতো। এই ছেলেটা আমার সংসারের সমস্ত কাজ করতো। কে-বা কারা আমার ছেলেটাকে হত্যা করেছে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আহাম্মদ বলেন, “আমরা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছি। মরদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হত্যার পেছনে কী উদ্দেশ্য ছিল, তা উদঘাটনে তদন্ত চলছে। এখনো কাউকে আটক করা না গেলেও অগ্রগতি হচ্ছে।”

এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজপতিরা দ্রুত বিচার দাবি করেছেন। নিহত রনির পরিবারও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।
 

ছামিয়া

×