
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব থেকে চুরি হয়ে গেছে প্রায় ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার যন্ত্রাংশ। অথচ দীর্ঘদিন ধরেই ল্যাবটি তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল এবং নিরাপত্তার বিষয়টি ছিল কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের নিয়ন্ত্রণে। চুরি হওয়া সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে একটি পিসিআর মেশিন, একটি মনিটর, একটি ডেস্কটপ, একটি ইনডোর এসি ও ছয়টি আউটডোর এসি।
করোনার প্রাথমিক ধাপে ২০২০ সালের ১৬ এপ্রিল চালু হয় পিসিআর ল্যাবটি। পরবর্তীতে সংক্রমণ কমে আসায় ল্যাবটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে ল্যাব দেখভালের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় দুজন কর্মচারী। দীর্ঘদিন পর সম্প্রতি ল্যাব খুলতেই দেখা যায় পেছনের জানালার গ্রিল কাটা এবং বহু মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে।
পিসিআর ল্যাবের দায়িত্বে থাকা মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নাহিদুল ইসলাম জানান, ছুটির দিন ছিল, অফিস বন্ধ করে টেকনোলজিস্ট চলে গিয়েছিল। পরে খুলে দেখি যন্ত্রাংশ নেই। অথচ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ছিল মেডিকেল কলেজ প্রশাসনের।
চুরি প্রসঙ্গে ল্যাব টেকনোলজিস্ট খায়রুল ইসলাম বলেন, “১০ মে অফিস বন্ধ করি, ১২ মে এসে দেখি জানালার গ্রিল কাটা, যন্ত্রাংশ নেই। সাথে সাথেই জানাই এবং থানায় অভিযোগ করি।”
এদিকে চুরির পরদিনই তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে থানায় সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মোশারফ হোসেন জানান, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে জানতে পারি, চুরির ঘটনা আরও পুরনো। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এফআইআর করতে বলি। কিন্তু এরপর থেকে তারা আর যোগাযোগ করেনি।”
চুরির সময় ল্যাবের দায়িত্বে না থাকলেও সহযোগী অধ্যাপক নাজমিন নাহার বলেন, “একটি পিসিআর মেশিন চুরি হলেও আরও তিনটি রয়েছে। জনবল ও কিট পেলে আমরা করোনা পরীক্ষার কাজ চালু করতে পারব।”
তবে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন, প্রায় ৪০ লাখ টাকার সরঞ্জাম চুরির ঘটনায় এত সহজে দায়িত্ব এড়ানো যায় না। মেডিকেল কলেজ প্রশাসনের গাফিলতির সুযোগেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যথাযথ তদন্ত ও দায়ীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের অনিয়ম ও চুরির আশঙ্কা থেকে যায়।
সানজানা