ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভোলায় লঞ্চঘাটে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়

হাসিব রহমান, ভোলা

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ১৩ জুন ২০২৫

ভোলায় লঞ্চঘাটে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়

.

ঈদের সরকারি ছুটি শেষ হচ্ছে আজ। তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন হাজার হাজার মানুষ। ভোলার লঞ্চ ও ফেরিঘাটে ছিল সেই ঢল। নৌযান সংকটে অনেক যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অবৈধ ট্রলার ও স্পিড বোটে নদী পার হচ্ছেন। তবে, এই সময় নৌপুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। রোদ ও বৃষ্টিতে ভিজে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ ছিল না। শুক্রবার সকালে ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।  
ঘাটে ভোর থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন যাত্রীরা। পন্টুনে শিশু থেকে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ তীব্র গরমে নৌযানে ওঠার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। লঞ্চ আসা মাত্রই হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ইলিশা-ল্ক্ষ্মীপুর রুটের লঞ্চ ও সি ট্রাকগুলো দুই থেকে তিনগুণ যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ ট্রলার, স্পিড বোট দিয়ে মেঘনা নদী পাড়ি দেন। সেখানেও স্পিড বোটের ৩শ’ টাকার ভাড়া ১ হাজার টাকা রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
এই রুটে দুটি লঞ্চ ও চারটি সি ট্রাক চলাচল করলেও বর্তমানে যাত্রীর তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা খুবই কম। এতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজের তাগিদে পরিবার নিয়ে নৌযানে গাদাগাদি করে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিচ্ছে নিরুপায় সাধারণ মানুষ। করোনা সংক্রমণ রোধে যাত্রীদের মাস্ক পরার জন্য সতর্ক করা হলেও অধিকাংশ যাত্রীই তা মানেননি।
যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ইলিশা লঞ্চঘাটে যে পরিমাণ যাত্রী রয়েছে লক্ষ্মীপুর যাওয়ার জন্য, সেই পরিমাণ লঞ্চ বা সি ট্রাক নেই। যা রয়েছে তা আবার আকারে ছোট। ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি যাত্রী নিয়ে তারা পারাপার করছে। এতে করে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তাই যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে আরও লঞ্চ-সি ট্রাক প্রয়োজন। লঞ্চ না পেয়ে অসংখ্য যাত্রী পরিবার নিয়ে তীব্র গরমে অপেক্ষা করছে। যাত্রীদের জন্য নেই প্রয়োজনীয় যাত্রী ছাউনি। ফলে, খোলা আকাশের নিচে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে পরবর্তী লঞ্চের জন্য। ভোলায় কর্মরত বিআইডব্লিউটিএর নৌনিরাপত্তা বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. জসিম উদ্দিন জানান, ইলিশা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে দুটি লঞ্চ ও চারটি সি ট্রাক চলাচল করছে। এই ছয়টি নৌযানের যাত্রী ধারণ ক্ষমতা আছে প্রায় ৮শ’। এর মধ্যে এমভি পারিজাত নামের লঞ্চটি বরিশাল থেকে ছাড়ে। ইলিশা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে নিরাপদে যাত্রী পারাপারের জন্য ১০মিনিট অন্তর অন্তর লঞ্চ চলাচল জরুরি। কিন্তু এসব নৌযানের একবার (এক সার্কেল) করে যাত্রী পারাপারের অনুমোদন আছে। এই নৌপথে আব্দুস সালাম নামের আরও একটি সি ট্রাক চলাচলের অনুমোদন দেওয়া হলেও সেটি ডক-ইয়ার্ডে রয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নামাতে পারেনি। যাত্রীর তুলনায় বৈধ নৌযান কম হওয়ার কারণে বাধ্য হয়ে যাত্রীরা অবৈধ নৌযানে চড়ছে। তারপরও মেঘনা নদীতে অবৈধ নৌযানে যাত্রী পারাপার বন্ধ করতে তারা একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়েছেন। এ পর্যন্ত চারটি স্পিড বোট ও একটি ট্রলারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।

প্যানেল

×